১০ ডিসেম্বর জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন

 

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুরে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে অ্যাডডভোকেসি সভা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গায় আগামী ১০ ডিসেম্বর শনিবার ১ লাখ ৩৪ হাজার ৮১৫ জন শিশুকে ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় সদর হাসপাতাল সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন বিষয়ক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান জেলার সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান। সহযোগিতা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও ইউনিসেফ। এ সময় জেলা পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক রেজাউল করিম, সদর হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. মাসুদ রানা, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিকেল অফিসার ডা. হাদী জিয়া উদ্দিন আহমেদ, জেলা স্যানেটারি অফিসার গোলাম ফারুক ও জেলা ইপিআই তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল ওহাব উপস্থিত ছিলেন।

চুয়াডাঙ্গার ৪ উপজেলার ১ থেকে ৫ বছর বয়সী ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৮ জন শিশুকে ১টি লাল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল (২ লাখ আইইউ) এবং ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ১৬ হাজার ১৯৭ জন শিশুকে ১টি নীল রঙের ভিটামিন-এ ক্যাপসুল (একলাখ আইইউ)  খাওয়ানো হবে। সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কার্যক্রম চলবে। জাতীয় ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাম্পেইন-২০১৬ উপলক্ষে  ৯৬৫ কেন্দ্র নির্ধারণ করা হয়েছে। আউটরীচ টিকা কেন্দ্র ৮৮৮। স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ৭টি। অতিরিক্ত টিকাদান কেন্দ্র ৪৬। ভ্রাম্যমাণ টিকাদান কেন্দ্র ২৪। স্বেচ্ছাসেবকের সংখ্যা ২৯০৭ জন। স্বাস্থ্য সহকারী, টিকাদান কর্মী, পরিবার কল্যাণ সহকারী ৩১৪ জন। ১ম সারির তত্ত্বাবধায়ক ১১৩ জন।

সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, ভিটামিনের অভাবে অন্ধত্ব হয়ে থাকে। শিশু মৃতুর হার বেড়ে যায়। ৪ মাসের মধ্যে ভিটামিন-এ খেয়েছে তাদের দেয়া হবে না। যারা অসুস্থ তাদেরকে খাওয়ানো যাবে না। পুষ্টি সমৃদ্ধ করে শিশুদেরকে গড়ে তুলতে হবে। নির্ধারিত কেন্দ্র ছাড়াও বাসস্ট্যান্ড, ট্রেন ও নৌযানে ভিটামিন-এ প্লাস খাওয়ানো হবে। ২০১৫ সালে চুয়াডাঙ্গা জেলা ইউনিসেফের প্রতিবেদনে শতকরা ৯৪ ভাগ খাওয়ানোর শীর্ষে ছিলো। এবছর আরও বাড়ানো যায় সেদিকে দৃষ্টি রয়েছে। কার্যক্রম সফল করতে গণমাধ্যমকর্মীসহ সমাজের সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছেন, এ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে গতকাল বুধবার  জীবননগরে অ্যাডভোকেসিসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। উপজেলা স্বাস্থ্য মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজের সভাপতিত্বে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবু মো. আব্দুল লতিফ অমল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রফিকুল ইসলাম, ইউনিসেফের চুয়াডাঙ্গা জেলা পুষ্টিবিদ রুনানা শারমিন, উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহমুদা খাতুন ও জাতীয় তরুণ সংঘের ক্লিনিক ম্যানেজার আবু শামস মো. রাজিবুল ইসলাম। সভায় উপজেলার বিভিন্ন স্যাটেলাইট ক্লিনিকের কর্মকর্তাবৃন্দ ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপন উপলক্ষে মেহেরপুরে সাংবাদিকদের সাথে ওরিয়েন্টেশন সভা করছেন জেলা সিভিল সার্জন অফিস। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে সিভিল সার্জন অফিসের সম্মেলন কক্ষে ওই ওরিয়েন্টেশন সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন সিভিল সার্জন ডা. মো. আব্দুল হালিম। এ সময় সেখানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য রাখেন সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা অফিসার রওশন নাহার, ইপিআই সুপারেনটেন্ডন্ট আব্দুস সালাম প্রমুখ।meherpur-pic-1

ওরিয়েন্টেশন সভায় সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হালিম বলেন- আগামী ১০ ডিসেম্বর সারাদেশে একযোগে শিশুদের ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। জেলার মোট ৩ টি উপজেলায় ৪৯০ টি কেন্দ্রে ৬৮ হাজার ৮৭ জন শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওনো হবে। এর মধ্যে ০৬ থেকে ১১ মাস বয়সী ৮ হাজার ৪৪২ জন শিশুকে নীন রঙের এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী ৫৯ হাজার ৬৪৫ জন শিশুকে লাল রঙের ‘এ’ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। সভায় বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার মেহেরপুরের স্থানীয় সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সফল করতে অ্যাডভোকেসি সভা করেছে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। গতকাল বুধবার দুপুরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হলরুমে অনুষ্ঠিত অবহিতকরণ সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা স্বাস্থ্য প.প. কর্মকর্তা ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল। প্রধান অতিথি ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম। বিশেষ অতিথি ছিলেন মুজিবনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার হেমায়েত উদ্দিন। বক্তব্য রাখেন শিক্ষা অফিসার মোস্তাফিজুর রহমান, এসআই সুলতাল মাহাম্মদ প্রমুখ। স্বাস্থ্যকর্মী, এনজিও কর্মী, শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা ও সাংবাদিকসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করে যার যার অবস্থান থেকে সহযোগিতার আশ্বাস প্রদান করেন। রাতকানা রোগ প্রতিরোধসহ শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ভিটামিন ‘এ’ ক্যাসপুল খাওয়ানোর আহাবান জানান ডা. আবু হেনা মোহাম্মদ জামাল।