দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাস বিরোধী ঐক্য গড়ে তুলুন : খালেদা

 

স্টাফ রিপোর্টার: হত্যালীলা থামাতে এবং শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ ও গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়তে কালবিলম্ব না করে দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি গতকাল রোববার তার গুলশান কার্যালয়ে আয়োজিত জরুরি এক সংবাদ সম্মেলনে এই আহ্বান জানান। গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারি নামের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসীদের হাতে বিদেশিসহ ২০ জন নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে দলের স্থায়ী কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে আসনে তিনি।

লিখিত বক্তব্যে খালেদা জিয়া বলেন, এই হত্যালীলা থামাতে হবে। এজন্য আমাদের একতাবদ্ধ হতে হবে। কে ক্ষমতায় থাকবে, কে ক্ষমতায় যাবে, সেটা আজ বড় কথা নয়। আজ আমরা যারা আছি, আগামীতে আমরা কেউ হয়তো থাকবো না। তবে দেশ ও জাতি থাকবে। সেই দেশ-জাতির বর্তমান ও ভবিষ্যত আজ বিপন্ন। আমরা যে যাই বলি, আমাদের কিছুই থাকবে না, কোনো অর্জনই টিকবে না যদি আমরা সন্ত্রাস দমন করতে না পারি, যদি জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারি। তাই কালবিলম্ব না করে, আসুন আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে দলমত নির্বিশেষে সন্ত্রাসবিরোধী ঐক্য গড়ে তুলে শান্তিপূর্ণ, নিরাপদ গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ গড়ে তুলি।

বিএনপি চেয়ারপারসন আরো বলেন, সারা বাংলাদেশ আজ সন্ত্রাসের থাবায় ক্ষত-বিক্ষত। মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিন, মন্দিরের পুরোহিত, ধর্মগুরু ও যাজক, ভিন্নমতের লেখক-প্রকাশক-ব্লগার, খেটে-খাওয়া শ্রমজীবী মানুষদের নৃশংসভাবে হত্যা করা হচ্ছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুরা আক্রান্ত হচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে আমাদের সযত্নে লালিত সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির ঐতিহ্য। কোথাও কেউ নিরাপদ নয়। এটা এ  দেশের জন্য নতুন এক জাতীয় সংকট।

খালেদা জিয়া বলেন, সন্ত্রাস মোকাবেলায় প্রথম কর্তব্য হচ্ছে দেশের সরকার ও জনগণের। বর্তমানে সন্ত্রাসের যে চিত্র  দেখছি সেটা নিছক আইনশৃঙ্খলাজনিত মামুলি কোনো সমস্যা নয়। কেবল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযান দিয়ে এই সন্ত্রাস মোকাবেলা করা যাবে না। এই সংকটের শেকড় আরও অনেক গভীরে। সন্ত্রাস দমন কার্যক্রমকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে গেলে এই সংকট আরও প্রকট আকার ধারণ করবে। এই বিষয়টির দিকে সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাচ্ছি। কোনো সুস্থ ও বিবেকবান মানুষ এ ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা ও নিরপরাধ মানুষের হত্যাযজ্ঞকে মেনে নিতে পারে না। এমন অযৌক্তিক, নিষ্ঠুর, হঠকারী ও ভুল পথে কোনো কিছুই অর্জন করা সম্ভব নয়। কোনো আদর্শ কিংবা ধর্মই এ ধরনের কাণ্ডজ্ঞানহীন সন্ত্রাসী কার্যকলাপ অনুমোদন করে না। শান্তির ধর্ম পবিত্র ইসলাম নিরপরাধ মানুষকে হত্যা করা এবং সন্ত্রাসের ঘোর বিরোধী। তাই বাংলাদেশ ও বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের সাথে আমরাও শঙ্কিত।

অভিযান পরিচালনাকারীদের ধন্যবাদ জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন আমরা সাময়িক স্বস্তি পেয়েছি। আমি  সেনাবাহিনীকে ধন্যবাদ জানাই জাতীয় জীবনের এমন সংকটে তাদের সামর্থ্য ও প্রয়োজন আরেকবার প্রমাণ করার জন্য। সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়া কোনো প্রশ্ন নেননি।