মাহমুদউল্লাহর ওই এক ওভার

 

স্টাফ রিপোর্টার: ম্যাড়ম্যাড়ে ম্যাচটাই কি না শেষ পর্যন্ত এমন রোমাঞ্চের পসরা সাজিয়ে বসবে। স্নায়ুর এমন পরীক্ষা নেবে! উত্তেজনার সব রসদ লুকিয়ে থাকলো মাহমুদউল্লাহর করা শেষ ওভারে। মাহমুদউল্লাহর বলে রাজশাহী কিংসের শেষ ব্যাটসম্যান নাজমুল ইসলাম স্টাম্পড হতেই উল্লাসে মেতে উঠলো খুলনা টাইটানস। ডাগআউট থেকে ছুটে এলেন দলের অন্য খেলোয়াড়েরাও। উদযাপন দেখে মনে হলো, যেন শিরোপাই জিতে গেছে তারা! এমন উচ্ছ্বাস তো খুলনাই করবে। ১৩৪ রানের লক্ষ্য দিয়ে তারা জিতে গেছে ৩ রানে। অথচ ১৮তম ওভার শেষেও মনে হয়নি ম্যাচটা রাজশাহী হারতে যাচ্ছে। এমনকি ১৯তম ওভারেও। ৯ বলে দরকার ৯ রান হাতে ৪ উইকেট। সহজ এক সমীকরণ। ফরহাদ রেজা তখন করলেন শিশুতোষ এক ভুল। জুনায়েদ খানের শর্ট বলটা অহেতুক লাফিয়ে চালাতে গিয়ে শর্ট কভারে মাহমুদউল্লাহর দুর্দান্ত এক ক্যাচে পরিণত হলেন।

তারপরও ম্যাচে ছিলো রাজশাহীর। শেষ ওভারে দরকার ৭ রান। অনেককেই চমকে দিয়ে বোলিংয়ে এলেন অধিনায়ক নিজে। যে মাহমুদউল্লাহ জাতীয় দলে এখন আর বোলার পরিচয়ে হাজিরই হন না! কিন্তু সেই এক ওভারই ম্যাচ ঘুরিয়ে দিল নাটকীয়ভাবে। রানটা তো হলোই না, মাহমুদউল্লাহর করা ওভারটাতে চোখের পলকে ঝরে গেল তাদের বাকি তিনটি উইকেটও। এক প্রান্তে অসহায় চোখে মেহেদী হাসান মিরাজ দেখলেন জিততে জিততে কীভাবে দল হেরে যায়! ইংল্যান্ড সিরিজের বিস্ময়-বালককে কেন দশে নামানো হয়েছে, সেই প্রশ্ন তুলতে পারেন দলের সমর্থকেরা। অথচ মুমিনুল কী অসাধারণ ব্যাটিংটাই না গতকাল করলেন। কাট, সুইপ, লফটেড শটে খেললেন ৬৪ রানের চোখ জুড়ানো ইনিংস, যেটি টি-টোয়েন্টিতে তার সর্বোচ্চ। নিজে উজ্জ্বল থাকলেও রাজশাহীর হারের পেছনে মুমিনুলের দৃষ্টিকটু আউটটিও কম দায়ী নয়। শফিউল ইসলামকে কেন অমন স্কুপ খেলতে গেলেন তিনিই ভালো জানেন। তবে দুর্দান্ত বোলিং করেছেন জুনায়েদ ও মাহমুদউল্লাহ। জুনায়েদ তো চতুর্থ ওভারে হ্যাটট্রিকের সুযোগও পেয়েছিলেন। হ্যাটট্রিক অবশ্য পূরণ হয়নি। তবে নিয়েছেন ২৩ রানে ৪ উইকেট। আর ইনিংসের শেষ ওভারে জাদুকরি বোলিঙে ম্যাচের সব আলো নিজের দিকে টেনে নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। তার আগে খুলনা অধিনায়ক খেলেছেন ৩২ রানের সময়োপযোগী ইনিংস। রাজশাহীর এ হারে আবুল হাসানের মনটা অবশ্য বিষাদে ঢেকে যাওয়ার কথা। বৃথাই গেছে তার ২৮ রানে ৫ উইকেটের দারুণ বোলিংটা।

Leave a comment