জীবননগর ব্যুরো: চুয়াডাঙ্গার জীবননগরে গ্রাহকের নামে ভুয়া দ্বিতীয় ফাইল খুলে জালিয়াতির মাধ্যমে ঋণের লাথ লাখ টাকা আত্মসাতের দায়ে কৃষি ব্যাংক সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেনকে (৪৮) আটক করা হয়েছে। প্রতারিত গ্রাহক আব্দুল ওয়াহেদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল বুধবার সমন পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার নূরুল হাফিজের কার্যালয়ে হাজিরা দিয়ে অভিযোগের দায় স্বীকার করায় পুলিশ তাকে আটক করে। আটক মনোয়ার চুয়াডাঙ্গা সদরের দৌলাতদিয়াড়ের জহুরুল ইসলাম ওরফে বটার ছেলে। বর্তমানে তিনি আলমডাঙ্গার ঘোলদাড়ি কৃষি ব্যাংক শাখায় ফিল্ড সুপারভাইজার পদে কর্মরত রয়েছেন।
অভিযোগে প্রকাশ, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন জীবননগর কৃষি ব্যাংক শাখায় চলতি বছরের মে মাস পর্যন্ত কর্মরত থাকা অবস্থায় ৪০ জন ঋণ গ্রহীতার নামে ভুয়া দ্বিতীয় ফাইল খোলেন। ঋণ মঞ্জুরের সময় তিনি প্রকৃত ফাইলে ঋণ গ্রহীতার স্বাক্ষর নেয়াকালে কৌশলে দ্বিতীয় আরো একটি ফরমে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। পরবর্তীতে তৎকালীন ব্যবস্থাপক রতন কুমারের সাথে যোগসাজশে তিনি ৪০ জন গ্রাহকের নামে ঋণ বরাদ্দ করে ওই টাকা পকেটস্থ করেন। এর মধ্যে তিনি ৩৪ জন গ্রাহকের নামে ঋণ জালিয়াতি করে ২৮ লাখ ১ হাজার ১১৭ টাকা তুলে নেন বলে জানা গেছে। পরবর্তীতে তিনি এসব গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে জমা দিয়ে ঋণ সমন্বয় করেন বলে মনোয়ার হোসেন স্বীকার করেছেন।
জীবননগর উপজেলার কয়া গ্রামের মৃত দাউদ মন্ডলের ছেলে আব্দুল ওয়াহেদের অভিযোগ, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন তার নামে একটিতে ৯০ হাজার ও ভুয়া ফাইলে ১ লাখ ১০ হাজার মোট ২ লাখ টাকা ঋণ বরাদ্দ করে টাকা তিনি পকেটস্থ করেন। ঋণের টাকা না পাওয়ায় ওয়াহেদ তার ছেলেকে বিদেশে পাঠাতে ব্যর্থ হয়ে মনোয়ারের পেছনে টাকার জন্য ঘুরতে থাকেন। এ অবস্থায় সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেন দুই কিস্তিতে তাকে ১৫ হাজার টাকা প্রদান করেন। পরবর্তীতে টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে তিনি ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন। ইউএনও হাজির হওয়ার জন্য মনোয়ার হোসেনকে সমন দিলে গতকাল তিনি তার অফিসে হাজিরা দিতে আসেন। তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ স্বীকার করায় মনোয়ারকে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মনোয়ার হোসেন ভুয়া ঋণের ফাইল খুলে টাকা তুলে বাড়ি নির্মাণ কাজে ব্যয় করেন বলে স্বীকার করেন। পরবর্তীতে তিনি অধিকাংশ গ্রাহকের টাকা ব্যাংকে সমন্বয় করে দিয়েছেন বলেও জানান।
স্থানীয় কৃষি ব্যাংক শাখার ব্যবস্থাপক মনির উদ্দিন জানান, ফিল্ড সুপারভাইজার মনোয়ার হোসেনের দুর্নীতির তদন্ত করতে একটি তদন্ত টিম ঢাকা থেকে ব্যাংকে এসেছে। তারা তদন্ত কাজ করছেন বলে জানান তিনি।