দূর করতে হবে দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব

 

ঘরবাড়ি পোড়ানো সংক্রান্ত ৬টি মামলার আসামি চুয়াডাঙ্গা আলমডাঙ্গার খাসকররা ইউপি চেয়ারমান। তাকে গ্রেফতার করতে গিয়ে দীর্ঘ ৬ ঘণ্টার পুলিশের ব্যর্থ অভিযানের পর আলোচনা নতুন মোড় নিয়েছে। জনপ্রতিনিধি সংবাদ সম্মেলন করে শান্ত চুয়াডাঙ্গা অশান্ত হওয়ার জন্য পুলিশকে দোষারোপ করেছেন।

নতুন করে বলার অবকাশ রাখে না যে, একজনকে দিবালোকে তাড়িয়ে ধরে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করেছে। একপক্ষের এ নৃশংসতার পর অপরপক্ষ প্রতিপক্ষের ঘরবাড়িতে আগুন ধরিয়ে পুড়িয়ে দিয়েছে। খুনের ঘটনাটি নির্বাচনী প্রতিহিংসা। জড়িত মূলত ক্ষমতাসীনদলের দুপক্ষ। তাদের বিরোধেরই জের।

খাসকররার তিয়রবিলায় গত ৬ জুন বিকেলে প্রকাশ্যে একজনকে তাড়িয়ে ধরে কুপিয়ে ও গুলি করে খুন করে প্রতিপক্ষরা। ঘটনার পর তিয়রবিলা ও হাকিমপুরের ১২ জনের ঘরবাড়িসহ ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়। ঘটনার পর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দায়িত্ব অবহেলার অভিযোগে বিভাগীয় তদন্তও হচ্ছে বলে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। প্রকাশ্যে খুনের পর খুনিদের একজনকেও পুলিশ ধরতে পারেনি। তবে আগুন ধরিয়ে দেয়ার বিষয়ে দায়ের করা মামলায় ইউপি চেয়ারমানকে ধরতে গিয়ে পুলিশকে পড়তে হয়েছে প্রতিরোধের মুখে। প্রতিরোধ মূলত প্রথমে বাড়ির শক্ত গরাদ, পরে মানবপাচিল। ৬ ঘণ্টা ধরে পুলিশের অবস্থানের মাঝেই বাড়ির পেছন দিয়ে আসামি সরে পড়ার পর পুলিশ তল্লাশির সুযোগ পায় বলে গুঞ্জন ওঠে। মূলত এ কারণেই প্রসঙ্গটি এলাকায় প্রধান আলোচ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, ঘরবাড়ি পোড়ানো মামলার আসামিকে ধরতে পুলিশের যতোটা তৎপরতা পরীলক্ষিত হয়েছে খুন মামলার আসামিদের ধরতে কি অতোটা আন্তরিক হয়েছে পুলিশ? পুলিশের তরফে অবশ্য জানানো হয়েছে, খুন মামলার আসামিদের যেমন ধরতে পুলিশি অভিযান অব্যাহত রয়েছে, তেমনই ঘরবাড়ি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়ার মামলার আসামি ধরতেও পুলিশ তৎপর।

তিয়রবিলায় খুনের পর চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় সংসদের হুইপ সংবাদ সম্মেলন করে দুটি প্রশ্ন ছুড়ে দেন। একটি হলো পুলিশ কোন স্বার্থে খুনের শিকার ব্যক্তিকে না নিয়ে তড়িঘড়ি করে দূর সম্পর্কের এক আত্মীয়কে দিয়ে হত্যামামলা করাতে তৎপরত হলো? কেন শান্ত চুয়াডাঙ্গায় একের পর এক খুন হচ্ছে?

রাজনৈতিক গোষ্ঠী বা দলীয় অন্তর্দ্বন্দ্ব কখনোই কোনো দলের জন্যই কল্যাণকর হয়নি। যদিও বড় দলে নেতৃত্ব নিয়ে বিরোধ থাকাটা অস্বাভাবিক বলা যায় না। তাই বলে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ বা নেতৃত্ব না মেনে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকে সমর্থন করা যায় না। দলীয় অন্তর্দ্বন্দ দূর করতে হবে, প্রয়োজনে থাকতে হবে কেন্দ্রীয় হস্তক্ষেপ। পুলিশকেও হতে হবে পেশাদার। আইন প্রয়োগে থাকতে হবে সচ্ছ্বতা।

Leave a comment