এসএসসি পরীক্ষার চার মাস আগে হঠাৎ পরিবর্তন : বিপাকে ১৫ লাখ পরীক্ষার্থী

 

স্টাফ রিপোর্টার: এসএসসি ও সমমান-২০১৭ পরীক্ষার আর ৪ মাস বাকি। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ৮টি সাধারণ শিক্ষা বোর্ড, একটি মাদরাসা ও একটি কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধীনে ১৫ লাখ শিক্ষার্থী মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমান পরীক্ষায় অংশ নেবে। তাদের প্রাক-নির্বাচনী পরীক্ষা শেষ হয়েছে। ১০ দিন পর নির্বাচনী পরীক্ষা শুরু হবে। এর মধ্যে হঠাৎ এসএসসির প্রশ্নের নম্বর ও সময় বিভাজনে পরিবর্তন এনেছে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড। ১৮ সেপ্টেম্বর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে ২০১৭ সালের পরীক্ষায় প্রশ্নের নম্বর ও সময় বিভাজন সংক্রান্ত চিঠি পাঠিয়েছে সংশ্লিষ্ট শিক্ষাবোর্ডগুলো। এই তুঘলকি সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েছেন কোমলমতি শিক্ষার্থী, তাদের অভিভাবক এবং শিক্ষকরা।

জানা গেছে, আগামী এসএসসি পরীক্ষায় বহুনির্বাচনী (এমসিকিউ) পরীক্ষায় ১০ নম্বর কমিয়ে সৃজনশীল অংশে ১০ নম্বর বাড়ানো হয়েছে। এতোদিন যেখানে দুই ঘণ্টা ১০ মিনিটে ৬টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর দিতে হতো। এবার একটি প্রশ্ন বাড়িয়ে ৭টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর লিখতে হবে শিক্ষার্থীদের। সৃজনশীলে ৬টি প্রশ্নের উত্তর দেয়া নিয়েই শিক্ষা সংশ্লিষ্টরা আপত্তি জানিয়ে আসছিলেন। পরীক্ষার্থীরা বহুনির্বাচনী পরীক্ষার ক্ষেত্রে ৩০ মিনিট এবং সৃজনশীল অংশের জন্য আড়াই ঘণ্টা সময় পাবে। নতুন নিয়মে এই দুই অংশের পরীক্ষায় কোনো বিরতি থাকবে না। বিরতিহীনভাবে তত্ত্বীয় পরীক্ষা নেয়া হবে।

এদিকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা এই পরিবর্তনের প্রতিবাদে সরব হয়ে উঠেছেন। গত এক সপ্তাহে দেশের বেশ কয়েকটি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে মানববন্ধনসহ নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন। রাজধানীর বেশ কয়েকটি স্কুলের দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানান, নবম শ্রেণি থেকে এক নিয়মে আমরা পরীক্ষা দিয়েছি। এখন নতুন নিয়মে এসএসসি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ নিয়ে আমরা উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় আছি। স্বল্প সময়ে ছয়টি সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর করাই দুরূহ। আমরা এতোদিন এক পদ্ধতিতে প্রস্তুতি নিয়েছি। হঠাৎ করে নিয়ম পরিবর্তন কেন? আমরা গিনিপিগ হতে চাই না।

অভিভাবক সমন্বয় পরিষদের মহাসচিব নীপা সুলতানা বলেন, নতুন মানবণ্টন ও প্রশ্ন পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হয়নি। এ ধরনের কোনো অনুশীলনও করেনি। হঠাৎ করে সাতটি প্রশ্নের উত্তর দেয়া কঠিন হবে। তিনি বলেন, স্কুলগুলোতে গত এক বছর ধরে যে পরীক্ষা নেয়া হয়েছে, তাতে নতুন পদ্ধতি নিয়ে কোনো ধারণা বা অনুশীলন করা হয়নি। এ নিয়মের বাতিলের দাবি জানান তিনি। এ বিষয়ে আন্তঃশিক্ষা বোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক উপকমিটির আহ্বায়ক ও ঢাকা শিক্ষাবোর্ড পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, বছরের শুরুতে প্রশ্নের নম্বর ও সময় বিভাজন পদ্ধতি দিতে পারলে ভালো হতো। পরীক্ষার সিলেবাস ও প্রশ্নের নম্বরবণ্টন জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) করে থাকে। এজন্য এনসিটিবিকে দোষারোপ করে তিনি বলেন, পরীক্ষা শুরুর ১৫ মিনিট আগে অলিখিত উত্তরপত্র ও বহুনির্বাচনী ওএমআর শিট দেয়া হবে। পরীক্ষা বিরতিহীনভাবে প্রশ্নেপত্রে উল্লিখিত সময় পর্যন্ত চলবে। সিলেবাস অপরিবর্তিত রেখে নম্বর ও সময় বিভাজন করা হয়েছে। তিনি বলেন, যা নিয়ে অভিভাবক ও বাচ্চারা শঙ্কিত হচ্ছেন তা ঠিক নয়। সৃজনশীল একটি প্রশ্নের জন্য ২০ মিনিট দেয়া হচ্ছে। সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নতুন নিয়মে নির্বাচনী পরীক্ষা নেয়ার কথা বলা হয়েছে বলে তিনি জানান।