মাথাভাঙ্গা মনিটর: অলিম্পিকের মতো প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করা, এমন ভাগ্য কয়জনের হয়! নামের পাশে অলিম্পিয়ান শব্দটি যুক্ত করার মতো ভাগ্যবানদের মাথায় তুলে রাখে অধিকাংশ দেশ। কিন্তু মোহাম্মদ আশিকের সেই সৌভাগ্য হয়নি। পাকিস্তানকে দুটি অলিম্পিকে প্রতিনিধিত্ব করা এ অ্যাথলেটকে বেঁচে থাকার জন্য এখন চালাতে হয় অটোরিকশা। ১৯৬০ ও ৬৪ সালে অলিম্পিকের ট্র্যাকে সাইকেল চালিয়েছেন। সেই সাইক্লিস্ট এখন ৮১ বছর বয়সে জীবিকার অন্বেষণে লাহোরের রাস্তায় রাস্তায় অটোরিকশা চালাচ্ছেন! অলিম্পিকে অংশ নেয়া নিয়ে তার গর্বের কমতি ছিলো না, ‘আমি কী খুশি ছিলাম, অলিম্পিকে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করতে পেরে নিজেকে ভাগ্যবান মনে করেছিলাম।’ কিন্তু সেই গর্বের বদলে এখন আছে শুধুই ক্ষোভ, ‘তারা বোধ হয় আমাকে মৃতই ধরে নিয়েছে। আমার মনে আছে, পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির সাথে হাত মিলিয়েছি আমি। তারা সবাই কীভাবে আমাকে ভুলে গেল বিশ্বাসই হয় না।’ প্রথম দিকে অটোরিকশায় নিজের জেতা সব মেডেল ঝুলিয়ে রাখতেন মোহাম্মদ আশিক। কিন্তু এখন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক রাষ্ট্রপতি ক্যালভিন কুলিজের বিখ্যাত উক্তি টাঙিয়ে রেখেছেন ‘যে দেশ ও জাতি তার নায়কের কথা ভুলে যায়, তারা উন্নতি করতে পারে না’। সবাইকে সতর্ক করে দেন, যেন কেউ খেলোয়াড় না হয়। তার দাবি, এতে জীবনে শুধু দুর্ভোগই পোয়াতে হবে!
সারাদিন রিকশা চালিয়ে সন্ধ্যায় ফেরেন ৪৫০ বর্গফুটের এক বাসায়। সে বাসার দেনা এখন ১০ লাখ রুপি। দিনে ৪০০ রুপি আয় করা আশিকের পক্ষে জীবনের বাকি দিনগুলোতে কখনো সেই ঋণ শোধ করা সম্ভব হবে না। স্ত্রী বহুদিন আগেই চলে গেছেন না ফেরার দেশে। চার সন্তান আছে, কিন্তু তাদের মুখাপেক্ষী হতে চান না তিনি।
অভিমানী আশিক এখন অপেক্ষার প্রহর গুনছেন না, রাষ্ট্রের স্বীকৃতির নয়, মৃত্যুর।