চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহসহ সারাদেশে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন

 

স্টাফ রিপোর্টার: ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে সারাদেশের দুই কোটির বেশি শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে। ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ান, শিশু মৃত্যুর ঝুঁকি কমান- স্লোগানে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী সকল শিশুকে একটি নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে একটি লাল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। শনিবার সকাল ৮টায় দেশব্যাপী ক্যাম্পেইন শুরু হয়ে বিকেল ৪টা পর্যন্ত চলে। জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান ও জাতীয় পুষ্টি সেবা কার্যক্রমের আওতায় এ ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়েছে। ১ লাখ ২০ হাজার স্থায়ী কেন্দ্র থেকে ক্যাম্পেইন পরিচালনা করা হয়। এছাড়া অতিরিক্ত ২০ হাজার ভ্রাম্যমাণ কেন্দ্রের মাধ্যমেও টিকা খাওয়ানো হয়। উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্যদিয়ে প্রতিবারের মতো এবারও ক্যাম্পেইনের মাধ্যমে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহেও গতকাল শনিবার ভিটামিন-এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়েছে।

চুয়াডাঙ্গায় জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের  উদ্বোধন করা হয়েছে। গতকাল শনিবার চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল চত্বরে ১ম শ্রেণির ছাত্র রোহানের মুখে ভিটামিন এ প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ানোর মধ্যদিয়ে জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইনের  উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি জেলার সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান। উদ্বোধনকালে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার  মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরী জিপু,  সদর হাসপাতালের (আরএমও) ডা. মাসুদ রানা । সিভিল সার্জন জানান, জেলায় ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী ১৫ হাজার ৯৭৩ শিশুকে নীল রঙের ভিটামিন এ ক্যাপসুল এবং ১ থেকে ৫ বছর বয়সী ১ লাখ ১৭ হাজার ৪১৮ জন শিশুকে লাল রঙের ভিটামিন এ প্লাস খাওয়ানো হবে। এছাড়া বাদপড়া শিশুদেরকে পরবর্তী চারদিন খুঁজে বের করে ভিটামিন এ প্লাস  খাওয়ানো হবে । জেলার ৯৬৯ কেন্দ্রে একযোগে এ কর্মসূচি পালন করছে । গত বছর এ সংখ্যা ছিলো ১ লাখ ৬৯ হাজার ৬৫০। সভায় চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার টিকাদান সুপারভাইজার আলী হোসেনসহ কাউন্সিলরবৃন্দ, পৌর এলাকার  সরকারি  প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকবৃন্দ ও স্বাস্থ্য বিভাগীয় ফিল্ড কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথি সিভিল সার্জন ডা. ছিদ্দিকুর রহমান ভিটামিন এ প্লাস ট্যাবলেট খাওয়ানোর সময় যথাযথ নিয়ম অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানান ।

দামুড়হুদা প্রতিনিধি জানিয়েছেন, দামুড়হুদায় জাতীয় ভিটামিন এ প্লাস ক্যাম্পেইন কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। সকাল ৯টার দিকে দামুড়হুদা বাসস্ট্যান্ডস্থ অস্থায়ী কেন্দ্রে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডা. প্রফুল্ল কুমার মজুমদার প্রধান অতিথি হিসেবে শিশুর মুখে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল তুলে দিয়ে কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। তিনি বলেন, এ উপজেলায় ১৭৯ কেন্দ্রে ৬-১১ বছর বয়সী ৩ হাজার ৬০১ শিশুকে একটি করে নীর রঙের এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ২৪ হাজার ২৭০ জন শিশুকে একটি করে লাল রঙের ভিটামিন এপ্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানোর পরিকল্পনা আছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সেনেটারি ইন্সপেক্টর আব্দুল মতিন, স্বাস্থ্য পরিদর্শক আবুল কাশেম, ইপিআই টেনিশিয়ান শাহানারা পারভীন প্রমুখ।

জীবননগর ব্যুরো জানিয়েছে, জীবননগর উপজেলা ও পৌরসভায় একযোগে এ ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হয়। জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. রফিকুল ইসলাম হাসপাতাল ক্যাম্পাস হতে পৌরসভার প্যানেল মেয়র সাইদুর রহমান জীবননগর বাসষ্ট্যান্ড হতে আনুষ্ঠানিকভাবে এ ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন করেন। জীবননগর উপজেলায় এবার ১৪২ কেন্দ্রে ২০ হাজার ৩৪ শিশুকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। এর মধ্যে পৌরসভায় ৩০ কেন্দ্রে ৭ জন প্রতিবন্ধীসহ ২ হাজার ৯৪৪ জনকে ভিটামিন এ প্লাস ক্যাপসুল খাওয়ানো হয় বলে পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত সেনেটারি ইন্সপেক্টর জামাল উদ্দিন জানিয়েছেন।

মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতাল চত্বরে শিশুদের মুখে এ প্লাস ক্যাপসুল তুলে দিয়ে ক্যাম্পইনের উদ্বোধন করেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক পরিমল সিংহ, সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হালিম, হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মিজানুর রহামন, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আমিরুল ইসলাম, ইউএনও মঈনুল হাসান, সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা অফিসার ডা. অলোক কুমার দাস প্রমুখ। জেলায় মোট ৪৮৯ কেন্দ্রে ৬৬ হাজার ২১৬ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়।

গাংনী প্রতিনিধি জানিয়েছেন, সকালে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে শিশুদের মুখে ক্যাপসুল তুলে দিয়ে এ উপজেলায় ক্যাম্পেইনের উদ্বোধন ঘোষণা করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ-উজ-জামান। আরো উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা  কর্মকর্তা অপুর্ব কুমার শাহা, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ইপিআই) আব্দুর রশিদসহ চিকিৎসক ও নার্সবৃন্দ। এ উপজেলায় ৬-১১ মাস বয়সী ৪ হাজার ২০৮  জনের মধ্যে খাওয়া হয়েছে ৪ হাজার ১৭৬ এবং ১২-৫৯ মাস বয়সী ২৯ হাজার ৫৭৩ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এর মধ্যে ৬-১১ মাস বয়সী ৪ হাজার ১৭৬ জন ও ১২-৫৯ মাস বয়সী ২৯ হাজার ২০৮ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হয়। ২২৮ কেন্দ্রের মাধ্যমে ৬৮৪ জন স্বেচ্ছাসেবক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা দিন ব্যাপী ক্যাপসুল খাওয়ানোর কাজে নিয়োজিত ছিলেন।

মুজিবনগর প্রতিনিধি জানিয়েছেন, উপজেলার বিদ্যধরপুর কমিউনিটি ক্লিনিকে এ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন সিভিল সার্জন ডা. আব্দুল হালিম। উপস্থিত ছিলেন উপজেলা সদর পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্ত ডা. অলোক কুমার দাস, মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্ত ডা. সাহাব উদ্দিন প্রমুখ। উপজেলায় ১০৩ কেন্দ্রের মাধ্যমে ১০ হাজার ১৯০ শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে বলে জানান উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার পরিকল্পনা  কর্মকর্ত ডা. সাহাব উদ্দিন।

হরিণাকুণ্ডু প্রতিনিধি জানিয়েছেন, হরিণাকুণ্ডুতে সকালে কর্মসূচীর উদ্বোধন করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মনিরা পারভীন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলার স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা আলহাজ্ব ডা. রবিউল হাসান। সকাল ৮টা থেকে বেলা ৪টা পর্যন্ত  ৬ মাস থেকে ৫ বছর বয়সী শিমুদের ভিটামিন এ খাওয়ানো হয়। ২০৩ কেন্দ্রে ৬শ ৯ জন স্বেচ্ছাসেবকের মাধ্যমে ২৪ হাজার ৩৪৬ শিশুকে ভিটামিন এ খাওয়ানো হয়। ভিটামিন খাওয়ানোর কারে এ সম্পর্কিত স্বাস্থ্য বার্তাও প্রদান করা হয়।