বিবাহিত মেয়ে পূর্ব প্রেমিকের হাত ধরে পাড়ি জমানোয় ওসমানপুরে তুলকালাম
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: বিবাহিত মেয়ে পূর্বের প্রেমিকের হাত ধরে অজানায় পাড়ি জমানোর ঘটনায় আলমডাঙ্গার ওসমানপুর গ্রামে তুলকালাম কা- ঘটেছে। এ ঘটনায় ক্ষুদ্ধ হয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া মেয়ের আত্মীয়স্বজন প্রেমিকের পিতা ও চাচার বাড়িঘর ভাঙচুর, লুটপাট এবং আগুন লাগিয়ে পোড়ানোর অভিযোগ উঠেছে। চরম আতঙ্কে রয়েছে এ দুটি পরিবার।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গার ওসমানপুর গ্রামের ফরোজ আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম মালয়েশিয়া থেকে ১০ মাস আগে দেশে ফিরেছে। সে বর্তমানে আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজে বিএ ভর্তি হয়েছে। শরিফুল ইসলাম একই গ্রামের প্রবাসী নজরুল ইসলামের কন্যা এসএসসি পরীক্ষার্থী রায়েয়া খাতুনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলে। বিদেশে যাওয়ার আগেই তাদের মধ্যে এ প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে গ্রামসূত্রে জানা যায়। এরই মধ্যে গত ১০ মাস আগে রাবেয়া খাতুনের বিয়ে দেয়া হয় আলমডাঙ্গা গোবিন্দপুরের ইকলাস আলীর বিজিবিতে চাকরিরত ছেলে আফাজ আলীর সাথে। বিয়ের পরও তাদের প্রেম অব্যাহত ছিলো। রাবেয়া খাতুন গত শুক্রবার শ্বশুর বাড়ি থেকে বাপের বাড়ি যায়। পরদিন শনিবার বেলা ১১টার দিকে প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার নাম করে পূর্ব প্রেমিক শরিফুলের হাত ধরে অজানায় পাড়ি জমায়।
এ ঘটনায় রাবেয়ার দুলাভাই একই গ্রামের শাহজাহান আলী আলমডাঙ্গা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ করেন। প্রেমিকের পরিবারের অভিযোগ গত বুধবার রাতে ওসমানপুর ফাঁড়ি পুলিশ প্রেমিকের বাড়িতে গিয়ে নানা রকম হুমকি ধামকি দেয়। এরপর থেকে গ্রেফতার ভয়ে প্রেমিকের পরিবারের লোকজন বাড়ি ছাড়া। পুরুষ শূন্য বাড়িঘর। এমন সুযোগ ছাতছাড়া করেনি প্রেমিকার ক্ষুব্ধ আত্মীয়স্বজন। গত বুধবার রাত ১১টার পর তারা প্রেমিক শরিফুল ইসলামের পিতা ফরোজ আলী ও তার চাচা আব্দুল আলীমের বাড়ি গিয়ে চড়াও হয়।
আব্দুল আলীমের স্ত্রী সোনাভানু বলেন, প্রথমে তারা ১৫-২০ জন লোক ফরোজ আলীর বাড়িঘরে ঢুকে সমস্ত আসবাবপত্র ভাঙচুর করে লেপ-কাথা বাইরে নিয়ে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। সোনার গয়না ও নগদ টাকা পয়সা লুটপাট করে। বাইরের একটি ঘর আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়। পরে তারা আব্দুল আলীম-সোনাভানুর ঘরের গ্রিল ভেঙে ভেতরে ঢোকার চেষ্টা করে। ব্যর্থ হয়ে সিঁড়িঘরের খিড়কি ভেঙে ভেতরে ঢুকে একইভাবে চেয়ার-টেবিল, শো-কেস, ড্রেসিং টেবিলসহ সমস্ত আসবাবপত্র বাইরে নিয়ে ভাঙচুর করে। লুটপাট চালায়। ওই দিন আলমডাঙ্গা গোহাটে গরু বিক্রির ১ লাখ টাকা ঘরে রেখেছিলো তারা। সে টাকা লুট করে নিয়ে গেছে। সে সময় বিশ্রি ভাষায় গালিগালাজও করে। এক নারকীয় পরিবেশের সৃষ্টি করে। এ সময় আব্দুল আলীমের স্ত্রী একই গ্রামের রাবেয়ার দুলাভাই আমছার আলীর শাহাজান, মামাতো ভাই ছানোয়ারের সুজন, শাহাজানের ভাই ওকিল ও একই গ্রামের কিতাব আলীর ছেলে সুজনকে চিনতে পারে বলে জানায়। এ ঘটনার দিন বিকেলে রাবেয়া খাতুনের দাদা তাদের বাড়িতে গিয়ে প্রেমিকের হাত ধরে পালিয়ে যাওয়া মেয়ে ফেরত না দিলে বাড়িঘরে প্রত্যেকটি ইট খুলে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দিয়েছিলো বলেও অভিযোগ করা হয়েছে।