স্টাফ রিপোর্টার : চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের যে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী মাত্র ২৮ জন, শিক্ষক ৩ জন, সেই কলাগাছি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটি গঠন নিয়ে তুলকালাম কা- ঘটেছে। দু পক্ষের মধ্যে দু দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ এবং বাড়িতে হামলায় আহত হয়েছে মহিলাসহ ১৫ জন।
আহতদের মধ্যে গুরুতর জখম ৫ জনকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বাকি ১০ জনকে প্রাথমিক চিকিঁৎসা দিয়ে বাড়ি ফেরনো হয়েছে। ঘটনার পর থেকে কলাগাছি গ্রামে বিরাজ করছে উত্তেজনা। জানা গেছে, গতকাল মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার গড়াইটুপি ইউনিয়নের কলাগাছি গ্রামের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটি গঠনের জন্য বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আব্দুল আজিজ অভিভাবকদের ডাকেন। কিভাবে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি গঠন করা হবে সে বিষয়ে উপস্থিত অভিভাবকদের মতামত জানতে চান। কারণ কমিটির মেয়াদ ছয়মাস আগে শেষ হয়ে গেছে। এ সময় সভাপতি হওয়ার জন্য বর্তমান সভাপতি আনন্দ ঘোষ এবং সুবাস ঘোষ ইচ্ছা পোষণ করেন। একটি পদে দুজন ব্যক্তির নাম প্রস্তাব করায় সেখানেই দুটি পক্ষ হয়ে যায়। এ দুজনের মধ্যে কে হবেন সভাপতি উপস্থিত অভিভাবকদের মতামত দিতে বললে তারা প্রকাশ্যে মতপ্রকাশ দিতে অনীহা প্রকাশ করে। আনন্দ দু মেয়াদে দায়িত্ব পালন করায় পরিবর্তনের পক্ষে অনেকেই গোপনে কথা চালাচালি করতে থাকে। এ নিয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি শুরু হয়। হঠাৎ আনন্দ পক্ষের লোকজন সুবাস পক্ষের লোকজনের ওপর চড়াও হয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। আনন্দ পক্ষের লোকজনের লাঠির আঘাতে রক্তাক্ত জখম হয় সুবাস ঘোষের পক্ষে আহত হয় সুবাস ঘোষ (৫০), সুফল ঘোষ (১৮), মিনতী ঘোষ (৪০), দেবী ঘোষ (৪০), রিপন ঘোষ (২৭) ও সুবদ ঘোষ (৩০), উজ্জল ঘোষ (২৮)। অপরদিকে প্রতিপক্ষের লাঠি হেঁসোর আঘাতে রক্তাক্ত জখম হয় মনোজ কুমার ঘোষ (৫৫), মিলন কুমার ঘোষ (৪০), লক্ষণ কুমার ঘোষ (৩৮) ও হরেন কুমার ঘোষ (৩৫)। এদের মধ্যে গুরুত্বর আহতদের উদ্ধার করে নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে পৌঁছান তিতুদহ ক্যাম্প পুলিশের আইসি এএসআই সাজেদুল ইসলাম। তিনি উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার জন্য বলেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র বিকাল ৪টার দিকে আনন্দের পক্ষের লোকজন গোবিন্দর বাড়িতে হামলা চালিয়ে আহত করে গোবিন্দ ঘোষ (৫০) ও তার স্ত্রী দেবী ঘোষকে (৪০)। হামলা প্রতিরোধ করতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হাতে আহত হন প্রকাশ ঘোষ (৩৫) ও অধির ঘোষ (৪৫)।
গ্রামসূত্রে জানা গেছে, ১৫ দিন আগে একটি মারামারির ঘটনায় প্রকাশের মাথা কেটে যায়। যা গতকালের ঘটনায় আহত হয়েছে বলে প্রকাশ করছে। গোবিন্দের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয় প্রতিপক্ষরা বাড়িতে হামলা চালিয়ে জমিবিক্রির ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং ৩ ভরি সোনার গয়না লুট করে নিয়ে যায় আনন্দের লোকজন। অপরদিকে আনন্দের পক্ষে অভিযোগ করে জানানো হয় প্রতিপক্ষরা পরিকল্পিতভাবে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আনন্দ ঘোষ দু বার সভাপতি হয়েছেন। আবারও সভাপতি হওয়ার জন্য পাঁয়তারা করছিলেন। যার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় উভয়পক্ষ মামলার প্রস্তুতি নিলেও চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তোজামেল হক বলেন, একপক্ষের অভিযোগ হাতে পেয়েছি। তবে এ ঘটনায় পুলিশ এখনও কাউকে গ্রেফতার করেনি।