স্টাফ রিপোর্টার: বিশ্বাস হারিয়ে ফেলেছিলেন অনেকেই। বিশ্বাস হারাননি ক্রিকেটাররা, বিশ্বাস হারাননি অধিনায়ক এবং বিশ্বাস হারাননি একদিন আগেই নিষেধাজ্ঞা উঠে যাওয়া বোলার তাসকিন আহমেদ। তামিম ইকবাল ও সাকিব আল হাসানের গড়ে দেয়া মঞ্চের ওপর দাড়িয়ে অবিশ্বাস্য বোলিং করে বাংলাদেশকে ৭ রানে ম্যাচ জেতালেন সেই তাসকিন আহমেদ। আগে ব্যাট করে বাংলাদেশের ছুড়ে দেয়া ২৬৬ রানের লক্ষে সাবলীলভাবে চলছিলো আফগানিস্তান। ২ উইকেটে ১৯০ রান তুলে ফেলেছিলো তারা। শেষ ৩ ওভারে ২৭ রান দরকার ছিলো হাতে ৫ উইকেট নিয়ে। সেখান থেকেই অবিশ্বাস্য দুটি ওভার করলেন তাসকিন। দুই ওভারে মাত্র ১১ রান দিয়ে ৪টি উইকেট তুলে নিয়ে আফগানিস্তানকে ২৫৮ রানে অলআউট করে দিলেন।
টস জিতে ব্যাট করতে নেমে ইনিংসের শুরুতেই হোঁচট খায় বাংলাদেশ। ইনিংসের পঞ্চম বলেই পুল খেলতে গিয়ে কোনো রান না করেই ক্যাচ তুলে দেন সৌম্য সরকার। দলীয় ১ রানে সৌম্যর বিদায়টা বিপদের ঘনঘটা বয়ে আনেনি। ব্যাট হাতে নির্ভরতার প্রতীক হয়ে আর্বিভূত হন তামিম ও ইমরুল। ক্রমশই লম্বা হতে থাকা তামিম-ইমরুলের ৮৩ রানের জুটি বিচ্ছিন্ন হয় ১৯তম ওভারে। নবীর নিচু হয়ে আসা বলটা ইমরুলের ব্যাটে লেগে স্ট্যাম্প ভেঙে দেয়। ইমরুল করেন ৩৭ রান। ইনিংসের শুরু থেকেই স্থিতধী তামিমকেই দেখা যাচ্ছিলো ব্যাট হাতে। ক্যারিয়ারের ৩৩তম হাফ সেঞ্চুরি পেয়ে যান ৬৩ বলে। সেঞ্চুরিও প্রায় দৃষ্টিসীমায় ছিলো। কিন্তু তার মনোসংযোগে চিড় ধরে ৩৬তম ওভারে। মিরওয়াইস আশরাফের করা ওভারের প্রথম বলে লং অফে ক্যাচ দিলেন তামিম। ইতি ঘটে তামিম-মাহমুদউল্লাহর ৭৯ রানের জুটি।
৯৮ বলে ৯টি চারে ৮০ রান করেছেন তামিম। রয়ে-সয়ে শুরু করা মাহমুদউল্লাহও একটা সময় খোলস ছাড়িয়ে আক্রমণ শুরু করেন। দৌলত জাদরানের ৩৮তম ওভারে দুটি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। ১৫তম হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করেন ৬৫ বলে। নবীর শিকার হওয়ার আগে ৭৪ বলে ৬২ রান (৫ চার, ২ ছয়) করেন মাহমুদউল্লাহ। ব্যাটিং অর্ডারে একধাপ অবনমন হওয়া মুশফিক (৬) ও সাব্বির (২) সুবিধা করতে পারেননি। দুজনই লেগ স্পিনার রশিদ খানের শিকার হন। সতীর্থরা আসা যাওয়ার মাঝে থাকলেও পাঁচ নম্বরে ব্যাটিংয়ে আসা সাকিব খেলে গেছেন স্বরুপে। ২ রানের জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেছেন তিনি। ৪৮তম ওভারে বাউন্ডারিতে ধরা পড়েন সাকিব। ৪০ বলে ৪৮ রান করেন তিনি। শেষ দিকে তাইজুলের ১১ রানের ইনিংসে আড়াইশো পার হয় বাংলাদেশের স্কোর। মাশরাফি ৪, তাসকিন ২ ও রুবেল অপরাজিত ১ রান করেন। আফগানদের পক্ষে দৌলত জাদরান ৪টি, নবী-রশিদ খান ২টি করে উইকেট পান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর: বাংলাদেশ: ৫০ ওভারে ২৬৫ (তামিম ৮০, সৌম্য ০, ইমরুল ৩৭, মাহমুউল্লাহ ৬২, সাকিব ৪৮, মুশফিক ৬, সাব্বির ২, মাশরাফি ৪, তাইজুল ১১, তাসকিন ২, রুবেল ১*; দৌলত ৪/৭৩, নাভিন ১/৬২, নবি ২/৪০, আশরাফ ১/৫১, রশিদ ২/৩৭)
আফগানিস্তান: ৫০ ওভারে ২৫৮ (নুরি ৯, শাহজাদ ৩১, রহমত ৭১, হাশমতুল্লাহ ৭২, নবি ৩০, নাজিবুল্লাহ ৭, স্তানিকজাই ১০, রশিদ ৭, আশরাফ ৩, দৌলত ২, নাভিন ০*; মাশরাফি ২/৪২, তাসকিন ৪/৫৯, সাকিব ২/২৬, রুবেল ১/৬২, তাইজুল ১/৪৪, মাহমুদউল্লাহ ০/২২)
ফল: বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী। ম্যাচ সেরা: সাকিব আল হাসান।