স্টাফ রিপোর্ঠার: ভারতের আরোপিত এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের ফলে বাংলাদেশি পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানিতে নেতিবাচক প্রভাবের আশঙ্কা করেছে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (ডিসিসিআই)। চেম্বারের পক্ষ থেকে গতকাল জানান হয়েছে, ভারতের জুট মিলস্ অ্যাসোসিয়েশন এবং ভারতীয় উদ্যোক্তাদের স্থানীয় বাজার সুরক্ষার দাবির প্রেক্ষিতে ভারতের ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ এন্টি ডাম্পিং অ্যান্ড এলাইড ডিউটিজ (ডিজিএডি) কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বাংলাদেশ এবং নেপাল হতে পাট ও পাটজাত পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ভারত সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয় টন প্রতি ৮ থেকে ৩৫০ মার্কিন ডলার ডিউটি আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ভারতীয় কর্তৃপক্ষ ডিউটি আরোপের সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ ও নেপাল থেকে পাটপণ্য ভারতে রপ্তানির ফলে স্থানীয় উদ্যোক্তাদের ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার বিষয়টি উল্লেখ করলেও এ ধরনের কোনো ধরনের তথ্য উপাত্ত উপস্থাপন করতে পারেনি। বাংলাদেশে প্রতিবছর সারা বিশ্বে প্রায় ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে রফতানি করে, যার ২০ শতাংশ শুধু ভারতের বাজারেই রপ্তানি হয়ে থাকে। ভারতীয় অভ্যন্তরীণ বাজারে যার পরিমাণ মাত্র ৮ শতাংশ।
উল্লেখ্য, ভারতের ডিজিএডি কর্তৃপক্ষের সূত্রমতে, ভারতে পাট খাতের প্রতিটি শিল্প-কারখানায় গড়ে ক্ষতির পরিমাণ ২৫শতাংশ, যা প্রত্যাশার চেয়ে কম। ভারত কর্তৃক এন্টি ডাম্পিং আরোপের এ সিদ্ধান্ত আমাদের পাট চাষি এবং পাট পণ্য উত্পাদনকারী ও রপ্তানিকারকগণ প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হবেন এবং ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যবধান আরোও বৃদ্ধি পাবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এ অবস্থায়, ঢাকা চেম্বার ভারতের এ অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করছে। ঢাকা চেম্বার মনে করে, ভারতের অর্থমন্ত্রণালয়ের এ ধরনের সিদ্ধান্তের কারণে বাংলাদেশের পাট শিল্প এবং এর সঙ্গে সম্পৃক্ত সাপ্লাই চেইন প্রক্রিয়া ব্যাহত হবে, পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সাড়ে ৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
বাংলাদেশ যখন ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য উন্নয়নে কাজ করছে, সে সময় এ ধরনের সিদ্ধান্ত দুদেশের বাণিজ্য সম্প্রসারণের ধারাকে ব্যাহত করবে বলে ডিসিসিআই মনে করে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, ট্যারিফ কমিশন এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সরকারি দপ্তরকে এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপ প্রক্রিয়ার কৌশলগত দিকসমূহ পর্যালোচনার জন্য এবং এ বিষয়টি পুনর্বিবেচনার্থে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে দ্বি-পাক্ষিক আলোচনার জন্য ডিসিসিআই বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আহবান জানিয়েছে। বাংলাদেশ ও ভারতের দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সুসম্পর্কের বিষয়টি বিশেষ বিবেচনায় নিয়ে যাতে ভারত সরকার বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানিকৃত পাট ও পাটজাত পণ্যের উপর এন্টি ডাম্পিং শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পুনঃবিবেচনা করার জন্য ডিসিসিআই ভারতের অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে।