বঁটির কোপে নিজের পেট কেটে অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছে শামীম

দীর্ঘ সময় ধরে অপারেশনে মৃত্যুঝুঁকি কিছুটা কমলেও কাটেনি শঙ্কা

স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা হিজলগাড়ির কসমেটিক দোকানি শরিফুজ্জামান শামীম ধারালো অস্ত্র বঁটি দিয়ে নিজেই নিজের পেটে কোপ মেরে গুরুতর জখম হয়েছে। তাকে গতকাল সোমবার সকালে আশঙ্কাজনক অবস্থায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে নেয়া হয়। দীর্ঘ সময় ধরে অস্ত্রোপচারে মৃত্যুঝুঁকি কিছুটা কমলেও তার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কামুক্ত নয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এ মন্তব্য করে বলেছেন, রোগী শামীমের মায়ের আহাজারি আর আকুতি মিনতিতে সাড়া দিয়ে খানেকটা ঝুঁকি নিয়েই দীর্ঘ সময় ধরে চুয়াডাঙ্গাতে অপারেশন করা হয়। রোগীর যে অবস্থা ছিলো তা রেফার করার কথাই ভাবছিলেন চিকিৎসক।

জানা গেছে, চুয়াডাঙ্গা জেলা সদরের শলুয়া বলদে গ্রামের ইউনুস আলীর ছেলে শরিফুজ্জামান শামীম (২৫) হিজলগাড়ি বাজারের কসমেটিক দোকানি। তার স্ত্রী ছোটশলুয়া গ্রামের মেয়ে শিরিনা অন্তঃসত্ত্বা। শিরিনা রয়েছেন তার পিতার বাড়ি। অপরদিকে শামীম তার নিজ বাড়িতে গতকাল সোমবার সকাল ৯টার দিকে রক্তাক্ত জখম হয়। তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নেয়া হয় হিজলগাড়ির একটি ক্লিনিকে। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে দ্রুত নেয়া হয় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে। প্রতিবেশীদের বরাত দিয়ে আমাদের বেগমপুর প্রতিনিধি জানান, শামীম নিজেই নিজের পেটে বঁটি দিয়ে কোপ মেরে গুরুতর জখম হয়েছে। তার পেটের নাড়িও কেটে গেছে। কেন নিজের পেটে নিজেই কোপ মেরেছে তা স্পষ্ট করে জানা যায়নি। তবে স্ত্রীকে নিজ বাড়িতে ফেরাতে না পেরে অথবা নেশাগ্রস্ততার কারণে এমন ঘটনা ঘটিয়ে থাকতে পারে বলে কেউ কেউ মন্তব্য করেছে। অবশ্য নিজের পেটে নিজেই বঁটি দিয়ে কোপ মারার বিষয়টি সঠিক নয় বলে দাবি করে তার মা ফরিদা খাতুন বলেছেন, কুমড়ো কুটে বঁটি খাড়া করে রেখে কাজ করছিলাম। এ সময় ভাত খেয়ে নামতে গেলে বঁটির ওপর পড়ে কেটে গেছে। শরিফুজ্জামান শামীম বলেছে, আমি যুবলীগ করি। কে কি বলছে তা শুনে লাভ নেই।

বঁটিতে পেটের নাড়ি কেটে গেছে। অবস্থা আশঙ্কাজনক দেখে তাকে রেফার করার বিষয়টি ভাবতে থাকেন কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা। রোগীর মায়ের আহাজারি আর আকুতি-মিনতিতে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালেই অপারেশন করেন সার্জারি কনসালটেন্ট ডা. নূরুদ্দীন রুমি। তিনি বলেছেন, পেটের গুরুত্বপূর্ণ নাড়ি এমনভাবে কেটে বিচ্ছিন্ন হয়েছে যে দীর্ঘ সময় ধরে অস্ত্রোপচার করতে হলো। মলত্যাগের নাড়ি বিকল্প রুটে ঘুরিয়ে দিতে হয়েছে। চিকিৎসা চলছে।

বঁটিতে পড়ে পেট কেটেছে? নাকি বটির কোপে গুরুতর জখম? এসব প্রশ্নের জবাবে চিকিৎসক বলেছেন, বঁটির ওপর পড়লে ক্ষতের ধরন অন্যরকম হতো। শামীমের পেটে বঁটির কোপ লেগেছে। সে নিজে মেরেছে নাকি অন্য কেউ মেরেছে তা নিশ্চিত হতে তদন্ত দরকার।

Leave a comment