জীবননগরে বেপরোয়া গতির ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে ঝরে গেলো তরুণ পুলিশ কনস্টেবল আরিফের প্রাণ

SAMSUNG CAMERA PICTURES

 

জীবননগর ব্যুরো: জীবননগরে বেপরোয়া গতির বালুবাহী ট্রাক্টরের চাকায় পিষ্ট হয়ে অকালে ঝরে গেলেন তরুণ পুলিশ কনস্টেবল আরিফুল ইসলাম (২৬)। চাকরিস্থল থেকে ছুটি নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে গতকাল বুধবার দুপুরে জীবননগর-চুয়াডাঙ্গা সড়কের জীবননগর হাসপাতালের সামনে মর্মান্তিক এ দুর্ঘটনায় তিনি নিহত হন। নিহত কনস্টেবল আরিফুর রহমান জীবননগর উপজেলার গয়েশপুর গ্রামের আবু বকর ওরফে বকা গাইনের একমাত্র ছেলে। মাত্র ৪ বছর আগে তিনি পুলিশের কনেস্টেবল পদে যোগদান করেন। নিহত এ পুলিশ সদস্যর রাতেই দাফন করা হয়েছে। তার দাফন অনুষ্ঠানে পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ উপস্থিত ছিলেন।

প্রত্যক্ষদর্শীসূত্রে জানা যায়, জীবননগরের দিক থেকে একটি বালুবাহী ট্রাক্টর বেপরোয়া গতিতে উথলী অভিমুখে যাচ্ছিলো। হাসপাতালের সামনে পৌঁছে ড্রাইভার ট্রাক্টরের নিয়ন্ত্রণ হারায়। এ সময় ট্রাক্টরটি আঁকা-বাকা হয়ে রাস্তার এপাশ ওপাশ করছিলো। পুলিশ কনস্টেবল আরিফ এ সময় মোটরসাইকেল চালিয়ে আসছিলেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তিনি রাস্তার পাশে চলে যান। এ সময় ট্রাক্টরটি তাকে পিষ্ট করে। ঘাতক ট্রাক্টর তার মাথার ওপর দিয়ে চলে যায়। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে জীবননগর হাসপাতালে নেয়া হয়। অবস্থা সঙ্কটাপন্ন হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে যশোর হাসপাতালে রেফার করেন। যশোর নেয়ার পথিমধ্যে কোটচাঁপুর পৌঁছুলে তিনি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। নিহত আরিফুরের লাশ থানাতে নেওয়া হলে পুলিশ সদস্য শোকে মুহ্যমান হয়ে পড়েন। নিহত আরিফুর গয়েশপুর বকা গাইনের একমাত্র ছেলে। গ্রামে সে নিখাদ ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। আরিফুলের এ অকাল মৃত্যু মেনে নিতে পারছেনা গ্রামবাসী। একমাত্র ছেলে হারিয়ে তার পিতা-মাতাসহ পরিবারের সদস্যরা বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে।

জীবননগর থানার ওসি হুমায়ন কবীর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, নিহত কনস্টেবল আরিফুর রহমান ঝিনাইদহ জেলার হরিণাকুণ্ডু উপজেলার সনাতনপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। সেখান থেকে ছুটি নিয়ে মোটরসাইকেলযোগে বাড়ি ফেরার পথে তিনি এ দুর্ঘটনায় পড়েন। পুলিশ ঘাতক ট্রাক্টরটি আটক করেছে। তবে ড্রাইভার পালিয়ে গেছে। এদিকে নিহত আরিফুরের মৃতদেহ ময়নাতদন্ত শেষে সন্ধ্যায় গ্রামে নিয়ে কান্নার রোল ওঠে। শোকার্ত হয়ে ওঠে পরিবেশ। রাতে জানাজা শেষে তাকে গ্রামের কবরস্থানে বিদনা বিধুর পরিবেশে দাফন করা হয়। নিহত আরিফুরের জানাজায় ঝিনাইদহ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজবাহার  আলী, জীবননগর থানার ওসি হুমায়ুন কবির, হরিণাকুণ্ডু থানার ওসি মহাব্বত হোসেনসহ বিপুল সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা ও সদস্য এবং এলাকাবাসী অংশগহণ করেন।