স্টাফ রিপোর্টার: বাফার গোডাউনে পাঠানো ৩শ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারে বড় ধরণের অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। প্রতিটি ইউরিয়া সারের বস্তায় ৩ থেকে ৪ কেজি করে সার কম থাকায় গোডাউন কর্তৃপক্ষ রোববার সন্ধ্যা পর্যন্ত তা গ্রহণ করেনি। ১৬ ট্রাক সার নিয়ে গোডাউন এলাকায় অপেক্ষা করছে। এসব সার কালীগঞ্জের বাফা গোডাউন থেকে ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় ডিলারদের মাধ্যমে সবরাহ করার কথা।
প্রতি বস্তায় সার কম দেয়ার কারণে সার ডিলারদের মাঝে ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। একাধিক নিউজ প্যাটেল এ খবর জানিয়ে বলেছে, ঝিনাইদহের বিসিআইসির সার ডিলারদের অভিযোগ, চট্টগ্রামের আগ্রাবাদের নবাব অ্যান্ড কোম্পানি এ সার সরবরাহ করেছে। গতকাল রোববার গোডাউনে গিয়ে দেখা গেছে, সার বোঝাই ৫০ ট্রাক খালাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। এর মধ্যে ১৬টি ট্রাক নবাব অ্যান্ড কোম্পানির বলে বাফার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। ঝিনাইদহে পাঠানো সরগুলো দীর্ঘদিন বন্দরের ঘাটে পড়ে থাকায় সারের ওজন কমে যাওয়ার পাশাপাশি গুণগতমান নষ্ট হয়ে গেছে।
বাংলাদেশ ফারটিলাইজার অ্যাসোসিয়েশন ঝিনাইদহ শাখার সভাপতি আলহাজ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান, আমরা গোডাউনে গিয়ে ইনচার্জকে এ সার রিসিভ না করার জন্য বলে এসেছি। এই গোডাউন থেকে ডিলারদের মাঝে নিম্নমানের ও মেয়াদোত্তীর্ণ ইউরিয়া সার সরবরাহ করা হয় বলেও ডিলাররা অভিযোগ করেন। কালীগঞ্জ বাফার সার গোডাউনের প্রধান হিসাব রক্ষক জামির হোসেন জানান, আমরা জেনেছি যে প্রতি বস্তায় সার কম রয়েছে। ডিলারদের অভিযোগের ভিত্তিতে প্রতি ট্রাক থেকে আমরা কয়েকটি বস্তা নামিয়ে মেপে দেখেছি। এতে প্রতি বস্তায় ৩ থেকে ৪ কেজি সার কম রয়েছে। ডিলারদের অভিযোগের পরই আমারা অভিযুক্ত এই প্রতিষ্ঠানের সার লোড-আনলোড বন্ধ রখেছি।
বাফার সার গোডাউনের ডিপো ইনচার্জ মাসুদ রানা জানান, আমি ডিলারদের অভিযোগ পেয়েছি। ইতোমধ্যে ট্রাক ভর্তি সার আমরা আটকে দিয়েছি। সার প্রেরক প্রতিষ্ঠান নবাব অ্যান্ড কোম্পানি জানিয়েছে, তারা প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি সার বাফাকে বুঝিয়ে দেবেন। এ বিষয়ে নবাব অ্যান্ড কোম্পানির অপারেশন অফিসার ওসমান আলী বস্তায় সার কম থাকার বিষয়টি টেলিফোনে স্বীকার করে জানান, দীর্ঘদিন ধরে সারগুলো ঘাটে পড়েছিলো। যার কারণে কিছু বস্তার সার আবহাওয়াগত কারণে কমে যেতে পারে। তবে আমরা অভিযোগ পাওয়ার পর ঝিনাইদহের বাফার সার গোডাউন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, প্রতিবস্তায় ৫০ কেজি করে সার মেপে বুঝিয়ে দেবেন। তবে সারের গুণগত মান ঠিক আছে বলে তিনি দাবি করেন।
জানা গেছে, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা ও মেহেরপুর জেলায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ বাফার গোডাউন থেকে সার সরবরাহ করা হয়। বিসিআইসির ২১৫ জন তালিকাভুক্ত ডিলার এ সার নিয়ে থাকেন। ডিলারদের মাঝে অর্ধেক নতুন এবং অর্ধেক পুরোনো সার বিতরণ করার পরামর্শ দিয়েছে মন্ত্রণালয়। কালীগঞ্জ বাফার গোডাউনের সার লোড-আনলোডের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নবাব এন্টারপ্রাইজের শ্রমিক লিয়াতক আলী বলেন, কয়েক বছর ধরেই গোডাউনে নতুন সার ঢোকানো হয় না। সরাসরি বিভিন্ন ডিলারের কাছে পৌঁছে দেয়া হয়। এখনো গুদামে পুরোনো জমাটবাঁধা সার পড়ে আছে।