কুষ্টিয়ায় অস্ত্র গোলাবারুদসহ জঙ্গি ও চরমপন্থি নেতা আটক

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ায় বিপুল পরিমাণ অস্ত্র গোলাবারুদসহ আবু দাউদ হাসান পাপ্পু  (২০) নামের এক জঙ্গি ও চরমপন্থি নেতা ফিরোজ প্রামানিককে (৪০) আটক করেছে ৱ্যাব। এ সময় ৱ্যাব আটকৃতদের কাছ থেকে ৩ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ ১টি বিদেশি পিস্তল, ১টি ওয়ান সুটার গান, ১টি ৩০৩ কাটা রাইফেল এবং ২২ রাউন্ড ৩০৩ কাটা রাইফেলের গুলি উদ্ধার করে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ৱ্যাবের প্রেস বিফ্রিঙে এ তথ্য জানানো হয়।

ৱ্যাব জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারে সন্দেহভাজন জঙ্গি সদস্যরা কুষ্টিয়ায় বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকান্ডের জন্য বিভিন্ন চরমপন্থি দলের সদস্যদের নিকট থেকে অবৈধ অস্ত্র গোলাবারুদ সংগ্রহ করছে। এমন সংবাদের ভিত্তিতে ৱ্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়ার একাধিক আভিযানিক দল কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। এক পর্যায়ে ভেড়ামারা বকচত্বরে অভিযান চালিয়ে দৌলতপুর উপজেলার কাজীপুর দক্ষিণপাড়া গ্রামের সরোয়ার উদ্দিন মণ্ডলের ছেলে আবু দাউদ হাসান পাপ্পুকে আটক করে। এ সময় তার কাছ থেকে ৩ রাউন্ড গুলি ভর্তি ম্যাগাজিনসহ ১টি বিদেশী পিস্তল ও ১টি ওয়ান সুটার গান উদ্ধার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত বলে জানান এবং দেশে বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য অস্ত্রশস্ত্র যোগাড় করছিলেন বলে ৱ্যাবকে তিনি জানান। এ সময় আটককৃত পাপ্পু জানায়, সে চরমপন্থি দলের আঞ্চলিক নেতা ফিরোজের কাছ থেকে অস্ত্রগুলো ক্রয় করেছিলেন। এ সময় ৱ্যাব অভিযান চালিয়ে মিরপুর উপজেলার কাজীপুর মধ্যপাড়া গ্রামের চরমপন্থি দলের আঞ্চলিক নেতা হাইজ উদ্দিন প্রামানিকের ছেলে ফিরোজকে আটক করে। পরে তার দেয়া তথ্য অনুযায়ী বাড়ি তল্লাশি করে ১টি ৩০৩ কাটা রাইফেল এবং ২২ রাউন্ড ৩০৩ কাটা রাইফেলের গুলি উদ্ধার করা হয়। ফিরোজ নিজেকে চরমপন্থি দল ‘আনুবাহিনীর’ একজন প্রাক্তন সদস্য এবং বর্তমান চরমপন্থি দল ‘ফিরোজ বাহিনীর’ প্রধান বলে জানান।

ৱ্যাব জানায়, সন্দেহভাজন জঙ্গি আবু দাউদ ৮ম শ্রেণি পযর্ন্ত সাধারণ লাইনে লেখাপড়া শেষ করে ২০১২ সাল থেকে মাদরাসা লাইনে (মাওলানা) লেখাপড়া শুরু করেন। বিগত ০৪ বছর তিনি কুষ্টিয়া জেলার বিভিন্ন কাওমী মাদরাসা থেকে মাওলানা লাইনে লেখাপড়া করে আসছিলেন। পরবর্তীতে তিনি জঙ্গি ভাবধারায় আদর্শিত হয়ে বড় ধরনের নাশকতামূলক কর্মকাণ্ডের পরিকল্পনা করেন। এ জন্য তিনি এলাকার বিভিন্ন চরমপন্থি দলের সদস্যদের নিকট থেকে অস্ত্র গোলাবারুদ সংগ্রহ শুরু করেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তিনি জঙ্গি তৎপরতার সাথে জড়িত বলে জানান।

অপরদিকে ধৃত ফিরোজ একজন দুর্ধর্ষ চরমপন্থি এবং ডাকাত দলের সদস্য হিসেবে এলাকায় ব্যপক ত্রাস সৃষ্টি করে আসছিলেন বলে জানা যায়। তিনি কুষ্টিয়া জেলার চরমপন্থি দল ‘আনুবাহিনীর’ একজন সক্রিয় সদস্য ছিলেন। পরবর্তীতে তিনি নিজ বাহিনী হিসেবে ‘ফিরোজ বাহিনী’ গড়েন। এ বাহিনী এলাকায় বিভিন্ন ধরনের চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, খুন, অপহরণ, চাঁদাবাজি ও মাদক ব্যবসা ইত্যাদি করে আসছিল বলে জানা যায়। বিভিন্ন থানায় খোঁজ নিয়ে তার বিরুদ্ধে হত্যা, অপহরণ, খুন, অস্ত্র এবং মাদকদ্রব্য আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়।

Leave a comment