ট্রেন থেকে পড়ে যুবক অপূর্ব পা হারিয়ে হাতে তুলে নিলেন ভিক্ষার ঝুলি

 

 

রোজায় রোজ আয় দেড় দু হাজার টাকা : দোকান দেয়ার স্বপ্ন

স্টাফ রিপোর্টার: ভিক্ষুক হওয়ার আগের কাহিনীটা তার মনগড়া কি-না তা নিয়ে সন্দেহ থাকলেও এখন প্রতিদিনের চমকানো আয় অবিশ্বাস করার কারণ নেই। প্রতিদিনই বিকাশ করাটাই তার প্রমাণ।

চমকানো আয়টা কতো? কমপক্ষে দেড় হাজার। কোনো কোনো দিন আড়াই থেকে তিন হাজারও হচ্ছে। বিয়ারিং দিয়ে তৈরি চার চাকার কাঠের হাতচালিত গাড়িতে বসে ভিক্ষা করা ভিক্ষুক নিজেই এ আয়ের কথা জানালেন।

নাম অপূর্ব। নামটা তার নিজেরই রাখা নাকি অতো সুন্দর নামটা শিশুকালে তার মা বাবা কিম্বা কোনো আত্মীয় রেখেছিলেন কি-না তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। পরিচয় দিতে গিয়ে তার বাড়ি খুলনার ময়লাপোতা এলাকায় হলেও পবিত্র রমজানের শুরু থেকেই রয়েছেন চুয়াডাঙ্গায়। সকাল থেকে শুরু হয় ভিক্ষা করা। সন্ধ্যায় টাকাগুলো বিকাশ করে বাড়ি স্ত্রী, মেয়ের কাছে পাঠানোর পর অবস্থান নেন স্টেশনে। সেখানেই কথা হয় এই প্রতিবেদকের সাথে।

কীভাবে পা হারালেন? সে ৯ বছর আগের কথা। খুলনায় ময়লাফেলা ট্রাকের হেলপার ছিলাম। অতো পোশাতো না। কাজের জন্য ঢাকায় মামার কাছে ট্রেনযোগে যাচ্ছিলাম। চুয়াডাঙ্গার মুন্সিগঞ্জ স্টেশনের নিকট কীভাবে যেনো পড়ে গেলাম। বা পাটা কেটে গেলো। চুয়াডাঙ্গা স্টেশনে ভর্তি করা হলো। পরে অবশ্য খুলনায় গিয়ে বহুদিন ধরে চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে বিয়ারিং দিয়ে কাঠের গাড়ি তৈরি করে শুরু করলাম ভিক্ষা করা। প্রতিদিন ভিক্ষা ভালোই হয়। গড়ে ৭/৮শ তো পাই-ই। রোজার মধ্যে রোজগার বেড়ে দাড়ায় অন্য সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ। যেমন এখন চুয়াডাঙ্গায় দেড় দু হাজার করে হচ্ছে। বা! ভালোই তো হচ্ছে। ভিক্ষা করেই কি সারাটা জীবন কাটিয়ে দেবেন? এ প্রশ্নের জবাবে অবশ্য অপূর্ব খানেকটা নীরব থেকে বললেন, ‘টাকা জমছে। আরো কিছু জমলে ভিক্ষা ছেড়ে একটা দোকান দেবো।’ দোকানে কি অতোটাকা আয় হবে? অপূর্ব অন্যরকম আয়েশি  হাই তুলে বোঝালেন এসব কথা তার ভালো লাগছে না। তিনি তখন গা এলাবেন।

 

 

Leave a comment