বাংলাদেশের উন্নয়নে বিশ্ব ব্যাংকের জোরালো ভূমিকা চাই :প্রধানমন্ত্রী

 

স্টাফ রিপোর্টার: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ আজ চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিয়েছে। যে কোনো ধরনের সহিংসতার বিরুদ্ধে বর্তমান সরকার ‘জিরো টলারেন্স’ নীতি গ্রহণ করেছে। দেশের জঙ্গিবাদ দমনে আমরা সক্ষম হয়েছি। জঙ্গিবাদের অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করার লক্ষ্যে ভবিষ্যতে জঙ্গিবাদ দমন কার্যক্রমকে আরো শানিত করা হবে। তিনি বলেন, প্রাকৃতিক ও মনুষ্যসৃষ্ট বহুবিধ দুর্যোগ ও চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে অসামান্য সফলতা অর্জন করেছে। আর বিশ্ব ব্যাংকের মতো সংস্থার কাছ থেকে দারিদ্র্য বিমোচনে বাংলাদেশের অর্জনের ‘প্রশংসা’ লক্ষ্য অর্জনের চেষ্টাকে আরও বেগবান করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। গতকাল সোমবার বিকালে রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আন্তর্জাতিক দারিদ্র্য বিমোচন দিবস উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশ সরকার ও বিশ্বব্যাংকের যৌথ উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সঙ্গে অংশীদারিত্ব আরো জোরদার করার আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের উন্নয়নে বিশ্ব সম্প্রদায়ের সঙ্গে বিদ্যমান অংশীদারিত্ব ভবিষ্যতে আরও শক্তিশালী হবে। বিশ্বব্যাংক আমাদের অন্যতম প্রধান উন্নয়ন সহযোগী। আমাদের এই প্রয়াসে বিশ্বব্যাংক আরও জোরালো ভূমিকা রাখবে- এ প্রত্যাশা করছি।’ প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অমিত সম্ভাবনার দেশ। এদেশের মানুষ অত্যন্ত সাহসী, দৃঢ়চেতা এবং পরিশ্রমী। তিনি বলেন, আমরা ইতোমধ্যে মানব-উন্নয়ন সূচকে মধ্যম ক্যাটাগরির দেশ এবং মাথাপিছু আয় বিবেচনায় নিম্ন মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছি। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, আমরা সহসাই স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে বেরিয়ে আসব। বাংলাদেশ ২০২১ সালের মধ্যে মধ্যম আয়ের একটি দেশে পরিণত হবে বলে নিজের বিশ্বাসের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর প্রতিধ্বনী পাওয়া যায় বিশ্ব ব্যাংক কর্মকর্তাদের বক্তব্যেও। ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ হবে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ দেশ বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

শেখ হাসিনা বলেন, এগিয়ে যাওয়ার পথে আমাদের সামনে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে। আমাদের জনগোষ্ঠীর একটি উল্লেখযোগ্য অংশ দারিদ্র্যসীমার নীচে বসবাস করছেন। কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির মাধ্যমে আমাদের জনমিতিক সুবিধার (ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড) সদ্ব্যবহার করতে হবে। এ লক্ষ্যে আমরা ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল, বেশ কিছু হাইটেক পার্ক, সফ্টওয়্যার টেকনোলজি পার্ক প্রতিষ্ঠাসহ বেসরকারি এবং বৈদেশিক বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করেছি।

শেখ হাসিনা বলেন, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় নির্ধারিত সময় ২০৩০ সালের পূর্বেই এসডিজি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। একটি উচ্চ-পর্যায়ের তদারকি টিম এসডিজি বাস্তবায়ন কার্যক্রম সমন্বয় ও পরিবীক্ষণ করছে। একটি মধ্যম আয়ের দেশের অবকাঠামোগত চ্যালেঞ্জ বিবেচনায় নিয়ে প্রবৃদ্ধি সঞ্চারী কাঠামোগত রূপান্তরের একাধিক বৃহত্ প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অপুষ্টিজনিত সমস্যামুক্ত জনগোষ্ঠী জাতীয় উন্নয়নের প্রধান সম্পদ। ১৯৯০ সাল থেকে বাংলাদেশে অপুষ্টিতে ভোগা জনগোষ্ঠীর হার ক্রমান্বয়ে হ্রাস পেলেও, আর্থ-সামাজিক অন্যান্য ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এক্ষেত্রে অগ্রগতি সাধিত হয়নি। আমরা বর্তমানে দারিদ্র্যের হার ২২ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছি। ২০২১ সাল নাগাদ এটি আমরা ৭ শতাংশ বা ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে চাই।