মেঘ জমলেই বিদ্যুত যায় : ঝড় হলেতো কথাই নেই

চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলার ১০ হাজার গ্রাহক জিম্মি!

সালাউদ্দীন কাজল: চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ থাকা সত্ত্বেও ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে জীবননগর উপজেলার উথলী সাব-স্টেশনের আওতাধীন বিদ্যুতের গ্রাহকেরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন। আকাশে মেঘের গর্জন, বৃষ্টির শব্দ আর ঝোড়ো বাতাসের আভাস পেলেই বন্ধ করে দেয়া হয় বিদ্যুত সরবরাহ। ফলে অনাকাক্ষিত দুর্ভোগ বাড়ছে গ্রাহকদের। এ অবস্থা নতুন নয়, দীর্ঘদিন ধরে চলছে। সামান্য ঝড় বৃষ্টিতেই একটানা ১৮ থেকে ২৪ ঘণ্টাও বিদ্যুত বন্ধ থাকার নজিরবিহীন এ অবস্থাটি বিরাজ করছে গত ১ বছর থেকেই। অথচ মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এ ব্যাপারে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না।

জীবননগর উপজেলার উথলী সাব-স্টেশন এলাকায় গত শুক্রবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত একটানা সাড়ে ১৫ ঘণ্টা বিদ্যুত বন্ধ থাকায় জনজীবনে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাতে হয়। শনিবার রাত ৯টার সময় সামান্য একটু বৃষ্টি হওয়ার সাথে সাথে বিদ্যুত চলে যায়। কিন্তু ১৫ মিনিট পর বৃষ্টি বন্ধ হয়ে গেলে রাত ১১টার সময় উথলী সাব-স্টেশনে বিদ্যুত দেয়া হয়। অথচ সাব-স্টেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অদক্ষতার কারণে রাত ৩টা পর্যন্ত ৫টি সঞ্চালন লাইনে বিদ্যুত বন্ধ রাখা হয়। এ সময় উথলী বিদ্যুত সরবরাহ কেন্দ্রের মোবাইলে যোগাযোগ করেও সর্বক্ষণ তা বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে কখন বিদ্যুত আসবে আর কেনই বা এই বিদ্যুত বিভ্রাট সংঘটিত হলো সে তথ্য জানার কোনো উপায় নেই। এছাড়া বিদ্যুত সরবরাহ ব্যবস্থার মেরামত বা সংস্কারের ক্ষেত্রেও বিদ্যুত বন্ধ রাখার আগে মাইকিং করে প্রচারের বিধান থাকলেও তা পালিত হচ্ছে না।

গ্রাহকদের অভিযোগে জানা যায়, মেন লাইন মেরামতের অজুহাতে মাঝে মাঝেই দিনভর বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রাখা হয়। আকাশে মেঘ জমলেই বিদ্যুত চলে যায়। আর একবার ঝড় হলে বিদ্যুতের দেখা মেলে না দুই-তিন দিনেও। এই অবস্থায় উপজেলার ১০ হাজার গ্রাহক মেহেরপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কাছে এক রকম জিম্মি হয়ে পড়েছেন। ১০-১২ জন গ্রাহক বলেন, প্রচণ্ড দাবদাহের মধ্যেও নানা অজুহাতে প্রতিদিন পাঁচ-ছয়বার বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রাখা হচ্ছে। ঘন ঘন বিদ্যুত বন্ধ থাকায় তারা গরমে অতিষ্ঠ হয়ে উঠছেন। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও ব্যাহত হচ্ছে।

উথলী গ্রামের ব্যবসায়ী ওয়ালিউল্লাহ বলেন, আকাশে মেঘের গর্জন শুনতে না-শুনতেই তাদের এলাকায় বিদ্যুত চলে যায়। কোনো পূর্বঘোষণা ছাড়াই মাঝে মধ্যে দীর্ঘ সময় বিদ্যুত বন্ধ রাখা হয়। মৃগমারী গ্রামের গৃহবধূ সুখজান বেগম বলেন, জোরে বাতাস এলে ও বৃষ্টির শব্দ পেলেই বিদ্যুত চলে যায়। সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত প্রায় দিনই বিদ্যুত বন্ধ থাকে। টানা লোডশেডিংয়ের কারণে অভিভাবকরা দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তাদের সন্তানদের লেখা-পড়া নিয়ে।

অপরদিকে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুত না থাকায় প্রত্যেক ইউনিয়নেই তথ্য সেবা কেন্দ্রের কার্যক্রমে মারাত্মক ব্যাঘাত ঘটছে বলে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন। পল্লী বিদ্যুতের বিরুদ্ধে এমনি নানা অভিযোগ করছেন এলাকাবাসী। এ জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকেও দায়ী করেছেন বিদ্যুত গ্রাহকরা। এ ব্যাপারে উথলী সাব-স্টেশনের প্রকৌশলী মো. আলতাব হোসেন কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি।