জহির রায়হান সোহাগ: আজ ২৭ রমজান। হিসেব বলছে ঈদের আর মাত্র তিনদিন বাকি। সাধারণত রমজানের শুরু থেকে পোশাকের বাজারে বেচা-কেনার পরিমাণ বাড়তে থাকে। আর শেষ মুহূর্তে বিশেষ করে চাঁদরাত পর্যন্ত বেচা-কেনার পরিমাণ বেড়ে যায় কয়েকগুন। ব্যবসায়ীদের যেন দমফেলার ফুরসত থাকে না। কিন্তু এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন দেখাগেছে চুয়াডাঙ্গার মার্কেটগুলোতে। ঈদের শেষ মুহূর্তে বেচা-কেনায় হঠাতই ভাটা পড়েছে বলে জানালেন ব্যবসায়ীরা।
গতকাল চুয়াডাঙ্গার বিভিন্ন মার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, বিকিকিনি ধারাবাহিকভাবে চললেও সময়ের তুলনায় ক্রেতাদের সমাগম কম। বেশিরভাগ দোকানি অলস সময় পার করছেন। এ দোকানগুলো মূলত মহিলাদের শাড়ি, থ্রি পিস, পাঞ্জাবি, আর ফতুয়ার দোকান। কয়েকটি দোকানে ক্রেতাদের ছোট-খাটো ভিড় দেখা গেলেও এদের বেশিরভাগ এ দোকান ও দোকান ঘুরে বেড়াচ্ছেন।
চুয়াডাঙ্গা সমবায় নিউ মার্কেটের হৃদয় গার্মেন্টেসের ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন জানালেন, রমজানের শেষের দিকে ক্রেতারা আসে জোয়ারের মতো। বেচা-কেনায় লেগে যায় ধুম। দম ফেলার ফুরসত থাকে না। অথচ এবার রমজান উপলক্ষে বাড়তি সেলসম্যানরা কাজ করছেন ঢিলেঢালা ভাবে। ফুটপাতের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ক্রেতা আকর্ষণ করতে হাক ডাক ছাড়ছেন। একজনকে নাগালে পেলে নিজেদের দোকানে ভেড়াতে উঠে পড়ে লাগছেন।
তবে বড় বাজার পুরাতন গলির মার্কেট ও ফুটপাতে কিছুটা বেচা-কেনা হতে দেখা গেছে। বিলাসবহুল দোকানের মত বাহারী পোশাকের সমাহার রয়েছে পুরাতন গলির বাজার ও ফুটপাতের স্থায়ী এবং মরসুমি দোকান গুলোতে। যেখানে কেনাকাটা করতে মোটামুটি ভিড় জমাচ্ছেন অল্প আয়ের ক্রেতারা। তারা সেখানে তাদের পছন্দ ও সামর্থ অনুযায়ী বাচ্চাদের পোশাক কিনছেন। এখানে বাচ্চা ও পুরুষের বিভিন্ন পোশাক তুলনামূলক কমদামে বিক্রি হচ্ছে। ফুটপাতেই রয়েছে মেয়েদের জন্য সিট কাপড়ের দোকান। এখানে ভিড় করা ক্রেতাদের সাথে কথা বলে জানা যায়, একই মানের কাপড় মার্কেটের দোকানের তুলনায় অনেক কম মূল্যে কেনা যাচ্ছে।
কথা হয় বড় বাজার গলির মার্কেটের ব্যবসায়ী রমজান আলীর সাথে। বেচা-কেনা কেমন? এ প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন, বেচা-কেনা গত বছরের তুলনায় কিছুটা কম। তবে গত ২/৩ দিন শহরের অন্যান্য মার্কেটের তুলনায় বেশি। ঈদের বাজারে শেষ সময়ে সাধ আর সাধ্যের মিশেলে পছন্দের কাপড় চোপড় কিনতে পারায় তাদের দোকানে ক্রেতার ভিড় বেশি বলে দাবি এই ব্যবসায়ীর।
ঈদের আগে এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়েও খুশি হতে পারছেন না চুয়াডাঙ্গার পোশাক ব্যবসায়ীরা। তাদের চেহারায় হতাশার ছাপ থাকলেও শেষ দুইদিন বেচাবিক্রি অন্যবারের মত ভালো হবে এমন আশায় এখনও বুক বেঁধে রয়েছেন অনেকেই।