বিক্ষুব্ধ আত্মীয়স্বজন কর্তৃক ক্লিনিক ঘেরাও : পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ফাঁড়ি পুলিশ
আলমডাঙ্গা ব্যুরো: আলমডাঙ্গার হাটবোয়ালিয়ার অনুমোদন বিহীন বেসরকারি হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিকে ভুল চিকিৎসায় ৭ বছরের শিশু মরিয়মের জীবন সঙ্কটাপন্ন হলে তোপের মুখে পড়েন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। গত বুধবার রাতে রোগীর বিক্ষুব্ধ আত্মীয়-স্বজন চড়াও হয়ে ঘেরাও করে রাখে অবৈধভাবে পরিচালিত ওই হাসপাতাল। পরে ফাঁড়ি পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
প্রত্যক্ষদর্শী ও এলাকাসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা উপজেলার বামানগর গ্রামের আব্দুল হামিদের ৭ বছরের শিশুকন্যা মরিয়ম হঠাত অসুস্থ্য হলে তাকে ভর্তি করা হয় হাটবোয়ালিয়া বেসরকারি হাসপাতাল অ্যান্ড ক্লিনিকে। সনোগ্রাম করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানায়, মরিয়মের অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন প্রয়োজন। গত ১৯ জুলাই হারদী হাসপাতালের ডাক্তার বিডি দাস ওই হাসপাতালে গিয়ে মরিয়মের অ্যাপেন্ডিসাইটিস অপারেশন করেন। পরদিন ২০ জুলাই বিকেল থেকে মরিয়মের শারিরীক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। সন্ধ্যায় শিশু মরিয়মের জীবন সঙ্কটাপন্ন হয়ে উঠে। রাত ৯টার দিকে রোগীর বিক্ষুব্ধ আত্মীয়-স্বজন চড়াও হয় ক্লিনিকে। তারা ঘিরে রাখে অবৈধভাবে পরিচালিত ক্লিনিকটি। সংবাদ পেয়ে হাটবোয়ালিয়া ফাঁড়ি পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাতে আলমডাঙ্গা থেকে ডাক্তার নিয়ে গিয়ে সারা রাত চিকিৎসা করার পর শিশুটি ধীরে ধীরে সুস্থ হয়ে উঠে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে শিশুটির অবস্থার অবণতির কারণ পেপসি পান। তার মা বিকেলে তাকে পেপসি পান করিয়েছেন। অন্যদিকে, রোগীর আত্মীয়-স্বজন দাবি করেছে- ওই ক্লিনিকে কর্মরত তথা কথিত নার্স সরোজগঞ্জের আঁখি খাতুন একটি ইনজেকশন দেয়ার পর পরই শিশুটির অবস্থার অবণতি হয়।
চিকিৎসকসূত্রে জানা গেছে, শিশুটির শরীরে রেনিটিড ইনজেকশন পুশ করা হয়েছিলো। ওই জাতীয় ইনজেকশন খুব ধীরে ধীরে শরীরে পুশ করতে হয়। তারপর রোগী আবার নেহায়েত শিশু। কিন্তু না করে দ্রুততার সাথে পুশ করার কারণে ওই বিপত্তি ঘটেছে।
এদিকে, স্থানীয় অনেকে অভিযোগ তুলে জানিয়েছে, ওই ক্লিনিকটি দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে পরিচালিত হয়ে আসছে। আইন মাফিক কোনো পাস করা ডাক্তার কিংবা নার্স নেই। দরকার থাকলে সুদুর আলমডাঙ্গা থেকে ডাক্তার নিয়ে আসা হয়। নার্স আঁখি খাতুনের নেই পেশাগত কোনো প্রাতিষ্ঠানিক পড়াশোনা। চিকিৎসা সেবার মতো গুরুত্ববহ পেশায় নার্সের নামে এখানে যাদেরকে রাখা হয়েছে, তাদের নিয়েও নানা জনে নানা মুখরোচক আলোচনা করে থাকে। এলাকাবাসী প্রশ্ন তুলেছেন- এভাবে কী? ক্লিনিক চলে কিংবা চিকিৎসা সেবার মতো গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্ভব? এলাকাবাসী ডাক্তার বিডি দাসের নীতি-নৈতিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলে বলেন, ডাক্তার বিডি দাস তো আলমডাঙ্গায় সবচে’ বেশি অপারেশন করেন। বলতে গেলে রাতদিন অপারেশন করেন। তারপরও কেন অবৈধভাবে পরিচালিত জেনেও তিনি হাটবোয়ালিয়া প্রাইভেট ক্লিনিকে অপারেশন করেন। অপারেশন পরবর্তীকালে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে কার ওপর ন্যাস্ত করেন অপারেশন করা রোগীর দায়িত্ব? যেখানে একটিও পাস করা নার্স কিংবা ডাক্তারও নেই।