যে সুসংবাদের জন্য উদগ্রিব এলাকাবাসী

ধরিত্রীর দেহ থেকে কিছু নির্গত বা উদগিরণকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। যদিও অনেক আগেই নানাভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হয়েছে ভূগর্ভের কোথায় কি আছে। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পল্লি ঘোলদাড়ি পাইকাপাড়ার এক বাড়িতে পানির জন্য টিউবওয়েল স্থাপনের সময় ভূগর্ভের ভেতর থেকে উচ্চচাপে উদগিরণ শুরু হয় বায়ু। তাতে আগুন দিলে আগুন ধরছে, জ্বলছে বলেই মূলত স্থানীয়দের দাবি সংরক্ষণের। গতকাল বৃহস্পতিবার আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার সরেজমিন পরিদর্শন করে এ দাবির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ঊর্ধ্বতন কমর্কতার দৃষ্টি আকর্ষণ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

স্থানীয়দের দাবি যেমন সঙ্গত, তেমনই উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিশ্রুতিও প্রাসঙ্গিক। তবে গ্যাস উদগিরণ স্থলের ভূগর্ভে গ্যাসের পরিমাণ কতোটুকু? বিষয়টি এখনও পর্যন্ত অজানা। ভূগর্ভের ওই প্রাকৃতিক সম্পদ তথা খনিজসম্পদ মাপজোঁকের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রয়োজন। শুধু বিশেষজ্ঞই নয়, ধরিত্রীর বুকে লুকিয়ে থাকা সম্পদ দেখা ও তা মাপজোঁকের জন্য যন্ত্রও দরকার। তাছাড়া শাদা চোখে বোঝা অসম্ভব হেতু,  এখনই হা হুতাশ বা আতঙ্কাগ্রস্ত হওয়া একেবারেই অনুুচিত। কেননা, ভূগর্ভের বহু স্তর রয়েছে। স্তর ভেদে ছোট বড় পকেটে গ্যাস থাকা অসম্ভব নয়। গ্যাসের পরিমাণ বেশি না হলে তা সংরক্ষণ বা কাজে লাগানোর মতো করে আহরণের কর্মসূচি হাতে নেয়া মানে লোকসানের পথে পা বাড়ানো। জেনেশুনে কি কেউ সেটা করে? সে কারণেই যতো দ্রুত সম্ভব, মাপজোঁকের যন্ত্র দিয়ে মেপে উপযুক্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ। তা না হলে স্থাপন করা টিউবওয়েলের পাইপ দিয়ে হরদম উদগিরণ হওয়া গ্যাস দেখে স্থানীয়দের ধৈর্যচ্যুতি অমূলক নয়। অপচয় কতোক্ষণই আর সহ্য করা যায়?

ভূর্গভে বহু পদার্থ রয়েছে, যার অধিকাংশই কোনো না কোনোভাবে মানুষের জন্য কল্যাণকর। এর মধ্যে জ্বালানি অন্যতম। গ্যাস, তেল, কয়লার ওপর ভরসা ক্রমশ ফ্যাকাসে হয়ে আসছে বলেই ভবিষ্যত বিশ্ব মূলত জ্বালানির জন্যই হন্যহয়ে ছুটছে দিগি¦দিক। মহাকাশ গবেষণারও অন্যতম উদ্দেশে ভবিষ্যত জ্বালানির জোগান। যে জ্বালানির জন্য এতো হাপিত্যেস সেই জ্বালানির বড়সড় যোগান যদি চুয়াডাঙ্গার ভূগর্ভে মেলে তাহলে শুধু দেশের নয়, এলাকার চিত্রটাও তো বদলে যাবে। পাইকপাড়ার গ্যাস উদগিরণ আতঙ্কের না হয়ে এলাকাবাসীর জন্য বয়ে আনুক সেই সুসংবাদ, যে সুসংবাদের জন্য উদগ্রিব এলাকাবাসী।