দামুড়হুদা প্রাইভেট হাসপাতালে সিজার করা প্রসূতির মৃত্যু

 

স্টাফ রিপোর্টার: দামুড়হুদা প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ গেটে তালা লাগিয়ে সটকে পড়েছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ হাসপাতালের কতিপয় ব্যক্তি সার্জিক্যাল ডাক্তার না হয়েই অহরহ অপারেশন করে থাকেন। এ কারণেই প্রসূতি নাজমা খাতুনের মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে। নাজমা খাতুন দামুড়হুদা উপজেলার দেওলী গ্রামের মিজানুর রহমানের স্ত্রী।

জানা গেছে, তিন সন্তানের জননী নাজমা খাতুন চতুর্থবারের মতো সন্তান সম্ভবা হন। তার প্রসবের সময় হলে দিন দশেক আগে তাকে দামুড়হুদা প্রাইভেট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে তার মেয়ে সন্তান প্রসব হয়। অস্ত্রোপচারের ৪ দিনের মাথায় নাজমাকে হাসপাতাল থেকে রিলিজ দিয়ে বাড়িতে পাঠিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু নাজমা সুস্থ হতে পারেন না। তার প্রচুর রক্তক্ষরণ হতে থাকে। ক্লিনিকে দ্বিতীয় দফায় এসে গত শনিবারে অপারেশন স্থানের সেলাই কাটিয়ে যান নাজমা। বাড়ি ফিরে রক্তক্ষরণের ফলে নেতিয়ে পড়েন নাজমা। ফলে গতকাল রোববার দুপুরে তাকে ফের ওই ক্লিনিকে নেয়া হয়। সন্ধ্যায় নামজার মুমূর্ষু অবস্থা দেখে তড়িঘড়ি করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দেয়া হয় নাজমাকে। সেখানে ভর্তির আধাঘণ্টা পর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে নাজমা মারা যান। হাসপাতালের ডা. রাজিবুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নাজমা রক্তশূন্যতার কারণে মারা গেছেন। আগেভাগেই তার দেহে রক্ত দিলে এমনটি হতো না।’ নাজমার স্বামী মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, ‘দামুড়হুদা ক্লিনিকে বারবার দেখানোর পরও কেন তারা নাজমার শরীরে রক্ত দেয়ার প্রয়োজন মনে করলো না। দিনভর সেখানে ভর্তি ছিলো, কেন তারা রক্ত দিলো না। দুপুর থেকেই যদি নাজমার শরীরে রক্ত দেয়া যেত, নিশ্চয় সে মারা যেত না।’ রোগীর লোকজন জানান, ডা. হাসানুজ্জামান নুপুর নাজমার সিজার করেছিলেন। নিশ্চয় অপারেশনে কোনো ত্রুটি ছিলো। তা না হলে কেন রক্তক্ষরণ বন্ধ হলো না?

এদিকে সন্ধ্যার পর নাজমার মৃত্যুর খবর দামুড়হুদায় ছড়িয়ে পড়লে এলাকার সাধারণ মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা গতরাত ৮টার দিকে ক্ষুব্ধ হয়ে দামুড়হুদা প্রাইভেট হাসপাতাল ঘেরাও করে। অবস্থা বেগতিক দেখে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ হাসপাতালে তালা লাগিয়ে সটকে পড়ে। ক্লিনিকের অন্যতম পরিচালক ডা. জাহাঙ্গীর আলম নিজেই হাসপাতালের অধিকাংশ অপারেশন করে থাকেন। যদিও তার অপারেশনের বৈধতা নেই। এ কারণে এর আগেও ওই ক্লিনিকে প্রসূতির মৃত্যুর ঘটনা ঘটে।