ইরাকে দালালে হাতে বন্দি যুবক মনিরুলকে দেশে ফেরাতে চলছে প্রক্রিয়া
দামুড়হুদা প্রতিনিধি: বৈদেশিক কর্মসংস্থান মামলার মূল আসামি দামুড়হুদার জগন্নাথপুরের আদমব্যাপারী সবুরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আব্দুল খালেক সঙ্গীয় ফোর্স নিয়ে অভিযান চালিয়ে তাকে আটকবর এলাকা থেকে গ্রেফতার করেন। গত শুক্রবার আদমব্যাপারী সবুরের ভাই সুরাতকে গ্রেফতার করে পুলিশ। আজ তাদের উভয়কেই আদালতে সোপর্দ করা হতে পারে। এদিকে ইরাকে দালালের হাতে বন্দি অসহায় যুবক মনিরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে গ্রামবাসীর উদ্যোগে শুরু হয়েছে টাকা সংগ্রহের কাজ। আদমব্যাপারী সবুরের বাড়ি বিক্রিরও চলছে প্রক্রিয়া। এলাকাবাসী বলেছে, আদমব্যাপারী সবুরের পরিবার সহযোগিতা করলে সহজেই মনিরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব।
উল্লেখ্য, দামুড়হুদা উপজেলার জগন্নাথপুর গ্রামের মৃত ভিকু শেখের ছেলে দিনমজুর মনিরুল ইসলাম মনিকে মাসে ৪০ হাজার টাকা বেতনের কথা বলে ৪ লাখ টাকার বিনিময়ে তাকে প্রায় মাস দুয়েক আগে ইরাকে নিয়ে যায় জগন্নাথপুরের আদমব্যাপারী সবুর। ইরাকে পৌছে আদমব্যাপারী সবুর ইরাকে অবস্থানরত জসিম নামের এক দালালের কাছে মনিকে জিম্মায় রেখে কৌশলে দেশে ফেরে সবুর। সবুরের কাছে পাওনা টাকা আদায়ের জন্য দালাল জসিম মনিরের ওপর অমানুষিক নির্যাতন শুরু করে। ভেঙে দেয়া হয় মুখের বেশ কয়েকটি দাঁত। প্লাস দিয়ে উপড়ে নেয়া হয় হাতের নখ। নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে মনির বিষয়টি তার ভাইদের জানায়। মনিরের ভাই বুলবুল বিষয়টি সবুরকে জানালে আদমব্যাপারী সবুর এলাকা ত্যাগ করে। পরে গ্রামবাসীর চাপে সবুরের পিতা তেতুল মণ্ডলও বাড়িঘরে তালা লাগিয়ে সপরিবারে সটকে পড়ে। মনিরকে দেশে ফিরিয়ে আনতে তার পরিবারের লোকজন সহায় সম্বল বিক্রি করে মাগুরার ওলিয়ার নামের এক দালালের মাধ্যমে ৭ লাখ টাকা দেয়া হয়। এরপর জসিম মনিরের পরিবারের কাছে আরও ১০ লাখ টাকা দাবি করে এবং তাকে অমানুষিক নির্যাতনের পর ওই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করে পাঠানো হয় তার পরিবারের কাছে। কয়েক দফায় মোবাইলফোনে হত্যার হুমকি দেয় দালাল জসিম। এ ঘটনায় ইরাকে দালালের হাতে বন্দি মনিরের ভাই বুলবুল বাদী হয়ে জগন্নাথপুরের আদমব্যাপারী সবুর, তার ভাই সুরাতসহ মোট ৫ জনকে আসামি করে মামলা করেন। ওই মামলায় আদমব্যাপারী সবুর ও তার ভাই সুরাতকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ইরাকে দালালের হাতে বন্দি যুবক মনিরুলকে দেশে ফিরিয়ে আনতে অধিকাংশ গ্রামবাসী সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানান মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি (তদন্ত) আ. খালেক।