ক্রিস ওকসের বাউন্সারটি এড়াতেই চেয়েছিলেন, কিন্তু বলটি মিসবাহ-উল-হকের গ্লাভস ছুঁয়ে লাগল হেলমেটের গ্রিলে। সে ধাক্কায় হেলমেটের পেছনের দিকে থাকা ঘাড়ের সুরক্ষার জন্য রাখা বাড়তি অংশটি ছিটকে পড়ল। তবে ছিটকে পড়ার আগে ধাক্কা সয়ে ওই অংশটুকুই বিপদ থেকে বাঁচাল মিসবাহকে। কাল মিসবাহও ও রকম রক্ষাকবচ হয়ে ওঠার চেষ্টা করেছিলেন পাকিস্তানের জন্য।
দল অলআউট হয়েছে মাত্র ১৯৮ রানে। কিন্তু এর মধ্যেই লড়াই চালিয়ে গেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক। পটভূমিটা পরিষ্কার করে নেওয়া যাক। ইংলিশ পরিবেশ, মেঘলা আকাশ। খানিক আগেই এক পশলা বৃষ্টি হয়ে গেছে। হঠাৎই যেন প্রাণ ফিরে পেয়েছে ওল্ড ট্রাফোর্ডের উইকেট। অনাকাঙ্ক্ষিত বৃষ্টিবিরতির আগেই ফিরেছেন সঙ্গী শান মাসুদ। বৃষ্টির পরই ফিরলেন আসাদ শফিকও; ৬ উইকেটে ৭৬ হয়ে গেছে পাকিস্তান।
ইংল্যান্ড কত রানের লিড পাচ্ছে, ফলোঅনে সর্বোচ্চ জুটির রেকর্ড কত? শুরু হয়ে গেছে আলোচনা। ইডেনে ভিভিএস লক্ষ্মণের সেই মহাকাব্যিক ইনিংসটাও উঠে আসছে প্রসঙ্গক্রমে। সরফরাজ খানের এলোপাতাড়ি কিছু শটে এক শ পেরোয় পাকিস্তান। কিন্তু তারপরই আউট সরফরাজ। অন্য প্রান্তে তখনো ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে দাঁড়িয়ে মিসবাহ।
মধ্যাহ্নবিরতির ঠিক আগের ওভারে ওকসের দ্বিতীয় বলের ওই ধাক্কা সামলে চতুর্থ বলে প্রান্ত বদল করলেন। পরের বলেই আবারও সঙ্গীহারা পাকিস্তান অধিনায়ক, ৮ উইকেট হারিয়ে ১১৯ রান সফরকারীদের।
এরপরই ইনিংসের সেরা সময়টি কাটাল পাকিস্তান। দাঁতে দাঁত চেপে কীভাবে লড়তে হয়, সেটিই দেখালেন মিসবাহ, তাঁকে যোগ্য সংগত দিলেন ওয়াহাব রিয়াজ। পেস বোলিংয়ের উপযুক্ত পরিবেশ পেয়ে বল হাতে আগুন ঝরালেন ওকস, বেন স্টোকসেরা। শর্ট পিচ ও বাউন্সার ছাড়লেন ইচ্ছেমতো। কিন্তু তাতে দমে যাননি তাঁরা কেউই। আক্ষরিক অর্থেই বলের সামনে শরীর পেতে দিয়ে সময়টা পার করেছেন। অথচ মিসবাহর এমন সাহসী ইনিংসটি শেষ হলো মঈন আলীর নিরীহ দর্শন স্পিনে।
কে জানে মিসবাহর এমন ইনিংসই হয়তো কুককে সাহসী হতে দেয়নি। ৩৯১ রানে এগিয়ে পাকিস্তানকে ফলোঅনে ফেলার সুযোগ পেয়েও ব্যাটিংয়ে নেমেছে ইংল্যান্ড। ১ উইকেটে ৯৮ রান করে ৪৮৯ রানের লিডও পেয়ে গেছে তারা।
ওল্ড ট্রাফোর্ড টেস্ট : একাই লড়লেন মিসবাহ
