সিটিসেল বন্ধ ঘোষণা

 

স্টাফ রিপোর্টার: অবশেষে বন্ধ হয়ে গেল বেসরকারি মোবাইলফোন অপারেটর সিটিসেল। বিটিআরসির পাওনা না দেয়ায় তাদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়া হয়। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিটিসেলের বন্ধ হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। সন্ধ্যায় রাজধানীর বিটিআরসি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে একথা বলার সময় মহাখালীতে সিটিসেলের প্রধান কার্যালয়ে র‌্যাব-পুলিশ নিয়ে নিয়ন্ত্রণ সংস্থার কর্মকর্তারা অপারেটরটির অফিস, সুইচরুম বন্ধ করার কাজ করছিলেন। সংবাদ সম্মেলনে তারানা বলেন, বিটিআরসির বকেয়া না দেয়ায় সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়েছে।  বিকাল পৌনে ৫টার দিকে বিটিআরসির পরিচালক (এনফোর্সমেন্ট) এয়াকুব আলী ভূঁইয়া সিটিসেলের প্রধান কার্যালয় প্যাসিফিক সেন্টারে ঢোকার পরপরই প্রতিমন্ত্রীর এই সংবাদ সম্মেলনের ঘোষণা আসে। বাংলাদেশের প্রথম মোবাইলফোন অপারেটর সিটিসেলের কাছে সরকারের পৌনে পাঁচশ কোটি টাকা পাওনা। এই পাওনা না পেয়ে গত জুলাই মাসে সিটিসেলের কার্যক্রম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিলো বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (বিটিআরসি)। পরের মাসে তাদের নোটিশ দেয়া হয়েছিলো। ওই নোটিসের পর সিটিসেল আদালতে গেলে আপিল বিভাগ টাকা পরিশোধ সাপেক্ষে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে সিটিসেলকে দুই মাস সময় দিয়েছিলো। গত ২৯ আগস্ট আদালতের ওই আদেশ হয়। বিটিআরসির আইনজীবী খন্দকার রেজা-ই-রাকিব সেদিন সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ১৭ অগাস্টের আগ পর্যন্ত সিটিসেলের কাছে বিটিআরসির পাওনা রয়েছে ৪৭৭ কোটি টাকা। এর দুই তৃতীয়াংশ এখন থেকে এক মাসের মধ্যে, আর এক তৃতীয়াংশ পরবর্তী এক মাসে পরিশোধ করতে হবে। তাছাড়া ১৭ আগস্টের পর থেকে প্রতিদিন বিটিআরসি আরও ১৮ লাখ টাকা করে পাওনা হচ্ছে। প্রতিদিনের এই টাকা অবিলম্বে পরিশোধের নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, টাকা না পেলে বিটিআরসি যে কোনো পদক্ষেপ নিতে পারবে।  সিডিএমএ অপারেটর সিটিসেলের গ্রাহক সংখ্যা কমতে কমতে এখন দুই লাখের চেয়ে কম। যেখানে বাংলাদেশে মোট মোবাইল সিমের সংখ্যা ১৩ কোটি ১৩ লাখ। বিটিআরসি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাহমুদ বলেন, সিটিসেলের কাছে সরকারের পাওনা রয়েছে প্রায় ৪৭৮ কোটি টাকা। বারবার তাগিদ দেয়া হলেও তারা এ পাওনা মেটানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। বেসরকারি অনেক কোম্পানীও সিটিসেলের কাছে বিপুল অংকের টাকা পাওনা রয়েছে বলেও ভুক্তভোগিরা বিটিআরসিকে জানিয়েছে। তিনি জানান, আইন অনুযায়ী পাওনা পরিশোধ না করায় এর আগে একাধিকবার নোটিশ দেয়া হয়েছিলো সিটিসেলকে। কিন্তু তারা কোনো কর্ণপাত করেনি। তিনি বলেন, বন্ধ হওয়ার আগে অপারেটরটির গ্রাহকদেরও সময় দেয়া হয়েছে যাতে তারা অন্য অপারেটরে চলে যেতে পারেন। তিনি বলেন, একারণে কোন গ্রাহকের এখন আর ভোগান্তির মুখে পড়তে হবে না। ১৯৮৯ সালে বিটিআরসি থেকে টেলিযোগাযোগ সেবার লাইসেন্স পায় সিটিসেল বা প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড। বর্তমানে এই কোম্পানির ৩৭ দশমিক ৯৫ শতাংশ শেয়ারের মালিক বিএনপি নেতা ও সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী এম মোরশেদ খান মালিকানাধীন প্যাসিফিক বাংলাদেশ টেলিকম লিমিটেড। সিটিসেলের সবচেয়ে বেশি ৪৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে সিঙ্গাপুরভিত্তিক সিংটেল এশিয়া প্যাসেফিক ইনভেস্টমেন্ট লিমিটেডের হাতে। এছাড়া ফার ইস্ট টেলিকম লিমিটেড ১৭ দশমিক ৫১ শতাংশ শেয়ারের মালিক।