স্টাফ রিপোর্টার: গুলশানের রেস্তরায় বন্দুকধারীদের হামলা রুখতে গিয়ে হতাহত পুলিশ অফিসারদের মধ্যে চুয়াডাঙ্গার এক কৃতী সন্তানও রয়েছেন। তিনি চুয়াডাঙ্গা সিনেমাহলপাড়ার মৃত আতিয়ার রহমানের ছেলে রফিকুল আলম পিণ্টু। বোমার স্প্লিন্টারে জখম হয়ে ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
রাজধানী ঢাকার গুলশানে একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টে পরশু শুক্রবার রাত পৌনে নয়টার দিকে একদল বন্দুকধারী হামলা চালায়। খবর পেয়ে বনানী থানার ওসি, ডিবির এসিসহ বহু পুলিশ অফিসার দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে যান। অভিযান শুরু করেন। বন্দুকধারীদের ছোড়া গুলি ও বোমায় গুরুতর আহত হয়ে প্রাণ হারান বনানী থানার ওসি সালাহউদ্দিন ও ডিবির এসি রবিউল ইসলাম। আহত হন কমপক্ষে ৩০ জন ৱ্যাব পুলিশ অফিসার। যার মধ্যে রয়েছেন রফিকুল আলম পিণ্টু। তিনি ঢাকার বনানী এলাকায় ট্রাফিক পুলিশের টিআই পদে কর্মরত। রফিকুল আলম পিণ্টু চুয়াডাঙ্গা জেলা যুবলীগের সাবেক আহ্বায়ক বিশিষ্ঠ ঠিকাদার আরেফিন আলম রঞ্জুর বড় ভাই। দু কন্যা ও স্ত্রী নিয়ে রফিকুল আলম পিণ্টু সাভারে বসবাস করেন। শুক্রবার রাতে তিনি বনানী এলাকায় কর্তব্যপালন করতে গিয়ে আহত হন। তার শরীরে বোমার স্প্লিন্টার বিদ্ধ হয়েছে। ডায়বেটিক থাকার কারণে গতকাল অস্ত্রোপচার করে স্প্লিন্টার অপসারণ করা সম্ভব হয়নি। আজ অস্ত্রোপচার করা হতে পারে। ঢাকায় যোগাযোগ করে তার ছোটভাই টুটুল এ তথ্য জানিয়েছেন।
রেস্তরায় বিদেশিদের ওপর হামলার খবরে তিনিসহ সঙ্গীয় অফিসার ও ফোর্স দ্রুত সেখানে গিয়ে বন্দুকধারীদের গুলি ও বোমাআঘাতে আহত হয়। গতকাল সকালে সেনাবাহিনীর কামান্ড অভিযানে নামে। হামলাকারীদের ৬ জন নিহত হয়। সন্দেহভাজন একজনকে আটক করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার হয় ২০ জনের মৃতদেহ। নিহত ২০ জনের পরিচয় প্রকাশ করা হয়েছে। শুক্রবার রাতে ওই হামলার ঘটনায় নিহতদের মধ্যে ১১ পুরুষ ও ৯ জন নারী রয়েছেন। নিহত ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন বিদেশি। এদের মধ্যে ৯ জন ইতালীয় নাগরিক, ৭ জন জাপানি নাগরিক এবং একজন ভারতীয় নারী রয়েছেন। শনিবার রাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদফতর-আইএসপিআর আরও জানায়, নিহত বাকি তিনজনের দুজন বাংলাদেশি এবং একজন বাংলাদেশি বংশদ্ভূত মার্কিন নাগরিক। শুক্রবার রাত পৌনে ৯টার দিকে গুলশান ২ নম্বরের হলি আর্টিজেন রেস্টুরেন্টে একদল অস্ত্রধারী ঢুকে বিদেশিসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করে। সকালে কমান্ডো অভিযান চালিয়ে ১৩ জন জিম্মিকে জীবিত উদ্ধার করা হয়। এ সময় সেখান থেকে ২০টি মৃতদেহ বের করা হয় যাদেরকে রাতেই গলা কেটে হত্যা করা হয় বলে আইএসপিআর জানিয়েছে। এছাড়া হামলার শুরুতে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা-ডিবি এবং পুলিশের দুই কর্মকর্তা নিহত হন। সকালে কমান্ডো অভিযানে ছয় বন্দুকধারী নিহত হয় আর এক বন্দুকধারীকে আটক করা হয়।