কষ্টের জীবন : আলমডাঙ্গায় ট্রেনের নিচে শুয়ে আত্মহত্যা

???????????????????????????????

সহোরা খাতুন মস্তিস্কে রক্তক্ষরণে হারান স্বাভাবিক চলাফেরার ক্ষমতা

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গায় ট্রেনে কেটে সহোরা খাতুন নামের মধ্যবয়স্ক এক বিধবা আত্মহত্যা করেছেন। তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১ বছর ধরে শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে কষ্টকর জীবনযাপন করতেন। উচ্চ রক্তচাপে মস্তিস্কে রক্তকরণে শরীরের একটি দিক অসাড় হয়ে যায়। নিজের জীবনটা নিজের কাছেই বোঝা হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত মায়াবি জগতের মায়া ছেড়ে নিজেই নিজের জীবন প্রদীপ নিভিয়ে চলে গেলেন না ফেরার দেশে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার ৯ নং ওয়ার্ডের বণ্ডবিল গ্রামের মৃত আব্দুল কাদেরের স্ত্রী সহোরা খাতুন। তিনি ২ ছেলে ও ১ কন্যা সন্তানের মা। গতকাল শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সহোরা খাতুন (৫২) বাড়ি থেকে বের হয়ে এক পাখিভ্যানে উঠে আলমডাঙ্গা রেললাইনের ফোকট হিসেবে পরিচিত স্থানে নামেন। লাঠি ভর দিয়ে রেল লাইনের ঢাল বেয়ে বেশ কষ্ট কোরে ওপরে উঠেন। অপেক্ষা করেছেন ট্রেনের জন্য। বেলা দুপুর ১২টার দিকে খুলনাগামী মালগাড়ি ছুটে আসতে দেখে রেল লাইনের ভেতরের দিকে মাথা রেখে সটান শুয়ে পড়েন। মালগাড়ির চাকায় মুহূর্তে কোমরের ওপর থেকে তার দেহ দু খণ্ড হয়ে যায়। তার নিষপ্রাণ খণ্ডিত লাশ দেখতে বহু লোক ভিড় জমান।

গ্রামে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, স্বামীর মৃত্যুর পর মধ্যবয়স্ক সহোরা খাতুন ২ ছেলের সংসারে পালাক্রমে বসবাস করতেন। প্রায় ১ বছর আগে তিনি স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছিলেন। স্ট্রোকের কারণে তার ১ হাত ও ১ পা প্যারালাইজড হয়ে পড়ে। ফলে গত ১ বছর ধরে তিনি অনেকটা শারীরিক প্রতিবন্ধী হিসেবে কষ্টকর জীবনযাপন করে আসছিলেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তিনি ছেলে-বউমার সংসারে নিজেকে বোঝা মনে করে মানসিক কষ্ট অনুভব করতেন। এ কষ্ট এতটা তীব্র হয়ে উঠে যা তাকে মানসিক বিকারগ্রস্ত করে তোলে। তিনি প্রায় আত্মহত্যা করার কথা বলতেন বলে অনেকে দাবি করেছেন।

প্রতিবেশিরা জানিয়েছেন, প্রায় ৮ মাস আগে গভীর রাতে একাকি ঘর থেকে বের হয়ে বেশ কিছুটা পথ পেরিয়ে জিকে ক্যানেলের পানিতে ঢুবে আত্মহত্যার অপচেষ্টা করেন। পার্শ্ববর্তী বাড়ির এক যুবক ঘুম থেকে উঠে বাইরে ক্যানেলের ধারে প্রস্রাব করতে গিয়ে এ দৃশ্য দেখে চিৎকার করে সকলকে জাগিয়ে তোলেন। সে সময় কয়েকজন যুবক তাকে ক্যানেলের পানি থেকে তুলে আনেন। এ ঘটনার পরও তিনি আরও ৩ বার আত্মহত্যার অপচেষ্টা করেছিলেন বলে প্রতিবেশিরা তথ্য দেন।

ঘটনাস্থলে পোড়াদহ জিআরপি উপস্থিত না হলে পরে আত্মীয়-স্বজন লাশ উদ্ধার করে বাড়ি নিয়ে যায়। বাদ আছর গ্রামের কবরস্থানে তার লাশ দাফন করা হয়েছে।