২ জনের যাবজ্জীবন ও ২ জন খালাস : গাজীপুর বারে বোমা হামলা মামলার আপিলের রায়
স্টাফ রিপোর্টার: গাজীপুর আইনজীবী সমিতি ভবনে বোমা হামলা মামলায় ছয় জঙ্গির ফাঁসির রায় বহাল রেখেছেন হাইকোর্ট। এরা হলেন, এনায়েত উল্লাহ ওরফে ওয়ালিদ ওরফে জুয়েল, আরিফুর রহমান আরিফ ওরফে আকাশ ওরফে হাসিব, সাইদুর মুন্সী ওরফে শহীদুল মুন্সী ওরফে ইমন ওরফে পলাশ, আবদুল্লাহ আল সোহাইন ওরফে যায়িদ ওরফে আকাশ, নিজাম উদ্দিন রেজা ওরফে রনি ওরফে কচি এবং তৈয়বুর রহমান ওরফে হাসান। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত সকলেই নিষিদ্ধ সংগঠন জামায়াতুল মুজাহেদিন বাংলাদেশ (জেএমবি) এর সদস্য। এছাড়া মৃত্যুদণ্ডের পরিবর্তে মসিদুল ইসলাম মাসুদ ওরফে ভুট্টো ও আদনান সামী ওরফে আম্মার ওরফে জাহাঙ্গীরকে যাবজ্জীবন সাজা দেওয়া হয়েছে। বেকসুর খালাস পেয়েছেন মো. আশরাফুল ইসলাম ওরফে আরসাদ ওরফে আব্বাস খান ও মো. সফিউল্লাহ ওরফে তারেক ওরফে আবুল কালাম।
বিচারিক আদালত এদেরকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছিলেন। ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের শুনানি নিয়ে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি জেবিএম হাসানের ডিভিশন বেঞ্চ গতকাল বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। তবে খালাসের রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করবে বলে জানিয়েছেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির। দণ্ডপ্রাপ্তরা সকলেই কারাগারে রয়েছেন।
২০০৫ সালের ২৯ নভেম্বর গাজীপুর জেলা আইনজীবী সমিতি ভবনের দুই নম্বর হলরুমে বোমা হামলা চালায় জেএমবির সদস্যরা। ঘটনাস্থলেই মারা যায় জেএমবির আত্মঘাতী স্কোয়াডের সদস্য আসাদ ওরফে জিয়া। গুরুতর আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন অবস্থায় মারা যান গাজীপুর বারের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আমজাদ হোসেন, অ্যাডভোকেট নুরুল হুদা, আনোয়ারুল আজম ও গোলাম ফারুক এবং চার বিচারপ্রার্থী জনগণ। বোমা হামলার ঘটনার দিনই বাদী হয়ে জয়দেবপুর থানায় মামলা করে পুলিশ।
মামলার এজাহারে জেএমবির শীর্ষ নেতা শায়খ আব্দুর রহমান, আতাউর রহমান সানীসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করা হয়। পরে অন্য একটি মামলায় তাদের ফাঁসি কার্যকর করে সরকার। এরপর তাদের বাদ দিয়ে ২০০৭ সালের ৪ জুলাই ১০ জনের নামে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। রাষ্ট্রপক্ষের ৭০ জন সাক্ষীর জবানবন্দি গ্রহণ করে ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-৪। সাক্ষীদের জেরা ও যুক্তিতর্ক শেষে ২০১৩ সালের ২০ জুন বিচারিক আদালত ওই ১০ জঙ্গিকে মৃত্যুদণ্ড দেয়।
মৃত্যুদণ্ডের এই রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। পাশাপাশি কারাগারে থেকে ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্তরা রায়ের বিরুদ্ধে জেল আপিল দায়ের করেন। গত মে মাসে মামলাটি শুনানির জন্য সংশ্লিষ্ট ডেথ রেফারেন্স শাখা থেকে হাইকোর্টে পাঠান প্রধান বিচারপতি। গত ১৩ জুলাই এই ডেথ রেফারেন্স ও আপিলের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ একেএম মনিরুজ্জামান কবির ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল শহীদুল ইসলাম খান এবং আসামিপক্ষে আইনজীবী দেলোয়ার হোসেন, আফজাল এইচ খান ও মো. হেলাল উদ্দিন মোল্লা শুনানি করেন। তিন কার্যদিবস শুনানি শেষে ২৮ জুলাই রায়ের জন্য দিন ধার্য করে দেন হাইকোর্ট।