ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আশরাফুজ্জামানের ভাই আনোয়ারুজ্জামান চুয়াডাঙ্গায় গ্রেফতার

 

স্টাফ রিপোর্টার: বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে ফাঁসির দণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আশরাফুজ্জামান খানের ছোট ভাই আনোয়ারুজ্জামান খানকে গ্রেফতার করেছে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ। গতকাল শুক্রবার ভোররাতে দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জামায়াত নেতা মাগুরা জেলার একটি সিআর মামলার পলাতক আসামি বলে পুলিশ জানায়।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বেলায়েত হোসেন মাথাভাঙ্গাকে জানান, গ্রেফতারকৃত আনোয়ারুজ্জামান খান জামায়াতের নীতিনির্ধারকের একজন। তার বিরুদ্ধে নাশকতাসহ বিভিন্ন অভিযোগ রয়েছে। দামুড়হুদা থানার ওসি আবু জিহাদ বলেন, গ্রেফতারকৃত আনোয়ারুজ্জামান খান (6০) গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার বেজরাভাতরা গ্রামের মৃত আজাহার আলী খানের ছেলে। তাকে দর্শনা হাসপাতালপাড়ার বাসাবাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি জানান, তারা এক সময় দর্শনায় চাকরি করতো। আনোয়ারুজ্জামান খান দর্শনা পৌর জামায়াতের সাবেক আমির বলেও জানান ওসি। আদালতসূত্রে জানা গেছে, আনোয়ারুজ্জামান খান মাগুরার শ্রীপুর আমলি আদালতের একটি প্রতারণা মামলার ওয়ারেন্টভুক্ত আসামি। তিনি পলাতক ছিলেন।

জামায়াত কর্মী আনোয়ারুজ্জামান খান মাথাভাঙ্গার দামুড়হুদা প্রতিনিধিকে জানান, তিনি প্রায় ৪০ বছর ধরে দর্শনায় বসবাস করছেন এবং কেরুজ চিনিকলে হিসাব শাখায় চাকরি করতেন। ৬ মাস হচ্ছে অবসরে গেছেন। বড় মেয়ে ফারজানা খান রূপা বছর দেড়েক আগে সৃজনী নামক একটি এনজিওতে মাগুরা জেলার শ্রীপুর উপজেলায় চাকরি নেন। কিছুদিন পর ওই এনজিও থেকে রূপার বিরুদ্ধে ৩ লাখ ১৩ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে এনজিওটি। পরে তারা আদালতের শরণাপন্ন হয়। যেহেতু আনোয়ারুজ্জামান খান মেয়ে রূপার গ্যারান্টার ছিলেন। সেই কারণে রুপাসহ তাকেও আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়। জামায়াত কর্মী কি না, এ বিষয়ে তিনি বলেন, আমি আগে জামায়াত করতাম এটা ঠিক। তবে প্রায় ১০-১১ বছর হচ্ছে আমি আর দল করি না। শহীদ বুদ্দিজীবী হত্যার বিষয়ে তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে বুদ্ধিজীবী হত্যা ঘটনার সাথে তার মেজ ভাই আশরাফুজ্জামান খান জড়িত ছিলেন এটা আমরা জানতাম না। ১৯৭২ সালে বঙ্গবন্ধু দেশে ফেরার পর একটি পত্রিকায় বুদ্ধিজীবী হত্যাকারীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। ওই তালিকায় আমার ভাইয়ের নাম ছিলো। পত্রিকায় নাম প্রকাশের পরপরই মেজ ভাই আমেরিকা চলে যান। সেই থেকে প্রায় ৪৪ বছর তিনি সেখানেই আছেন।

প্রসঙ্গত, বুদ্ধিজীবী হত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে ২০১৩ সালের ৩ নভেম্বর আশরাজ্জামান খানকে ফাঁসির আদেশ দেন আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল।