প্লাজমা মেডিকেল সেন্টারের কৃপায় মোজাইক মিস্ত্রি আখতার পেলেন সুচিকিৎসা
স্টাফ রিপোর্টার: চর্মরোগও যে হাতুড়ের ভুল চিকিৎসায় হাড়ের অস্থি মজ্জায় ছড়িয়ে পড়ে জীবন বিপন্নের দ্বারপ্রান্তে নিতে পারে তা আলমডাঙ্গার পল্লি নতিডাঙ্গার মোজাইক মিস্ত্রি আখাতর হোসেন আগে বোঝেননি। মাত্র ৩৩ বছর বয়সেই তিনি চর্মরোগের চিকিৎসা নিয়ে হাতুড়ে অর্ধ হাতুড়ের হাভাতে চিকিৎসায় মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিলেন। চলাফেরা দূরের কথা খাওয়া দওয়ারও শক্তি হারিয়ে শয্যাগত ছিলেন তিনি। শেষ প্রান্তে তিনি চুয়াডাঙ্গার কৃতীসন্তান প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদীর চিকিৎসায় পুনঃজীবন লাভ করেছেন। আখতার হোসেনকে সুস্থ করতে পেরে সৃষ্টিকর্তার প্রতি শুকরিয়া আদায় করে ডা. মেহেদী বলেছেন, আখতারের শারীরিক অবস্থা যে জটিল অবস্থায় পৌঁছেছিলো, সেই অবস্থা থেকে সুস্থ করার ঘটনা দেশে এটাই প্রথম। কেননা, দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জয়েন্ট বা অস্থি সম্পূর্ণভাবে নতুন করে প্রতিস্থাপন দেশের চিকিৎসায় বিরল।
অস্থি সম্পূর্ণভাবে প্রতিস্থাপনে দেশে-বিদেশে প্রায় অর্ধকোটি। রিফাজউদ্দীন মণ্ডলের ছেলে আখতার মোজাইক মিস্ত্রি। ওর পক্ষে অতো টাকা ব্যয়ে চিকিৎসা নেয়া ছিলো দুঃস্বপ্ন। অসম্ভব ব্যয় বহুল অপারেশনের মাধ্যমে আখতার সুস্থতা ফিরিয়ে পেয়েছেন মূলত ঢাকা মোহাম্মদপুরের ১৯/৩ বাবার রোডের প্লাজমা মেডিকেল সেন্টার ও হাসপাতালের কৃপায়। এ প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার চুয়াডাঙ্গা হাজরাহাটির মরহুম মোরাদ হোসেন ও মরহুমা হাজেরা বেগমে ছেলে প্রফেসর ডা. মাহবুব হোসেন মেহেদী। তার দফতর সূত্র জানিয়েছে, আখতার আনুমানিক ৮ বছর আগে চর্মরোগে আক্রান্ত হয়। হুতুড়ের স্মরণাপন্ন হলে চিকিৎসার নামে অপচিকিৎসায় চর্মরোগ জটিল রূপ নেয়। রতন ডাক্তার নামের একজন রোগীকে স্টেরোয়েড জাতীয় ওষুধ প্রয়োগ করেন। যা বিশ্ব বাজারে ওই ওষুধ ব্যবহার নিষিদ্ধ। বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ওই নিষিদ্ধ ওষুধের। তা প্রয়োগে আখতারের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে অস্থি মজ্জায় অস্থি সন্ধায় ছড়িয়ে পড়ে রোগ। মৃত্যুর প্রহর গুনতে শুরু করে। একপর্যায়ে হাসপাতাল থেকেও তাকে ফিরিয়ে দেয়া হয়। অবশেষে দৈনিক মাথাভাঙ্গা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন দেখে ঢাকা মাহবুব হোসেন মেহেদীর চুয়াডাঙ্গা হাসপাতাল সড়কের বনফুল চেম্বারে রোগী আনেন তার নিকটজনেরা। শুরু হয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা। জটিল রোগের উৎপত্তি শনাক্তসহ সুচিকিৎসার মাধ্যমে চর্মরোগই শুধু নিরাময় করা হয়নি, দীর্ঘ ৯ ঘণ্টা অপারেশনে অস্থি পুনঃস্থাপনের মাধ্যমে আখতার সুস্থ করে তোলা সম্ভব হয়েছে। যে আখতারের খাওয়া-দাওয়া প্রায় বন্ধ হতে বসেছিলো, সেই আখতার এখন স্বাভাবিকভাবে খেতে পারে। চলতে পারে। তাকে সুস্থ করে তুলতে সক্ষম হওয়ায় পরিবারের তরফে চিকিৎসক প্রফেসর ডা. মেহেদীসহ তার প্রতিষ্ঠানের সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। ডা. মেহেদী তার এই ঈর্ষণীয় সাফল্য পিতা-মাতাসহ শ্বশুর আব্দুল মালেক জোয়ার্দ্দার, শাশুড়ি রহিমা জোয়ার্দ্দার, স্ত্রী মালেকা পারভীনের প্রতি উৎসর্গ করেছেন।
উল্লেখ্য, ডা. মেহেদীর একমাত্র পুত্র ব্যারিস্টার মূনীর তানভীর ঈ মাহবুব, বড় মেয়ে প্রকৌশলী ও বিজ্ঞানী ড. তামান্না মাহজাবীন এবং ছোট মেয়ে প্রকৌশলী বিজ্ঞানী আমেরিকার নাসায় কর্মরত ড. ইস্পানা তাবাসসূমও ছোট ভাই ব্রিটেনের স্থায়ী নাগরিক নাগরিক চ্যার্টার্ড অ্যাকাউন্টটেন্ট আশাবুদতল হোসেন আঙ্গুরকে তিনি তার সাফল্যের সময় বিশেষভাবে স্মরণ করেছেন।