আইপিএল জুয়ায় মেতেছে আলমডাঙ্গা : মোটা অঙ্কের টাকা হাত বদলের মহড়া

 

আলমডাঙ্গা ব্যুরো: ভারতে অনুষ্ঠিত ক্রিকেটের টি-২০ ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল) নিয়ে দেশের অন্যান্য স্থানের মত জুয়ায় মেতেছে আলমডাঙ্গা শহর। প্রতি রাতে মোটা অঙ্কের টাকা লেনদেন হচ্ছে এ শহরে। সন্ধ্যার পর শহরের বেশ কয়েকটি পয়েন্টে ক্রিকেট জুয়া খেলতে জুয়াড়িরা হুমড়ি খেয়ে পড়ে বলে অভিযোগ উঠেছে।

একাধিকসূত্রে জানা গেছে, আলমডাঙ্গা শহরে আইপিএল নিয়ে এ ধরনের জুয়া খেলা এবারই প্রথম নয়। বেশ কয়েক বছর ধরে চলছে এ ক্রিকেট জুয়া। শুধু আই পিএল নয়, ক্রিকেট বিশ্বকাপ কিংবা টেস্ট ক্রিকেট। সব খেলাতেই এখন জুয়াড়িদের রমরমা আসর বসে আলমডাঙ্গায়। শহরের আনন্দধামে ২ ডেরায়, সোনাপট্টিতে ২ ডেরায় ও রথতলায় একাধিক স্থানে এ ক্রিকেটজুয়ার রমরমা ব্যবসা হয়ে থাকে। স্বর্ণ ব্যবসায়ী থেকে মুদি দোকানি এ আসরগুলোর জুয়াড়ি। ৬/৮ জন পালের গোদা রয়েছেন। এদেরকে ডিলার হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়।  আইপিএল’র প্রতিটি খেলার আগে জুয়াড়িরা সরাসরি অথবা মোবাইলে অন্যান্যের সাথে যোগাযোগ করেন। পরীক্ষিত জুয়াড়িদের ‘রেফারেন্স’ অথবা কোড নম্বর ছাড়া নতুন জুয়াড়িদের কাছে তারা (ডিলার) ধরা দেন না।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ওয়াকিবহাল একাধিক ব্যক্তি জানান, এদের বেশিরভাগই প্রভাবশালী। সমাজের দৃশ্যমান চোখে তারা ভদ্রলোক বলেই পরিচিত। অন্য জুয়াড়ির অনুমতি ভিন্ন সহজে কেউ এ দলে অন্তর্ভূক্ত হতে পারেন না। এ ক্রিকেট জুয়ার কথা তুললে তারা এমন ভাব দেখায় আইপিএল কি সেটাই তারা জানে না।

গতকাল আইপিএল’এ বেশ আর্ক্যণীয় খেলা ছিলো। একদিকে মোস্তাফিজুরের সান রাইজেজ হায়দ্রাবাদ ও সাকিব আল হাসানের কোলকাতা নাইট রাইডার। সন্ধ্যার আঁধার ঘনাতে না ঘনাতেই জুয়ার ডেরাগুলোতে আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। ওয়াকিবহাল একাধিক ব্যক্তি বলেছেন, আলমডাঙ্গার স্থানীয় এ ক্রিকেট জুয়ার আসরে প্রতিদিনই হাতবদল হওয়া টাকার পরিমাণ বেশ মোটা অঙ্কের। জুয়াড়িদের কাছে রয়েছে আইপিএল’র প্রতিটি দলের ছবিসহ খেলোয়াড়ের তালিকা।  কীভাবে এ জুয়া খেলা চলে? এমন প্রশ্নের উত্তরে তারা জানায়, প্রতিটি ম্যাচের আগে সাধ্যমত সেট কিনে নিয়ে যায় জুয়াড়িরা। সেট বলতে বল, ওভার অথবা ম্যাচের ফলাফল কি হবে তার অনুমান। যেমন- বলে আউট হতে পারে বা ৪ অথবা ৬ হতে পারে এ ধরনের অনুমান। ম্যাচে কোন দল জিতবে তা নিয়েও বাজি ধরা হয়। অনেকেই ডাবল-রিডাবল জুয়া বাজি ধরে। ধরা যাক একজন ১ হাজার টাকা বাজি ধরলেন, এর ডাবল ধরলে তা ২ হাজার টাকা হয়ে যাবে। আর রিডাবল ধরলে হবে ৪ হাজার টাকা। এ জুয়ার কোনো কোনো সাসপেন্সন পর্যায়ে প্রতি বলে বলে বাজি ধরা হয়। তারা

আরও বলেন, বাজিকররা থার্ড আম্পায়ারের সিদ্ধান্ত কি আসতে পারে-তার ওপরও বাজি ধরেন। সাধারণ কারা ক্রিকেট বেশি খেলেন? তিনিও ক্রিকেট জুয়ায় সম্পৃক্ত এমন এক জুয়াড়ি এ প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলেন, এটি একটি খেলার মতো। এ খেলার সাথে অনেকে জড়িত। তবে এদের সঠিক কোনো সংখ্যা দেয়া সম্ভব না। আর ‘জেন্টেলম্যান’ এ্যগ্রিমেন্ট হিসেবে সম্পৃক্ত কেউ এ তথ্য দেবে না।