১৯৯কে ৬৪ দিয়ে ভাগ করলে প্রাপ্ত ফল আসে জেলায় তিনটেরও বেশি। যদিও দেশের বেসরকারি কলেজ সরকারিকরণে ওইভাবে ভাগাভাগি করে বোধ হয় করা হয়নি, জেলা, জনসংখ্যা ও শিক্ষার্থীর অনুপাতে ভাগবণ্ঠন করা হলে তিনটে না হলেও চুয়াডাঙ্গা জেলার অন্তত দুটি কলেজ সরকারিকরণের তালিকাভুক্ত হতো। হয়নি বলেই আবারও উন্নয়নে চুয়াডাঙ্গার হিস্যা নিয়ে প্রশ্ন তুলে তুমুল আলোচনা চলছে শিক্ষানুরাগী মহলে। বিশেষ করে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজটি সরকারিকরণ না হওয়ার কারণ নিয়ে বিরূপ সমালোচনা এখন তুঙ্গে। ঘুরে ফিরে উঠে আসছে নিরীক্ষায় সমন্বয়হীনতা,আভ্যন্তরীণ সঙ্কট প্রসঙ্গ।
দেশের ১৯৯ বেসরকারি কলেজ সরকারি করা হয়েছে। গতকাল এ মর্মে প্রকাশিত প্রতিবেদনে যে তথ্য তুলে ধরা হয়েছে, তাতে অতোর মধ্যে চুয়াডাঙ্গা জেলার মাত্র একটি কলেজ জীবননগর মহিলা কলেজ অন্তর্ভুক্ত। চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজটি কেন সরকারিকরণ করা হলো না? কোন মাপকাঠিতে মেপে ওটা বাদ রাখা হলো? এসব প্রশ্ন যেমন সংশ্লিষ্টদের মাঝে দানা বেধেছে, তেমনই উন্নয়ন তালিকায় চুয়াডাঙ্গার নাম বাষট্টি থেকে বত্রিশে আনতে না পারার বিষয়টিও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলার আয়তন অন্য অনেক জেলার তুলনায় কিছুটা অল্প হলেও জনসংখ্যা অনুপাতে ৩২তমর বেশি নয়। অথচ বারবারই যে বিষয়টি পরিলক্ষিত হয়, তা হলো দেশের সকল জেলায় যে উন্নয়ন ক্রমান্বয়ে করার সিদ্ধান্ত হয়, সেই উন্নয়নের তালিকাতেও চুয়াডাঙ্গার নাম থাকে ৬৪ জেলার মধ্যে ৫২ থেকে ৬২তে। এটা নতুন নয়। ক্ষমতার পট পাল্টালেও উন্নয়ন তালিকার ওই নম্বর বদলায় না। উন্নয়ন তরান্বিতকরণে বিভাগীয় সুপ্ত কিছু বিরোধ অনেক সময়ই অন্তরায় হয়ে দাঁড়ায়। আলমডাঙ্গা ডিগ্রি কলেজটি সরকারিকরণ না হওয়ায় ওই বিরোধের বিষয়টি ঘুরে ফিরে উঠে আসছে আলোচনায়। তা ছাড়া হিস্যায় ঘাটতি তো রয়েছেই। কেন না, কুষ্টিয়া দৌলতপুরসহ আশেপাশের যেসব কলেজ জাতীয়করণ করা হয়েছে তা দেখে প্রশ্ন উঠতেই পারে, দামুড়হুদার ওদুদ শাহ, হারদীর এমএস জোহা কলেজ হলো না কেন?
চুয়াডাঙ্গার বহু বিদ্যালয় রয়েছে যেগুলো এমপিওভুক্ত হওয়ার মাপকাঠিতে যোগ্য হয়েও সুযোগ বঞ্চিত। এমপিওভুক্ত হতে না পারা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা তো রয়েছেই। এরপর দীর্ঘ প্রতীক্ষা শেষে দেশের ১৯৯ বেসরকারি কলেজ সরকারি করা হলো, অথচ আলমডাঙ্গা উপজেলা শহরের বহু দিনের বহু শিক্ষার্থী-শিক্ষকের কলেজটি করা হলো না। কেন? নতুন-পুরোনো শিক্ষকমণ্ডলীর মধ্যে ঠাণ্ডা লড়াই? খতিয়ে দেখে সরকারের দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষণে জেলার দায়িত্বপ্রাপ্তদের আরও আন্তরিক হওয়া দরকার। উন্নয়নে যখন সরকার সিদ্ধহস্ত তখন নিজেদের লড়াইয়ে সুযোগ বঞ্চিত হওয়াটা বড্ড বোকামি।