একের পর এক ছিনতাই এবং পুলিশের সক্ষমতা

 

অবশ্যই ছিনতাইকারীরা কার্পাসডাঙ্গার খ্রিস্টান কবরস্থান বাকে উড়ে এসে ছিনতাই করে বাতাসে মিলে যায় না। তাছাড়া ঘটনাস্থল থেকে কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির দূরত্বও খুব একটা বেশি নয়। যোগাযোগ ব্যবস্থাও দুর্গম নয় যে, পুলিশি টহল অসম্ভব। তাহলে প্রায় প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর ছিনতাই হচ্ছে কীভাবে? ছিনতাই বন্ধে দুষ্কৃতী ধরতে না পারার যে অজুহাতই খাড়া করা হোক না কেন, কর্তব্যপালনে কিছুটা হলেও যে গাফিলতি রয়েছে তা অস্বীকার করা উচিত হবে না। আর যদি সত্যিই কর্তব্যে অপারগতা, তাহলে আর ওখানে অক্ষমকে রেখে কাজ নেই। যতো দ্রুত বদলানো যায় ততোই ভালো। পদস্থ কর্তা নিশ্চয় জ্ঞানের গভীরতা দিয়ে বিষয়টি উপলব্ধি করে তড়িৎ উপযুক্ত পদক্ষেপটাই নেবেন।

চুয়াডাঙ্গা জেলার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা বাজারের অদূরেই খ্রিস্টান সমাধিস্থল। কার্পাসডাঙ্গা-পীরপরকুল্লা সড়কের ফকিরটেক বাঁকে কয়েক মাস ধরে ছিনতাই যেন নিয়মিত ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এইতো সেদিন একই স্থানে পুলিশের মোটরসাইকেলের সামনেও দাঁড়িয়েছিলো ছিনতাইকারীরা। অল্পের জন্য যেমন রক্ষা পায় পুলিশ তেমনই ছিনতাইকারীরাও পুলিশ বুঝে দ্রুত সটকাতে সক্ষম হয়। এরপরও পুলিশ ছিনতাইকারী ধরে আইনে সোপর্দ করার মতো দক্ষতা বা সক্ষমতা দেখাতে পারেনি। বরঞ্চ ছিনতাইয়ের ঘটনা দিন দিন বেড়েই চলেছে। গতকালও সন্ধ্যার পর প্রায় একই স্থানে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে। এরপর কি বলতে হবে কার্পাসডাঙ্গা এলাকায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক? একের পর এক ছিনতাইয়ের ঘটনা এলাকাবাসীকে আতঙ্কিত করেছে, এটাই স্বাভাবিক।

অপরাধ করার পর নয়, অপরাধ করার আগেই অপরাধী ধরার কথা। আমাদের দেশে এরকম পুলিশি বিচক্ষণতার দৃষ্টান্ত এখন বিরল। অপরাধ করার পরও অপরাধীর টিকি ছুঁতে না পারা এবং একই এলাকায় একের পর অভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা অবশ্যই অপ্রতুলতার প্রকাশ পায়। সেটা কর্তব্যরতর দায়িত্ববোধে নাকি পুরো ফাঁড়ির ক্ষেত্রে তা অবশ্যই খতিয়ে দেখা দরকার। এতে বিলম্ব মানে আমজনতার প্রতি অবিচার করাই শুধু নয়, পুলিশের প্রতি আস্থাহীনতা চরম পর্যায়ে নেয়া। পুলিশকে পারতে হবে। পুলিশের যে সদস্য যেখানে সক্ষম তাকে সেখানে পদায়ন নিশ্চিত করার বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে। আমজনতার জানমালের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইন প্রয়োগের পুরোনো পদ্ধতি পাল্টে যুগোপযোগী করার বিষয়টি আইনপ্রণেতাদের এখনই ভাবতে হবে। নিতে হবে বাস্তবমুখি পদক্ষেপ।