ঝিনাইদহের বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসায় সুপার পদে ১২ লাখ টাকার নিয়োগ বানিজ্যও পর-আদালতে মামলার পর নিষেধাজ্ঞা !

 

ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার সুপারিনটেনডেন্ট পদে ১২ লাখ টাকা নিয়োগ বানিজ্যর অভিযোগ পাওয়া গেছে। রোববার সকাল ১০টার দিকে ঝিনাইদহ সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ে একটি কক্ষে গোপনে এ নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করা হয়। সোমবার এ সংক্রান্ত একটি মামলা ঝিনাইদহ সহকারী জজ আদালতে দায়ের করেন এক শিক্ষক। আদালত ওই মামলায় অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ দিয়েছেন। এ খবর নিশ্চিত করেছেন বাদীর আইনজীবি স্বপন কুমার।

অভিযোগ উঠেছে ঘটনার দিন বেলা ৩টার দিকে ডিজির (মহাপরিচালক শিক্ষা অধিদফতর) প্রতিনিধি ঝিনাইদহ সরকারী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফরোজা খাতুন নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করেন। ডিজির প্রতিনিধি হিসেবে তিনি মাত্র ৫০০০ টাকা সম্মানী নিয়েছেন বলেও জানান। তিনি বলেন, অন্য কেও দুর্নীতি করলে তার দায়িত্ব নেবো না আমি।

এদিকে নিয়োগ প্রার্থী ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালীচরণপুর মাধ্যমিক স্কুলের মৌলভী শিক্ষক এমএইচ শুকুর আলী, কালীগঞ্জ কানুহরপুর মাদরাসার সহকারী সুপার আবু তালেব, কালীগঞ্জ মহিলা মাদরাসার সুপার নুরুল্লাহসহ অন্তত ৭ জন প্রার্থী নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। প্রাপ্ত তথ্য মতে মোট ১১ জন প্রার্থী ওই মাদরাসার সুপার পদে আবেদন করেন। গত ২৪ জুলাই একই পদে নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ করার কথা ছিলো।

পরবর্তিতে ১৮ সেপ্টেম্বর পুনর্নিয়োগ পরীক্ষার জন্য দিন ধার্য করা হয়। অভিযোগ করা হয়েছে কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ সরকার, বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি মহসীন আলী, ভারপ্রাপ্ত সুপারিটেনডেন্ট সাখাওয়াত হোসেন, ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল জব্বার মোটা টাকার বিনিময়ে গোপনে নিয়োগ পরীক্ষা নেয়ার ব্যবস্থা করেন। ডিজির প্রতিনিধিকে পটিয়ে পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি দেয়ার জন্য তারা ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে গোপন পরীক্ষা নেন। যে কারণে ১০০০ টাকা ব্যাংক ড্রাফটসহ যথা সময়ে দরখাস্ত করেও নিয়োগ পরীক্ষার খবর বা ইন্টারভিউ কার্ড পাননি ৫ প্রার্থী।

তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, আগেই ষড়যন্ত্র করে আবেদনকারীদের মধ্য থেকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার কালীচরণপুর মাধ্যমিক স্কুলের শিক্ষক এমএইচ শুকুর আলীর নাম বাদ দেয়া হয়। তিনি সরাসরি অভিযোগ করে বলেছেন, কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ সরকার ও সংশ্লিষ্ট মাদরাসার ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে সুপারিটেনডেন্ট পদে মোস্তাফিজুর রহমান নামের এক ব্যক্তিকে নিয়োগ দিয়েছেন। উক্ত ব্যক্তি বর্তমানে কালীগঞ্জ উপজেলার বারোবাজার মাদরাসার সহকারী শিক্ষক পদে কর্মরত আছেন।

কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আরিফ সরকার ও বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদরাসার ম্যানিজিং কমিটির সভাপতি মহসীন আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেছেন, নিয়মনীতি মেনে নিয়োগ গ্রহণ করা হয়েছে। কারো অভিযোগে কাজ হবে না বলে জানান কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার।

এই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আগে থেকেই দুর্নীতি অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। অথচ তাকে ঝিনাইদহ সদর উপজেলা শিক্ষা অফিসার হিসেবে বদলী করা হয়েছে।

এ ব্যাপারে ঝিনাইদহের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা/এডিএম) মো. আব্দুর রউফ মণ্ডলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, অভিযোগের বিষয়ে তদন্ত করে আইন গত ব্যবস্থা নেয়া হবে।