লাটাহাম্বারে গরু নিয়ে যাত্রীদের বাদুর ঝুলা : হইহই চিৎকার

 

কামরুজ্জামান বেল্টু: সড়কে দানবরূপী যানগুলোতে জীবনের ঝুকি নিয়ে বাদুর-বাদর ঝুলা হয়ে যারা যায় তারা কারা? যোদ্ধা। দারিদ্রের সাথে যুদ্ধ করে বাঁচার লড়াইয়ে মত্ত কিছু মানুষ। মাঝে মাঝে ওদের হঠাৎ চিৎকার- চেঁচামেচিতে চমকে ওঠে সড়কে থাকা অন্য বৈধ-অবৈধ যানবাহনের চালক-যাত্রীসাধারণসহ ওই দানবরূপীর কিছু আরোহীও।

গতপরশু সোমবার রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা কলেজরোডে স্টেশনের নিকটস্থ বাঁকে দানবরূপী লাটাহাম্বার নামক অবৈধ যান দুর্ঘটনার দৃশ্য দেখে অনেকেই মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, যতোই দরিদ্র্য হোক আর কৃপণই হোক অর্থলিপ্সুতায় ওইভাবে জীবনের ঝুঁকি নেয়ার এখতিয়ার কারো নেই। সড়কে প্রকাশ্যেই শ্যালোইঞ্জিনচালিত নানা নামের হরেক কিসিমের দানব চলে সড়কে। শহরের বুক চিরে চলে ওরা। কিছু আছে যার অসহনীয় শব্দে কতোজনকেই না অসুস্থ করছে কে তার খবর রাখে! শুধু চুয়াডাঙ্গা নয় মেহেরপুর, ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া, যশোরসহ গোটা দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার প্রায় সকল সড়কেই শ্যালোইঞ্জিনচালিত অবৈধযানের সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলেছে। শহর, শহরতলীসহ ছোট ছোট বাজার মোড়ে প্রকাশ্যেই তৈরি হয় এসব অবৈধ যান। অবস্থা দৃষ্টে শ্যালোইঞ্জিনচালিত নসিমন, করিমন, আলমসাধু, আলগামন, লাটাহাম্বারকে অবৈধ বলাটাই যেন অন্যায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। অবাক হলেও সত্য যে, ওইসব অবৈধযানের কারণে প্রতিদিনই ঘটছে দুর্ঘটনা। হতাহতের সংখ্যা আশঙ্কাজনক হলেও ন্যূনতম মামলাটাও রেকর্ড হচ্ছে না থানায়। অনেকেরই অভিমত, অবৈধযানে যতোটা না পরিবারে সচ্ছলতা এনেছে তার চেয়ে ঢের বেশি পরিবারে চাপিয়েছে পঙ্গুত্বের বোঝা। অথচ অবৈধযান নিয়ন্ত্রণ দূরাস্ত, দুর্ঘটনায় প্রাণহানি রোধেও ন্যূনতম উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না বলেই সড়কগুলো হয়ে উঠেছে মৃত্যুপুরি। সড়কে বের হয়ে সুহালে বাড়ি ফেরার ভরসা কম। স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা নেই। আর যারা অবৈধযানের যাত্রী তাদের ঝুঁকি?

শ্যালোইঞ্জিনচালিত লাটা হাম্বারযোগে এলাকার পশুহাটগুলো থেকে গরু বহন করার হিড়িক পড়ে। গরু বহনের সাথে সাথে গরু ব্যবসায়ীসহ গরুর রাখালরা যাত্রী হয়। দলবদ্ধভাবে গরুব্যাপারী ও রাখালদের অনেকেই গরু নিয়ে লাটাহাম্বারের ওপর চড়ে যেভাবে যাওয়া আসা করেন তা দেখে চমকে উঠতে হয়। এরপর ওরা চিৎকার চেঁচামেচি করে সড়ক ফাঁকা করতে চায়। এতে আরো বিপত্তি ঘটে। যেমন গতপরশু রাত ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গা স্টেশনের নিকট লাটাহাম্বারে থাকা গরু ব্যবসায়ীসহ রাখালদের চিৎকারে কয়েকটি গরু লাফিয়ে ওঠে। বাঁধা বাঁশ ভেঙে একটি গরু ঝুলতে থাকে। একজন গরু ব্যবসায়ীও পড়ে আহত হন। দৃশ্য দেখে প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন এদিকে প্রশাসনের দৃষ্টি দেয়া দরকার।