ইউপি চেয়ারম্যান ও তিন ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা : মাগুরায় ভিজিএফের চাল আত্মসাৎ

স্টাফ রিপোর্টার: মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলায় ভিজিএফ’র চাল আত্মসাৎ ও প্রতারণার অভিযোগে নহাটা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী মিয়াসহ তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. লাল্টু মিয়া গত রোববার মহম্মদপুর থানায় মামলাটি করেন। অপর দুই আসামি হলেন নহাটা বাজারের চালের ব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তার ভাই সমীর কুমার দে।
এদিকে একই অভিযোগে গত বৃহস্পতিবার নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন বাদী হয়ে মঞ্জুর রহমান নামে অপর এক চাল ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।

থানা-পুলিশ ও ইউএনও কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে সরকার নহাটা ইউনিয়নে ১ হাজার ৬২৭ জন দুস্থ, অসহায় ব্যক্তির জন্য ১০ কেজি করে ভিজিএফ’র চাল বরাদ্দ দেয়। কিন্তু ওই চাল তাদের মধ্যে বিতরণ না করে স্থানীয় দুই ব্যবসায়ীর কাছে বিক্রি করে দেয়ার অভিযোগ ওঠে ইউপির চেয়ারম্যান আলী মিয়ার বিরুদ্ধে। খবর পেয়ে গত রোববার বেলা ১১টার দিকে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন নহাটা গ্রামে চালব্যবসায়ী আনন্দ কুমার দে ও তার ভাই সমীর কুমার দের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফ’র ২২ বস্তা চাল (১ হাজার ১০০ কেজি) উদ্ধার করেন। বস্তাগুলোর মুখ সেলাই করা ও খাদ্য বিভাগের সিলযুক্ত ছিল। তারা নহাটা বাজারে মরসুমি কৃষিপণ্য বেচাকেনা করেন। পরে প্রতারণা ও ভিজিএফ’র চাল আত্মসাতের অভিযোগে পিআইও মো. লাল্টু মিয়া বাদী হয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ও ওই দুই ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন।

এছাড়া গত বৃহস্পতিবার বিকেলে নহাটা বাজারের আরেক চাল ব্যবসায়ী মঞ্জুর রহমানের গুদামে অভিযান চালিয়ে ভিজিএফের ২৭ বস্তা চাল উদ্ধার করেন ইউএনও মো. শাহিন হোসেন। এ সময় মঞ্জুরকে গ্রেফতার করা হয়। তার বিরুদ্ধে মহম্মদপুর থানায় মামলা করেন নহাটা ইউপির সচিব আলমগীর হোসেন। তবে চাল আত্মসাতের অভিযোগ অস্বীকার করে ইউপি চেয়ারম্যান আলী মিয়া বলেন, মেম্বারদের (ইউপি সদস্য) উপস্থিতিতে ৩২২ বস্তা চাল ১ হাজার ৬২৭ জন দুস্থ লোকের মধ্যে তিন দিন ধরে বিতরণ করেছি। মাস্টার রোলে সদস্যদের স্বাক্ষর আছে। ভিজিএফ’র চালে গন্ধ থাকে। তাই গরিব মানুষ ওই চাল খেতে চান না, ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রি করে দেন। উদ্ধার হওয়া চালের সাথে আমার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি অভিযোগ করেন, ইউএনও সাহেব আমার কাছে ভিজিএফ’র ৩০০টি কার্ড দাবি করেন। কিন্তু তালিকা চূড়ান্ত হওয়ায় তাকে কোনো কার্ড দিতে পারেনি। তাই আমার ওপর তার রাগ ছিলো।
কার্ড চাওয়ার কথা স্বীকার করে ইউএনও মো. শাহিন হোসেন বলেন, আওয়ামী লীগের সভাপতি-সম্পাদকেরা আমার কাছে এসেছিলেন। তারা কিছু কার্ড চেয়েছিলেন। তারা রাজনীতি করেন। এজন্য তাদের কার্ডের দরকার হয়। আমি চেয়ারম্যানকে বলেছিলাম। কিন্তু তিনি তা দিতে পারেননি। এর সাথে ভিজিএফ’র ওই চাল উদ্ধার বা মামলার কোনো সম্পর্ক নেই।

মহম্মদপুর থানার ওসি তরীকুল ইসলাম গতকাল শুক্রবার বলেন, ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলাটি রেকর্ড করার পর দুর্নীতি দমন কমিশনে পাঠিয়ে দিয়েছি। কমিশন মামলা তদন্ত করবে।