মেহেরপুর অফিস: মেহেরপুর জেলা আইনজীবী ভবন সংলগ্ন দোতালা ভবনের সিঁড়ির নিচ থেকে তিনটি ককটেল ও পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এলএম) শতাধিক লিফলেট উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে ওইগুলো উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় হোটেলের কয়েকজন কর্মচারী জানান- সকালে লাল টেপ মোড়ানো ৩টি ককটেল ও ছড়ানো-ছিটানো বেশ কিছু কাগজ কোর্টমোড়স্থ নীমতলা আইনজীবী ভবন সংলগ্ন জনৈক আব্দুর রশিদের দোতলা ভবনের সিঁড়ির নিচে পড়ে থাকতে দেখে থানা পুলিশে খবর দেয়া হয়। খবর পেয়ে সদর থানায় এসআই রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ওইগুলো উদ্ধার করে থানায় নেয় এবং বোমা সাদৃশ্য বস্তুগুলো পানিতে ডুবিয়ে রাখে।
উদ্ধারকৃত লিফলেটে বলা হয়- গত ২১ এপ্রিল থেকে পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল লাল পতাকা) ও পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল জনযুদ্ধ) নামের সংগঠন দুটি বিলুপ্ত করে শুধুমাত্র পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এলএম) গঠন ও নাম ঘোষণা করা হয়েছে। এছাড়া লিফলেটে আরো বলা হয়- জনগনের ঘৃণিত শত্রু নজরুল ইসলামকে খতম প্রসঙ্গে। বীর গেরিলা শুভানুধ্যায়ী ও বিপ্লবী জনগণের প্রতি আহ্বান সম্বলিত ২ পাতার প্রচারপত্রে আরো বলা হয়েছে- চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার বন তিওরাবিলের ক্লিনিক ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের বেপরোয়া বেড়ে ওঠার বর্ণনা ও তাকে খুন করার কথা স্বীকার করা হয়েছে।
আইনজীবী ভবনের পাশের ওই ভবনটি দোতলায় মেহেরপুর শহর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি অ্যাড. ইয়ারুল ইসলামের চেম্বার রয়েছে। তিনি জানান- আমি শুনেছি আমার চেম্বার সংলগ্ন ভবনের নিচতলা থেকে পুলিশ ওইগুলো উদ্ধার করেছে। কে বা কারা এ কাজটি করেছে তা তিনি জানেন না। বিষয়টি তদন্ত করে পুলিশ আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে তিনি মনে করেন।
জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাড. মারুফ আহম্মেদ বিজন জানান, বিষয়টি নিয়ে আইনজীবীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। ঢাকার গুলশান ও শোলাকিয়ার শ্বাসরুদ্ধকর ঘটনায় দেশের মানুষ যখন আতঙ্কিত; তখন আইনজীবী ভবন এলাকায় ককটেল ও চরমপন্থিদের লিফলেট পাওয়ার ঘটনা মেহেরপুরবাসীকে আতঙ্কিত করে তুলেছে। এ বিষয়ে পুলিশ দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নেবে বলে তিনি মনে করেন।
ককটেল তিনটি ও লিফলেটগুলো উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্বদানকারী এসআই রবিউল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান- আতঙ্ক সৃষ্টি করার জন্য এগুলো কেউ রেখে যেতে পারে। তবে লিফলেটগুলো পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টির (এমএল) কি-না তা খতিয়ে দেখা হবে।
মেহেরপুর সদর থানার ওসি ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, সকালে আইনজীবী ভবন সংলগ্ন আব্দুর রশিদের দোতালা ভবনের সিঁড়ির নিচে কয়েকটি ককটেল ও ছড়ানো ছিটানো কিছু প্রচারপত্র দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থল ওইগুলো উদ্ধার করেছে। বর্তমানে ওইগুলো থানা হেফাজতে রাখা হয়েছে। কি কারণে কারা ককটেল ও প্রচারপত্রগুলো ওইখানে রেখে গেছে তা তদন্ত করা হবে বলে আরো জানান তিনি।