অনিয়মের দায়ে গাংনীতে ১০ টাকা কেজি চালের দুই ডিলারকে অব্যহতি

 

গাংনী প্রতিনিধি: দুস্থদের তালিকা প্রনয়ণে স্বেচ্ছাচারিতা ও ডিলারদের অনিয়মের নানা অভিযোগের মধ্যদিয়ে মেহেরপুর গাংনীতে ১০ টাকা কেজি দলের চাল বিক্রির কার্যক্রম চলছে। তবে প্রশাসনের পক্ষ থেকে তালিকা যাচাই-বাছাই ডিলারদের অনিয়মের নিবিড় তদন্ত করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় সাহারবাটি ও ষোলটাকা ইউপি ডিলারকে অব্যহতি দেয়া হয়েছে। তদন্ত চলছে তাদের অনিয়মের।

গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কার্ডধারী দুস্থদের কাছে চাল বিক্রি না করেই অভিযুক্ত দুজন মাস্টাররোলে বিক্রি দেখিয়েছেন। অভিযোগের তদন্ত করে সত্যতা মেলায় দুই ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। হতদরিদ্রদের মাঝে চাল বিক্রির জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত ডিলার নিয়োগ কমিটির সভায় সাহারবাটি ইউনিয়নের ডিলার জিয়াউল হক জিয়া ও ষোলটাকা ইউনিয়নের আনোয়ার পাশাকে ডিলার থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। তাদের স্থলে নতুন ডিলার নিয়োগ দিয়ে নভেম্বর মাসের চাল বিক্রির সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।

অব্যহতির বিষয়টি নিশ্চিত করে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান দৈনিক মাথাভাঙ্গাকে জানান, তাদের অনিয়মের তদন্ত চলছে। দুর্নীতি প্রমাণ হলে আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ডিলার ও তালিকা প্রনয়ণকারীদের বিষয়ে তিনি বলেন, তালিকা তৈরিতে অনিয়মের বিষয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। কয়েকটি ইউনিয়ন থেকে দেয়া তালিকার মধ্য থেকে কিছু কার্ড বাতিল করা হয়েছে। শূন্যস্থানে প্রকৃতপক্ষে যারা কার্ড পাওয়ার যোগ্য তাদেরকে তালিকাভুক্ত করা হবে।

এদিকে অব্যহতি পাওয়া ডিলার আনোয়ার পাশার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি। জিয়াউল হক জিয়া বলেছেন, গ্রুপিংয়ের কারণে একজন জনপ্রতিনিধি তার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে অভিযোগ করছে। প্রকৃতপক্ষে তিনি কোন অনিয়ম করেননি।

গাংনী উপজেলার ৯টি ইউনিয়নে ৯ জন ডিলার নিয়োগ করেছে খাদ্য অধিদফতর। কিন্তু চাল প্রদানের শুরু থেকেই শুরু হয় নানা অনিয়ম। ৩০ কেজির স্থলে ২৫-২৮ কেজি চাল প্রদানের অভিযোগ ওঠে রাইপুর, বামন্দী, তেঁতুলবাড়ীয়া ও মটমুড়াসহ কয়েকজন ডিলারের বিরুদ্ধে। এসবের তদন্ত অব্যহত রয়েছে। অপরদিকে ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার ও চেয়ারম্যানদের দেয়া তালিকায় উঠে আসে বিত্তবানদের নাম। দুস্থদের স্থলে কয়েকজন জনপ্রতিনিধি তাদের আত্মীয় স্বাজন ও কাছের লোকদের নাম প্রদান করেন। এ কারণে প্রথম থেকেই তালিকা প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে পড়ে। বিষয়টি নজরে নিয়ে মেহেরপুর জেলা প্রশাসক, গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসএম জামাল আহম্মেদ ও খাদ্য নিয়ন্ত্রক আয়েশা খাতুন স্বোচ্ছার হয়ে ওঠেন। খাদ্য অধিদফতর ও উপজেলা প্রশাসনের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে শুরু হয় তদন্ত ও তালিকা যাচাই। এ যাচাই-বাছাই শেষ হলে চুড়ান্ত তালিকা প্রস্তুত করে প্রকৃত দুস্থদের মাঝে চাল দেয়া সম্ভব হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী অফিসার।