স্টাফ রিপোর্টার: ঝিনাইদহের হরিণাকুণ্ডুর শিখা ক্লিনিকে ডাক্তারের ভুল অপারেশনে পলি খাতুন (২৫) নামে এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। পলি খাতুন একই উপজেলার পারফলসি গ্রামের আবুল কালাম ওরফে কালুর স্ত্রী।
ক্লিনিক মালিক কলিম উদ্দীন জানান, গত শুক্রবার রাতে পলি খাতুন সিজারিয়ানের জন্য ভর্তি হন শিখা ক্লিনিকে। রাতেই অপারেশন করেন হরিণাকুণ্ডু হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. আলমগীর হোসেন। মধ্যরাতে ভালোভাবে জ্ঞান ফিরে আসার কিছু সময় পর পলি খাতুনের অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হয়ে পড়ে। তাকে কুস্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে রেফার করা হয়। গতকাল শনিবার সকাল ৮টার দিকে পলি খাতুন মৃত্যু বরণ করেন বলে পরিবারিকভাবে জানা যায়।
রোগীর স্বজনরা অভিযোগ করেছেন, অপারেশনের সময় নাড়ি বা অন্য কোনো শিরা কেটে ফেলার ফলে পলি খাতুনের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ জনিত কারণে মৃত্যু হয়েছে।
এ ব্যাপারে পলির স্বামী জানান, দায়ী চিকিৎসক ডা. আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে তিনি ঝিনাইদহ সিভিল সার্জনের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন। তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ফুঁসে উঠেছে বিক্ষুদ্ধ এলাকাবাসী। ঘটনার পর থেকেই ডা. আলমগীর হোসেন গাঢাকা দেয়ায় এ বিষয়ে তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যাচ্ছে না।
বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহের সিভিল সার্জন ডা. আব্দুস সালামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি ইতোমধ্যে ঘটনাটি অবহিত হয়েছেন বলে জানান। তদন্ত করে দোষী চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আইন মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন। অন্যদিকে হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি মাহাতাব উদ্দীন জানান, লিখিত অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।
এদিকে এলাকাবসী জানান, হরিণাকুণ্ডু উপজেলার এসব ক্লিনিকগুলোতে স্থায়ী কোনো চিকিৎসক বা প্রশিক্ষিত নার্সসহ অন্য কোনো জনবল নেই। যে কারণে ক্লিনিকগুলোতে মাঝে মধ্যেই সমাজের নিম্নবিত্ত মানুষের মৃত্যুর ঘটনা ঘটছে। এখানে মানুষ যেন গিনিপিগের মত অসহায় প্রাণিতে পরিণত হয়েছে। পলির মতো আর কোনো প্রসূতি যেন ভুল চিকিৎসার বলি হয়ে অকালে মৃত্যু বরণ করতে না হয় সে ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থতা গ্রহণ করবেন বলে সচেতন মহলের প্রত্যাশা।