বাকি বিয়াল্লিশ লাখ : এ্যাম্বুলেন্সে ফুয়েল দিচ্ছে না ফিলিংস্টেশন

চুয়াডাঙ্গার সরকারি হাসপাতালের দুটি এ্যাম্বুলেন্স না চললে পোয়া বারো কয়েকজনের

 

কামরুজ্জামান বেল্টু: বিয়াল্লিশ লাখ টাকার বকেয়া পরিশোধ করা না পর্যন্ত চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের এ্যাম্বুলেন্স দুটিতে তেল দেবে না হক ফিলিং স্টেশন। মাসখানেক আগেও তেল দেয়া বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দেয়া হয়। সেদফা অনুরোধে হক ফিলিং স্টেশন পরিচালকের মনগললেও আজ ১ ডিসেম্বর থেকে তেল না দেয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত জানানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টসূত্র জানিয়েছে।

সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে নির্ধারিত খরচে রোগী বহন করে আর্থিক ব্যাপক লাভ না হলেও লোকসান হয় না। তার পরও সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের তেলে বিয়াল্লিশ লাখ টাকা বাকি কেনো? চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের হিসেব রক্ষকের ব্যাখ্যা- সরকারি নিয়ম অনুযায়ী রোগী বা রোগীর লোকজনের নিকট থেকে নেয়া টাকা সরকারের নির্ধারিত কোষাগারে জমা দিতে হয়। বাকিতে তেল নিয়ে সরকারের বরাদ্দকৃত অর্থে তা পরিশোধ করতে হয়। ফলে রোগী বহন বাবদ দূরত্ব অনুপাতে রোগী বা রোগীর লোকজনের নিকট থেকে যাত্রার আগেই অর্থ আদায় করা হলেও তা তেলের দোকানে দেয়া যায় না। ফলে বাকি পড়ে।

তাই বলে বিয়াল্লিশ লাখ? চুয়াডাঙ্গা সরকারি হাসপাতালের তত্বাবধানে রয়েছে দুটি এ্যাম্বুলেন্স। হাসপাতাল কম্পাউন্ডে অবশ্য আরও কয়েকটি এ্যাম্বুলেন্স লেখা মাইক্রোবাস দেখা যায়। সেগুলো ব্যাক্তি মালিকনার। সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে রোগী নিতে নানা টালবাহানা থাকে। অনেকক্ষেত্রেই চালকের অনাগ্রও পরিলক্ষিত হয়। এরপর যখন তেলের টাকা পরিশোধ না করার কারণে ফিলিং স্টেশন থেকে তেল দেয়া হবে না বলে ঘোষণা দেয়া হয়েছে তখন কয়েকজনের মুখে তো হাসি ফুটেছেই। অভিযোগ রয়েছে এক চালকসহ কয়েকজনের ব্যক্তি মালিকানাধীন এ্যম্বুলেন্সে বাম্বার ভাড়া মারার অপেক্ষায় প্রহর গুণছেন।

জানা গেছে, বিয়াল্লিশ লাখ টাকার বকেয়া একদিনে নয়। গত বছরের কিছু আর চলতি বছরের কিছু দিয়ে বকেয়ার পরিমান অর্ধকোটি ছুইঁছুই হয়ে গেছে। ঢাকার ভাড়া সরকারি এ্যাম্বুলেন্সে ৭ হাজার ৭শ, রাজশাহীর ভাড়া ৪ হাজার ৭শ। চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের অধিকাংশ রোগীকেই রাজাশীহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে রেফাড করা হয়। অল্প কিছু টাকায়। রাজশাহী বা ঢাকার জন্য যে ভাড়া নেয়া হয় তাতে লাভ হওয়ারই কথা। হয়, হয় না। তবে ব্যক্তিমালিকানার এ্যাম্বুলেন্সে? অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সরকারি এ্যাম্বুলেন্সের তুলনায় দ্বিগুন ভাড়া নেয়া হয়। ফলে সংশ্লিষ্ট কারো কারো সেদিকেই বেশি ঝোক। জ্বালানি তেলের দোকানে অস্বাভাবিক বকেয়ার বিষয়ে হিসেব রক্ষক বললেন, প্রতিমাসেই গড়ে প্রায় দেড় লাখ টাকা করে এ্যাম্বুলেন্সভাড়া আসে। সরকারের কোষাগারে তা জমা দেয়া হয়। একাডেমি মোড়ের অদূরবর্তী হাজি মোজাম্মেল হকের ফিলিং স্টেশন থেকে বাকিতে তেল নেয়া হয়। বাকি গত বছরের কিছু জের ছিলো। এ বছরের বাকি পড়ে এক যোগে বিয়াল্লিশ লাখে গিয়ে ঠেকেছে। বিষয়টি স্থানীয় পদস্থ কর্মকর্তাদের জানানো হয়েছে। কর্মকর্তারা বরাদ্দ দেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়ে দফায় দফায় আবেদনসহ খোঁজ খবর নিচ্ছেন। কাজ হচ্ছে কই?