দামুড়হুদার কার্পাসডাঙ্গায় অব্যাহত ছিনতাই : অতঙ্কিত এলাকাবাসী

 

কার্পাসডাঙ্গা প্রতিনিধি: দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গায় অব্যাহত ছিনতাই, ডাকাতি ও অপহরণ ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে উঠেছে  এলাকাবাসী। এ থেকে পরিত্রাণ পেতে দিশেহারা ও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে পড়েছেন তারা। কার্পাসডাঙ্গা-মুজিবনগর সড়কের ফকিরখালী ব্রিজ, কার্পাসডাঙ্গা-মুন্সীপুর সড়কের খ্রিস্টান কবরস্থান ও কার্পাসডাঙ্গা-দামুড়হুদা সড়কের মোক্তারপুর ব্রিজ নামক স্থানে প্রায় প্রতিরাতেই পথচারীরা ছিনতাইয়ের শিকার হয়ে থাকেন।

৩ নভেম্বর রাতে কার্পাসডাঙ্গা-কুতুবপুর সড়কে খ্রিস্টান কবরস্তানের কাছে পীরপুরকুল্লা গ্রামের সেকেন্দারের ছেলে আমিনুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে তার কাছে থাকা মোবাইলফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ২ অক্টোবর সন্ধ্যায় দুর্বৃত্তরা একই স্থান থেকে মুন্সিপুর গ্রামের এক ব্যবসায়ীকে অস্ত্রের মুখে তার মোটরসাইকেল গতিরোধ করে মোবাইলফোন ও নগদ টাকা ছিনিয়ে নেয়। ১৩ অক্টোবর সন্ধ্যায় একইস্থানে কার্পাসডাঙ্গায় প্রাইভেট পড়তে এসে কুতুবপুর গ্রামের মৃত সমসের বলদির ছেলে ১০ম শ্রেণির ছাত্র মিনহাজ মুসা বাড়ি ফেরার সময় ছিনতাইকারীরা অস্ত্রের মুখে তাকে জিম্মি করে একটা মোবাইল ও নগদ আড়াই হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় এবং তাকে অপহরণ করে। পুলিশ ও এলাকবাসীর নানামুখি তৎপরতার কারণে পরের দিন ছেড়ে দেয়।

কার্পাসডাঙ্গা-মুজিবনগর সড়কের ফকিরাখালী ব্রিজের কাছে একইভাবে প্রতিনিয়ত ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। ৪ অক্টোবর রাতে কোমরপুর গ্রামের মৃত আসান মল্লিকের ছেলে কৃষক আশরাফ আলীকে দুর্বৃত্তরা তার নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। এখন পর্যন্ত তার কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। এর আগে ১৮ জুলাই ফকিরাখালী ব্রিজের কাছে মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে রাতে কানাইডাঙ্গা গ্রামের আবু বক্কের ছেলে ফারুকের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে লাল রঙের হিরোহোন্ডা মোটরসাইকেলটি ছিনিয়ে নেয়। এখনও মোটরসাইকেলটি উদ্ধার করতে পরেনি পুলিশ।

১ আগস্ট সন্ধ্যায় মুজিবনগর সড়কে চন্দ্রবাস গ্রামের শেষ মাথায় ছাতিয়ান তলার মৃত শওকত আলীর ছেলে মুকুলের মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে অস্ত্রের মুখে তার ঘাড়ে দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কোপ মেরে মোবাইলফোন ও ৩ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয় দুর্বৃত্তরা।

কার্পাসডাঙ্গা বাজার এলাকার সাধারণ ব্যাবসায়ীরা অভিযোগ করে বলেন, এখন আমরা বিকেলেই দোকানপাট বন্ধ করে বাড়ি চলে যাচ্ছি কারণ সন্ধ্যার পরপর ছিনতাই হচ্ছে। আর একই সময় উল্লেখিত স্থানগুলোতে অব্যাহতভাবে ছিনতায়ের ঘটনা ঘটলেও এর প্রতিরোধ বা প্রতিকারে পুলিশ কী করছে জনমনে এ প্রশ্ন দেখা দিয়েছে প্রবলভাবে।

কার্পাসডাঙ্গা বাজারের ব্যাবসায়ী কুতুবপুর গ্রামের পরাণ মালের ছেলে সাইদুর রহমান অভিযোগ করে বলেন আমি এখন বিকেল ৫টার মধ্যেই বাড়ি চলে যায়। কারণ কার্পাসডাঙ্গা-কুতুবপুর সড়কের খ্রিস্টান কবরস্থানের কাছে সন্ধ্যার সময় প্রতিদিনই ছিনতাই হয়। এলাকার সাধারণ মানুষ অভিযোগ করে বলেন, দিনের বেলায় দেখা যায় পুলিশ এদিক সেদিক ঘোরাঘুরি করে আবার যে স্থানে ছিনতাই হয় সেখানে পুলিশ মোটরসাইকেল চেকিং করে। যদি সন্ধ্যার পর পুলিশ ওই স্থানে টহল দেয় তা হলে এই অনাকাঙ্ক্ষিত ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা হয়তো আর ঘটবে না।

দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি আবু জিহাদ ফখরুল আলম খান উল্লেখিত সব ঘটনাগুলো সত্য নয় বলে জানান, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।