চুয়াডাঙ্গা দৌলাতদিয়াড়ের গৃহবধূর লাশ ময়নাতদন্ত শেষে পিতার বাড়ি হাতিকাটায় দাফন
স্টাফ রিপোর্টার: চুয়াডাঙ্গা দৌলাতদিয়াড়ের কিশোরী বধূ খুশির লাশ ময়নাতদন্ত শেষে দাফন করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার বিকেলে তার লাশ দাফন করা হয় পিতার বাড়ি আলুকদিয়ার হাতিকাটা গ্রামে। এদিকে খুশিকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী রাকিবুল, শ্বশুর জসিম ও মামাশ্বশুর জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে। ঘটনার পর থেকেই পালাতক রয়েছে স্বামী রাকিবুলসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন।
পুলিশ জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাতিকাটা গ্রামের মোকাম আলীর মেয়ে খুশি খাতুনের (১৫) বিয়ে হয় দৌলাতদিয়াড় বঙ্গজপাড়ার জসিম উদ্দিনের ছেলে রাকিবুল ইসলামের সাথে। প্রায় এক বছর আগে প্রেমসম্পর্কের মাধ্যমে পরিবারের সম্মতিতে তাদের বিয়ে হয়। গত বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বাড়ির ছাদে টিনশেডের একটি ঘরে ঝুলন্ত অবস্থায় খুশির লাশ উদ্ধার করে শ্বশুরবাড়ির লোকজন। ঘটনার পরদিন গতকাল শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে স্বামীর বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে সদর থানা পুলিশ। ময়নাতদন্তের জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। বিকেলে তার লাশ নেয়া হয় পিতার বাড়ি হাতিকাটা গ্রামে। সেখানেই খুশির লাশের দাফন সম্পন্ন করা হয়।
শ্বশুরপক্ষের লোকজন খুশিকে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করেন খুশির মা কোহিনুর বেগম। অভিযুক্ত মামাশ্বশুর জাহাঙ্গীর আলম হত্যামামলাসহ একাধিক মামলার আসামি। খুশির লাশ উদ্ধার করা বাড়ির ছাদে টিনশেডের ওই ঘরেই থাকতেন জাহাঙ্গীর আলম। একাধিক মামলার আসামি দীর্ঘদিন ধরে গাঢাকা দিয়ে ওই বাড়িতেই থাকতেন তিনি।
আলুকদিয়া হাতিকাটার মোকাম আলীর দ্বিতীয় স্ত্রী কোহিনুর বেগম তার মেয়ে খুশিকে নিয়ে দৌলাতদিয়াড়ের বঙ্গজপাড়ায় বসবাস করতেন। ৬ষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী খুশির সাথে প্রেমসম্পর্ক গড়ে বছরখানেক আগে বিয়ে করে বঙ্গজপাড়ার রাকিবুল। প্রথমদিকে কোনো দাবি না থাকলেও বিয়ের কিছুদিন পর থেকে যৌতুকের দাবি করে আসছিলো সে। একপর্যায়ে রাকিবুলকে যৌতুকের ৩০ হাজার টাকাও দেয়া হয়। এরপর বঙ্গজপাড়ায় কোহিনুরের ভিটে জমি তার নামে লিখে নেয়ার জন্য বলে রাকিবুল। এতে খুশি রাজি না হলে প্রায়ই তার ওপর নির্যাতন করতো রাকিবুলসহ পরিবারের লোকজন।
খুশির মা কোহিনুর বেগম জানান, জামাই রাকিবুল তার পরিবারের লোকজনের সহযোগিতায় খুশিকে হত্যা করেছে। প্রায়ই রাকিবুল আমার মেয়েকে যৌতুকের দাবিতে মারধর করতো। হত্যা করেছে আমার খুশিকে আমি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু বিচার চাই।
চুয়াডাঙ্গা সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তোজাম্মেল হক জানান, পুলিশ লাশের সুরতহাল রিপোর্ট তৈরি করেছে। সুরতহাল রিপোর্টে নিহতের ডান চোখের নিচে ঘুষি মারার মতো আঘাতের চিহ্ন আছে। গলায় ফাঁসের চিহ্ন এবং অন্য আলামত দেখে আত্মহত্যা না হত্যা প্রাথমিকভাবে কিছুই বলা যাচ্ছে না। লাশের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যু বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে। এ ব্যাপারে থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।