রহস্যের বেড়াজাল ভেদ করতে পারেনি পুলিশ
স্টাফ রিপোর্টার: দেশজুড়ে বহুল আলোচিত কুমিল্লার কলেজছাত্রী সোহাগী জাহান তনু ও চট্টগ্রামে সাবেক পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের রহস্যের ভেড়াজাল ভেদ করতে পারেনি পুলিশ। তনু ও মিতুকে কে, কারা ও কেন খুন করেছে তা পরিষ্কার করতে পারেননি তদন্ত সংশ্লিষ্টরা। চাঞ্চল্যকর তনু হত্যার পর আট মাস ও মিতু হত্যার পর ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। অথচ মূল খুনিচক্র পর্দার আড়ালেই রয়ে গেছে। বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, দেশব্যাপী তোলপাড় করা এ হত্যাকাণ্ড দুটির তদন্তে কোনো দিশা নেই। অজানা কারণে গোটা তদন্ত কার্যক্রম যেন থমকে আছে বা ঠায় দাঁড়িয়ে আছে। কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় খুন হওয়া কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী সোহাগী জাহান তনু হত্যার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, থেমে নেই তদন্ত। যথারীতি তদন্ত চলছে। অব্যাহত রয়েছে জিজ্ঞাসাবাদ। তনুর খুনি ও ধর্ষকদের খুঁজে বের করার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আগেও অনেক সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তবে তনুর মা আনোয়ারা বেগম যাদের সন্দেহ করেছেন, তাদের সঙ্গে ডিএনএ প্রোফাইল না মেলায় তদন্তকে ঘিরে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে।
অপর দিকে চট্টগ্রামে পুলিশ কর্মকর্তার স্ত্রী মিতু হত্যার তদন্ত সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তাদের দাবি, এ হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত অনেককেই ঘটনার পরপর গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অস্ত্রসহ গ্রেফতার ভোলা ও মনিরের অস্ত্র আইনে বিচারও শুরু হয়েছে। তবে হত্যাকাণ্ডের অন্যতম কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারকে এখনো গ্রেফতার করতে না পারায় মূল মামলার চার্জশিট দেয়া হয়নি। মুছাকে ধরিয়ে দিতে পুরস্কারও ঘোষণা করা হয়েছে। তবে কী কারণে মিতু হত্যাকাণ্ড বা নেপথ্যের রহস্য কী ও কী কারণে নিহতের স্বামী এসপি বাবুল আক্তার চাকরি ছাড়লেন বা হারালেন, এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে রাজি হননি সংশ্লিষ্ট পুলিশ কর্মকর্তারা।
কুমিল্লায় তনু হত্যাকাণ্ড: চলতি বছরের ২০ মার্চ রাতে কুমিল্লা সেনানিবাসের ভেতর একটি ঝোপে ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী সোহাগী জাহান তনুর ক্ষত-বিক্ষত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তনুর বাবা ইয়ার হোসেন কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের অফিস সহকারী। ওই সেনানিবাসের ভেতরেই তাদের বাসা। ভিক্টোরিয়া কলেজের ছাত্রী ও নাট্যকর্মী তনুর হত্যার বিচার দাবিতে তখন দেশব্যাপী প্রতিবাদী সভা-সমাবেশ, মানববন্ধন করে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন। আলোচিত ওই ঘটনার পর আট মাস পেরিয়ে গেলেও তনুকে কে বা কারা খুন করেছে, কেন খুন করেছে তা বের করতে পারেনি তদন্তকারী সংস্থা পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। প্রথম থেকেই শুধু সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদের মধ্যে যেন আটকে আছে তদন্ত কার্যক্রম। এক পর্যায়ে সিআইডি ধর্ষণের আলামত পেয়েছে, অপরাধীরা শিগগিরই শনাক্ত হবে বলে আশাবাদ দেখালেও পরবর্তী সময়ে অজ্ঞাত কারণে তদন্ত যেন থেমে গেছে। আলোচিত এ মামলার এ যাবৎ তিন দফা তদন্ত কর্মকর্তা বদল হলেও তদন্তে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি নেই। দীর্ঘদিনেও মেয়ে হত্যার তদন্তের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় তনুর বাবা ইয়ার হোসেন ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে বলেন, আসামি গ্রেফতারের বিষয়ে শুরু থেকেই শুধু আশা দেখাচ্ছে পুলিশ। আমরা এখন আল্লাহর ওপর ভরসা রাখছি। এর বাইরে আমাদের কী করার আছে। তবে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত মেয়ের হত্যাকারীদের বিচার চেয়ে যাব। আর তনুর মা আনোয়ারা বেগম বলেন, তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির এএসপি জালাল সাহেব বলছেন, দেখছি, তদন্ত চলছে। এভাবেই মাসের পর মাস পেরুচ্ছে। এরপরও আমরা হাল না ছেড়ে বিচার চেয়ে আসছি। তিনি বলেন, মেয়ে তনুকে হত্যার পর গত আট মাস কিসের ওপর দিয়ে চলছি, তা একমাত্র আল্লাহই জানেন।
তদন্তের সর্বশেষ অবস্থা ও অগ্রগতি জানতে চাইলে চাঞ্চল্যকর এ মামলার সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির নোয়াখালী ও ফেনী অঞ্চলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) জালাল উদ্দীন আহমেদ জানান, অপরাধীদের শনাক্তে আমরা আশাবাদী। বেসামরিক ও সামরিক সব সন্দেহভাজনকে জিজ্ঞাসাবাদ অব্যাহত রয়েছে। সব কর্নার থেকে তদন্ত অব্যাহত রয়েছে। তবে নিহত তনুর মা যাদের সন্দেহ করছেন, সে সব সন্দেহভাজনদের সঙ্গে ডিএনএ প্রোফাইল মেলানো হয়েছে কিনা জানতে চাইলে সিআইডি কর্মকর্তা জালাল উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে এখনই মন্তব্য করা সমীচীন হবে না। ওভাবে কোনো প্রোফাইল তারা পাননি বলেও দাবি করেন তিনি। তদন্ত সহায়ক সিআইডির পদস্থ কর্মকর্তারা মামলাটি মনিটরিং করছেন বলেও জানান তদন্ত কর্মকর্তা। সিআইডির তদন্ত-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রের দাবি, গত দুই মাসে প্রায় ২০ জনের সঙ্গে ডিএনএ প্রোফাইল মেলানো হয়। এতে কারো সঙ্গেই নিহত তনুর পোশাকে পাওয়া ডিএনএ নমুনা মেলেনি। সর্বশেষ ১৯ অক্টোবর ভিক্টোরিয়া কলেজ থিয়েটারের সাবেক একজন সভাপতি, দুজন সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও দুজন নির্বাহী সদস্যকে সিআইডির ঢাকার মালিবাগের ফরেনসিক ল্যাবে নিয়ে ডিএনএ নমুনা নিয়ে মেলানো হয়। ওই সূত্র মতে, তনুর মা আনোয়ারা বেগম তার মেয়ের হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন হিসেবে যাদের নাম সিআইডি কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকে বলেছিলেন, তাদের কারও সঙ্গে এখন পর্যন্ত ডিএনএ মেলানো হয়নি। নতুন করে সন্দেহভাজন আরো কয়েকজনের সঙ্গে মেলানোর প্রক্রিয়া চলছে। কুমিল্লার আলোচিত কলেজছাত্রী তনু হত্যার পর প্রথমেই লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনকে ঘিরে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। স্বজনসহ বিভিন্ন মহলে ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসকদের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ব্যাপক আলোচনা ও সমালোচনার মধ্যে আদালতের নির্দেশে দুই দফা তদন্ত করেও তনুর মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট করে নির্ণয় করতে পারেননি চিকিৎসকরা। এক পর্যায়ে গত মে মাসে তদন্ত সংস্থা সিআইডির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছিলো, ডিএনএ পরীক্ষায় তনুকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। পরীক্ষায় তনুর পোশাকে তিন ব্যক্তির ডিএনএ প্রোফাইল পাওয়া পাওয়া গেছে।
চট্টগ্রামে মিতু হত্যাকাণ্ড: চলতি বছরের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর ওআর নিজাম রোডের বাসভবন থেকে ছেলেকে নিয়ে স্কুলে যাওয়ার পথে জিইসির মোড়ে তৎকালীন পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে প্রকাশ্যে জঙ্গি স্টাইলে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে দুবৃর্ত্তরা। এই ঘটনায় এসপি বাবুল আক্তার বাদী হয়ে পাঁচলাইশ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই ঘটনার কয়েক দিন আগে চট্টগ্রাম ডিবিতে এডিশনাল এসপি হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় এসপি পদে পদোন্নতি পান বাবুল আক্তার। স্ত্রী মিতু হত্যাকাণ্ডের মাত্র সপ্তাহ খানেক আগে এসপি হিসেবে ঢাকায় পুলিশ সদর দফতরে যোগদান করেছিলেন বাবুল। খোদ একজন এসপির স্ত্রীর প্রকাশ্য খুন হওয়া নিয়ে তখন সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে নিহতের স্বামী এসপি বাবুল আক্তারকে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে রাতভর জিজ্ঞাসাবাদ ও এক পর্যায়ে চাকরি থেকে পদত্যাগকে কেন্দ্র করে নানা গুঞ্জনের ডালপালা ছড়াতে থাকে। স্ত্রী হত্যার ঘটনায় তার তার হাত থাকতে পারে এমন অভিযোগে খোদ বাবুল আক্তারকে ঘিরেই প্রশ্ন ওঠে এবং সৃষ্টি হয় বিভিন্ন নাটকীয়তার। কিন্তু আলোচিত ওই হত্যকাণ্ডের পর ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও কেন ও কারা নেপথ্যে থেকে মিতুকে হত্যা করিয়েছে তা এখনো স্পষ্টভাবে তুলে ধরতে পারেনি পুলিশ। এখনো মেলেনি ওই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলার চার্জশিট।
তদন্ত-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কিলিং মিশনে থাকা খুনিদের জবানবন্দি অনুযায়ী তাদের ভাড়া করেছিল পুলিশের সোর্স কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদার। তাকেসহ আরো কয়েক আসামিকে গ্রেফতার করতে না পারায় আটকে আছে এ মামলার চার্জশিট। তাছাড়া মিতু হত্যার তদন্তের শুরুতেই কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে যেন অজগর বেরিয়ে আসে। যে কারণে হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের কারণ এখনো অজানাই রয়ে গেছে।
চাঞ্চল্যকর এ মামলাটি তদন্ত করছেন চট্টগ্রাম গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এএসপি) মোহাম্মদ কামরুজ্জামান। তদন্তের সর্বশেষ অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তদন্ত কর্মর্কতা বলেন, স্পর্শকাতর এ মামলাটি তদন্ত চলছে। তদন্তে যথেষ্ট অগ্রগতিও রয়েছে। তাহলে কেন চার্জশিট দেয়া হচ্ছে না জবাবে তদন্ত কর্মকর্তার দাবি, মিতু খুনের ঘটনার মূল হোতা কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদারসহ আরো কয়েক আসামিকে গ্রেফতার করা যায়নি। এই কারণে খুনের নির্দেশদাতার সন্ধানও মিলছে না। তাছাড়া আরো কিছু কিছু কাজ বাকি রয়েছে। মুছা সিকদারকে ধরিয়ে দিতে পাঁচ লাখ টাকা পুরস্কার ঘোষণা করা হয়েছে বলে জানান তদন্ত কর্মকর্তা। সাবেক এসপির স্ত্রী মিতু খুনের কারণ নিশ্চিত হওয়া গেছে কিনা জানতে চাইলে তদন্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, তদন্তের স্বার্থে এখনই এ প্রশ্নের উত্তর দেয়া সমীচীন হবে না। খুনের নির্দেশদাতার ব্যাপারেও একই উত্তর দেন তিনি। স্ত্রী হত্যাকাণ্ডের শিকার হওয়ার পর স্বামী এসপি বাবুল আক্তার কেন চাকরি ছাড়লেন কিংবা হারালেন এমন প্রশ্নের জবাবে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হন তদন্ত কর্মকর্তা। মিতু হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কামরুজ্জামান জানান, মিতু হত্যার ঘটনায় জড়িত রাশেদ ও নূরন্নবী পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া মোতালেব ওরফে ওয়াসিম ও আনোয়ার নিজেরা হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার ও এর নেপথ্যে মুছা সিকদার জড়িত মর্মে তথ্য প্রকাশ করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। খুনের মামলায় অস্ত্র সরবরাহকারী এহতেশামুল হক ভোলা, শাহজাহান ও মুছার ছোট ভাই সাইদুল আলম ওরফে সাকু কারাগারে রয়েছেন। তিনি বলেন, অস্ত্র মামলার দুই আসামি হলেন এহতেশামুল হক ভোলা ও মনির হোসেনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার আদালতে বিচার কাজও শুরু হয়েছে। অস্ত্র উদ্ধার ঘটনায় দায়ের করা মামলা তদন্ত করেন বাকলিয়া থানার এসআই মো. মহিম উদ্দিন। ২৮ জুলাই ভোলা ও মনিরের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন তিনি। এদিকে মোস্টওয়ান্টেড মুছা সিকদারকে ধরিয়ে দিতে চট্টগ্রাম পুলিশ কমিশনারের ঘোষণাকে ‘নাটক’ বলে অভিহিত করেছেন মুছার স্ত্রী পান্না আক্তার। তার দাবি, মিতু হত্যার পরপরই তার স্বামী মুছাকে ধরে নিয়ে গেছে পুলিশ। কিন্তু তাকে আদালতে তোলা হয়নি। এরপর থেকেই ‘নিখোঁজ’ রয়েছেন মুছা। কিন্তু মুছাকে আটকের কথা এখন পর্যন্ত স্বীকার করেনি পুলিশের কোনো ইউনিট।
অপর দিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্ত্রী মিতু হত্যার পর থেকেই সাবেক এসপি বাবুল আক্তার রাজধানীর খিলগাঁওয়ের ভুঁইয়াপাড়ার শ্বশুর বাড়িতেই অবস্থান করছেন। মানসিকভাবে ভেঙে পড়া বাবুল বেশিরভাগ সময়ই বাসার ভেতরেই কাটাচ্ছেন। দুই শিশু সন্তান আখতার মাহমুদ মাহির ও তাবাসুম তাসনিম টাপুরকে দেখাশোনা ও তাদের পড়াশোনা নিয়েই ব্যস্ত থাকেন তিনি। এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাবুল আক্তার বাসার বাইরে কম বের হন। দুই সন্তানের কিংবা নিজের চিকিৎসা ও সন্তানদের স্কুলের জরুরি প্রয়োজনে মাঝেমধ্যে বাসা থেকে বের হন তিনি। সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তিনি ভালো আছেন। সন্তানদের নিয়ে মূলত তার সময় কাটছে। অন্য কিছু করার কথা ভাবছেন কিনা জানতে চাইলে সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হ্যাঁ, ভাবছি। কিছু না কিছু তো অবশ্য করতে হবে। স্ত্রী হত্যা মামলার তদন্তের সর্বশেষ খবর কী সর্বশেষ অবস্থা জানি না। এতটুকু জানি তদন্ত চলছে উত্তরে বলেন সাবেক এসপি বাবুল আক্তার।
দীর্ঘ জল্পনা-কল্পনার পর ৬ সেপ্টেম্বর পুলিশ সুপার (এসপি) বাবুল আক্তারকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দিয়ে সরকারি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর আগে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতুকে হত্যার ঘটনায় ২৪ জুন পুলিশ সদর দফতরে পদত্যাগপত্র জমা দেন বাবুল আক্তার। পরবর্তী সময়ে চাকরি ফিরে পেতে ও যোগদান করতে পুলিশ সদর দফতর ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে দৌড়ঝাপ করে ব্যর্থ হন তিনি। এ সময় তিনি দাবি করেছিলেন, স্ত্রী হত্যার পর ‘পরিস্থিতির শিকার হয়ে অনিচ্ছাকৃতভাবে’ পদত্যাগপত্রে স্বাক্ষর করেছিলেন তিনি। এর আগে চট্টগ্রামে স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু হত্যাকাণ্ডের ১৯ দিনের মাথায় ২৪ জুন রাতে আচমকা বাবুল আক্তারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মিন্টু রোডের গোয়েন্দা কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। ১৬ ঘণ্টা পর পরের দিন সন্ধ্যায় খিলগাঁওয়ের শ্বশুরের বাসায় তাকে আবার পৌঁছে দেয়া হয়। এরপর থেকেই সাবেক এই পুলিশ কর্মকর্তাকে ঘিরে নানা জল্পনা-কল্পনার সৃষ্টি হয়। তবে স্ত্রী হত্যায় বাবুলের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততার কথা পুলিশের কোনো দায়িত্বশীল কিংবা তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ যাবৎ বলেননি।