ট্রাক চালক জুয়েল ও হেলপারের নামে মামলা

দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা-ছেলেসহ তিনজনেরই দাফন সম্পন্ন

দামুড়হুদা প্রতিনিধি: দামুড়হুদায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত মা-ছেলেসহ ৩ জনেরই ময়নাতদন্ত ছাড়াই দাফন সম্পন্ন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল ১০টায় নিহত জাকিরের স্ত্রী নাসরিন ও তার শিশুপুত্র নিবিড়ের দামুড়হুদা পাইলট হাই স্কুল মাঠে জানাজা শেষে দশমী কবরস্থানে এবং জাকিরের খালাতো ভাই নিহত সাহেব আলীর মরদেহ মহাজনপুরে নেয়ার পর দুপুর ১২টায় জানাজার নামাজ শেষে নিজ গ্রামের কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন করা হয়। এদিকে নিহত সাহেব আলীর দোলাভাই মুজিবনগর মহাজনপুরের আরিফুল হক মিঠু বাদী হয়ে ঘাতক ট্রাকের চালক ফরিদপুর জেলার কানাইপুরের জুয়েল (৩৫) ও ট্রাকের হেলপারকে আসামি করে দামুড়হুদা মডেল থানায় গতকাল শনিবার হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। এছাড়া সড়ক দুর্ঘটনায় আহত জাহিদ ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে। সে এখন অনেকটাই আশঙ্কামুক্ত বলে সূত্র জানিয়েছে।
মামলার তদন্তকারী দামুড়হুদা মডেল থানার সেকেন্ড অফিসার এসআই একরাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ট্রাক চালকের নাম পাওয়া গেলেও হেলপারের নাম ঠিকানা এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। ট্রাকের মালিকের নাম জানা গেছে। ট্রাকের মালিকের নাম রফিকুল ইসলাম। বাড়ি ফরিদপুর। আসামিদের এখনও পর্যন্ত আটক করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যহত আছে।
উল্লেখ্য, দামুড়হুদা দশমীপাড়ার জাকিরের স্ত্রী নাসরিন পারভিন তার ৭ মাস বয়সী শিশু সন্তান নিবিড়কে নিয়ে ছোট ভাই জাহিদ (১৯) ও খালাতো দেবর মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার মহাজনপুর গ্রামের মোকাম আলীর ছেলে সাহেব আলীর (২২) সাথে গত শুক্রবার বিকেল সাড়ে ৩ টার দিকে একই মোটরসাইকেলযোগে দামুড়হুদা থেকে পিতার বাড়ি জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামে বেড়াতে যাচ্ছিলেন। বিকেলম পৌনে ৪টার দিকে চুয়াডাঙ্গা-যশোর সড়কের জয়রামপুরস্থ হারেজের চায়ের দোকানের সামনে পৌঁছুলে বিপরীত দিক থেকে আসা পাথর ভর্তি একটি ট্রাকের সাথে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে জাকিরের স্ত্রী নাসরিন, তার কোলে থাকা শিশুপুত্র নিবিড় এবং মোটরসাইকেল চালক জাকিরের খালাতো ভাই সাহেব আলী ঘটনাস্থলেই নিহত হয়। পথচারীরা মোটরসাইকেল আরোহী নিহত নাসরিনের ছোট ভাই জীবননগর উপজেলার আন্দুলবাড়িয়া গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের ছেলে জাহিদকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। তাকে ওখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে নেয়ার পরামর্শ দেন কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আওলিয়ার রহমান। রাতেই তাকে ঢাকায় নেয়া হয়। দুর্ঘটনার পরপরই উত্তেজিত জনতা পাথর ভর্তি ট্রাকটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। দামুড়হুদা ফায়ার সাভির্সের লোকজন এসে আগুন নেভায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে নিহত তিনজনের লাশ উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়। পরে নিহত ওই তিনজনের লাশ হাসপাতালের হিমঘরে রাখা হয়। রাত সাড়ে ১২টার দিকে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের অনুমতি সাপেক্ষে নিহত তিনজনের মরদেহ দামুড়হুদায় নেয়া হয়। আহত জাহিদ সদ্য নৌবাহিনীতে চাকরি পেয়েছে বলে জানিয়েছে তার পরিবারের লোকজন। তার আগামি ১ জানুয়ারী নৌবাহিনীতে যোগদান করার কথা রয়েছে।