আলমডাঙ্গার কাঁটাভাঙ্গায় যৌতুকের দাবিতে নির্যাতন: গলায় ফাঁস লাগিয়ে স্ত্রীর আত্মহত্যা

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: এবার স্বামীর পরকীয়ার কারণে আত্মহত্যা করেছেন আলমডাঙ্গার কাঁটাভাঙ্গার গৃহবধূ শখের ভানু। যৌতুকের দাবিতে স্বামী শিহাব আলী তাকে দু দফা মারধর করলে গলায় ফাঁস লাগিয়ে তিনি আত্মহত্যা করেন। ব্যবসার জন্য নগদ ২ লাখ টাকা ও আলমডাঙ্গা শহরে জমি কিনে বাড়ি করে দিয়েও জামাইকে খুশি করতে পারেনি হতভাগ্য গৃহবধূ শখের ভানুর পিতা। পুলিশ স্বামী শিহাব আলীকে আটক করেছে।

জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার কাঁটাভাঙ্গা গ্রামের শিহাব আলী পার্শ্ববর্তী শেখপাড়া গ্রামের জমির উদ্দীনের মেয়ে শখের ভানুকে (২৮) প্রায় ৩ বছর আগে বিয়ে করেন। বিয়ের সময় শখের ভানুর পিতা জামাইকে ব্যবসা করার জন্য নগদ ২ লাখ টাকা যৌতুক দেন। বর্তমানে তাদের এক পুত্র সন্তান রয়েছে। বিয়ের পর যৌতুকের দাবিতে প্রায়ই শখের ভানুকে শিহাব আলী শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। শখের ভানুর পিতার দাবি আপন ভাবির সাথে শিহাবের অনৈতিক সম্পর্ক রয়েছে। সে কারণেই যৌতুকসহ নানা অভিযোগ তুলে শিহাব আলী প্রায় তার মেয়েকে মারধর করতো। মেয়ের এমন অশান্তির কথা চিন্তা করে অনেক কষ্ট করে ৫ লাখ টাকা যোগাড় করে জমির উদ্দীন। সেই টাকা দিয়ে আলমডাঙ্গা শহরের রাধিকাগঞ্জ এলাকায় রেলওয়ের জমি লিজ নিয়ে জামাই-মেয়েকে বাড়ি করে দিয়েছেন তিনি। গত ১৫/১৬ দিন আগে শিহাব ও শখের ভানু আলমডাঙ্গার বাড়িতে উঠে। নতুন বাড়িতে উঠেই শিহাব আলী তার ব্যবসার জন্য নতুন করে আবার ৫০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করে। এরই মাঝে গত কয়েকদিন আগে তারা কাঁটাভাঙ্গার বাড়িতে বেড়াতে যায়। যৌতুকের দাবি তুলে গত রোববার রাতে শিহাব শখের ভানুকে প্রচণ্ড মারধর করে। পরদিন সকালে অর্থাৎ গতকাল সোমবার সকালে শিহাব আলী তাকে আরেক দফা পেটায়। এ ঘটনার কয়েক ঘণ্টা পর দুপুরে শখের ভানু ২টি উড়না একসাথে গিটবেঁধে ঘরের আড়ার সাথে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে। বাড়ির অন্যান্যরা দেখে পুলিশকে সংবাদ দেয়। আলমডাঙ্গা থানার এসআই জাহের ঘটনাস্থলে পৌঁছে বিকেলে লাশ উদ্ধার করে থানায় নেন। আজ মঙ্গলবার ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চুয়াডাঙ্গা হাসপাতালমর্গে প্রেরণ করা হবে।

এদিকে এ আত্মহত্যার ঘটনায় শখের ভানুর ছোট ভাই সেলিম রেজা বাদী আলমডাঙ্গা থানায় হত্যা মামলা দায়েরত করেছেন। পুলিশ গতকালই স্বামী শিহাব আলীকে গ্রেফতার করেছে।