কালীগঞ্জ প্রতিনিধি: ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির কারণে শিক্ষার্থিদের ভবিষ্যত অনিশ্চিত হতে চলেছে। চলতি বছরের দ্বিতীয় সাময়িক পরিক্ষা গত ১১ জুলাই থেকে শুরু হয়েছে। সমিতির প্রতিটি বিষয়ের প্রশ্নে ভুলে ভরা থাকায় শিক্ষাথীদেরকে পরীক্ষা দিতে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এতে করে শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা হতাশ হয়ে পড়েছে। ৯ম শ্রেণির পদার্থ বিষয় পরীক্ষার ৩ দিন আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে শিক্ষার্থীরা হাতে। প্রশ্ন পরিবর্তন না করেই ওই প্রশ্ন দিয়েই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে।
ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলায় ৩৫ মাধ্যমিক বিদ্যালয় নিয়ে রয়েছে শিক্ষক সমিতি। চলতি দ্বিতীয় সাময়িক পরীক্ষায় সিলেবাস বহির্ভূত, প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা চালানো হচ্ছে। ২৩ জুলাই ছিলো ৯ম শ্রেণির উচ্চতর গণিত পরীক্ষা। অর্থব্য শিক্ষক সমিতি ৯ম শ্রেণির উচ্চতর গণিত প্রশ্ন করা হয়েছে এক পাতায় ও অপরপাতায় করা হয়েছে পদার্থ বিষয়ের প্রশ্ন। পদার্থ বিষয়ের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে ২৬ জুলাই। যা নির্দিষ্ট দিনের আগেই শিক্ষার্থীরা পদার্থ বিষয়ের প্রশ্ন জেনে গেছে। বিশেষ করে ৬ষ্ঠ শ্রেণি থেকে ১০ম শ্রেণি পর্যন্ত সকল বিষয়ের প্রতিটি প্রশ্নেই রয়েছে ব্যাপক ভুল। আর এ ভুলেভরা প্রশ্ন দিয়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দিচ্ছে।
অভিযোগ উঠেছে, কালীগঞ্জের শিক্ষক সমিতির সভাপতি জালাল উদ্দিন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদের এ দুজন সমিতি টি ব্যক্তিগত ও নিজস্ব বলে মনে করছেন। ভুলেভরা প্রশ্নদিয়ে ৩৫ স্কুলের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকরা হাজারো অভিযোগ দিলেও তারা কোনো কর্ণপাত করছেন না। এমন কি একই প্রশ্নে দু দিনের দু বিষয়ের প্রশ্ন ছাপানো হয়েছে। এত বড় ভুল হলেও তদের এ বিষয় নিয়ে কোনো মাথাব্যাথা নেই। ৯ম শ্রেণির প্রশ্ন শিক্ষার্থীরা জেনে গেলেও সমিতির সভাপতি ও সম্পাদক জানিয়ে দিয়েছে পদার্থ বিষয়ের প্রশ্ন ফটোস্টাট করে পরীক্ষা নিতে।
অভিযোগে আরও জানাযায়, ৯ম ও ১০ম শ্রেণির পদার্থ, রসায়ন, গণিত বিষয়ের প্রশ্ন মডারেটর করা হয়, তপন কুমার নামে এক শিক্ষক দিয়ে। পরে সে প্রশ্ন গুলো বাদ দিয়ে হাসানহাটি স্কুলের এক শিক্ষকের মনগড়া, নিম্নমানের প্রশ্ন দিয়ে পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে। কালীগঞ্জ শিক্ষক সমিতি বই বানিজ্য করে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করে থাকে প্রতি বছর। এসব টাকা সমিতির তহবিলে নাম মাত্র জমা দিয়ে কতিপয় শিক্ষক ভাগাভাগি করে নেন। শিক্ষা বিভাগের নিয়ম অনুযায়ী বিদ্যালয়ের নিজস্ব প্রশ্ন তৈরি করে পরীক্ষা নিতে হবে। কিন্তু কতিপয় শিক্ষক তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিলের জন্য সমিতিকে সামনে রেখে অর্থ বাণিজ্য করে চলেছে। শিক্ষা বিভাগের নিয়মকে উপেক্ষা করে বিদ্যালয় গুলোয় নিজস্ব প্রশ্ন তৈরি না করে তারা সমিতির প্রশ্নে পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এটা শিক্ষা বিভাগের সম্পূর্ণ বহির্ভূত। বিশেষ করে ৯ম শ্রেণির পদার্থ বিষয়ের প্রশ্ন শিক্ষার্থীরা ৩ দিন আগেই প্রশ্ন হাতে পেলেও তারা প্রশ্ন পরিবর্তন না করে ওই প্রশ্ন দিয়েই পরীক্ষা নিচ্ছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল কাদেরে সাথে উপরোক্ত বিষয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি ভুলেভরা প্রশ্নের বিষয়টি স্বীকার করেন ও পত্রিকায় না লেখার জন্য অনুরোধ করেন। এসব মারাত্মক ভুল কিভাবে হয়েছে তা তিনি জানেন না বলে জানান।
অপরদিকে কালীগঞ্জ উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের সাথে আলাপ করলে তিনি বলেন, এসব বিষয়ে আমি জানি না কেউ অভিযোগ দিলে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কিন্তু এসব বিষয় দেখার জন্য সরকার শিক্ষা অফিসে নির্দিষ্ট কর্মকর্তা নিয়োগ দিলেও তারা কোনো তদারকি করেন না।