গাংনীর তেতুলবাড়িয়ায় দু পক্ষের বিরোধ তুঙ্গে : ইজারাদারকে হটিয়ে দিয়ে জোরপূর্বক খাজনা আদায়

গাংনী প্রতিনিধি: মেহেরপুর গাংনী উপজেলার তেতুলবাড়িয়া হাটের খাজনা জোরপূর্বক আদায়ের অভিযোগ উঠেছে ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় একটি পক্ষের বিরুদ্ধে। ইউনিয়ন নির্বাচনের বিরোধকে কেন্দ্র করে আধিপত্য বিস্তারের জেরে গতকাল শুক্রবার এ ঘটনা ঘটে। এনিয়ে দু পক্ষের মধ্যে বিরাজ করছে টান টান উত্তেজনা।

অভিযোগে জানা গেছে, উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় থেকে তেতুলবাড়িয়া হাট ১ বছরের জন্য ইজারা পান তেতুলবাড়িয়া গ্রামের ইউপি সদস্য আমানুল্লাহ। গত ১ বোশেখ থেকে তার লোকজন প্রতি সপ্তাহের শুক্র ও সোমবার হাটের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করে আসছেন। কিন্তু গতকাল শুক্রবার হাটের দিনে পলাশীপাড়া গ্রামের বদর উদ্দীন ও খলিলের নেতৃত্বে তার লোকজন জোরপূর্বক হাটের খাজনা আদায় করেন। ইজারাদার আমানুল্লাহর লোকজনকে ভয়ভীতি দেখিয়ে হাট থেকে বের করে দেয় তারা। এ ঘটনায় দু পক্ষের মাঝে তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। যেকোনো সময় দু পক্ষের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের আশঙ্কা করছে এলাকাবাসী।

হাট ইজারাদার আমানুল্লাহ জানান, সদ্য সমাপ্ত ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নামজুল হুদার পক্ষে কাজ করেন তিনি। এর জের ধরে আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুনের কর্মীদের রোষানলে পড়েন। নির্বাচনের পর থেকে এলাকায় আধিপত্য বিস্তার নিয়ে তারা আমানুল্লাহর পক্ষের লোকজনকে বিভিন্নভাবে হুমকি-ধামকি দিচ্ছেন। গতকাল আমানুল্লাহর লোকজন হাটের খাজনা আদায় করতে গেলে পলাশীপাড়া গ্রামের বদর উদ্দীন, ইয়ানবী, তেতুলবাড়িয়া গ্রামের খলিল ও বিপ্লব হোসেনসহ তার লোকজন খাজনা আদায় করতে বাধা দেয়। আমানুল্লাহর লোকজনকে হটিয়ে দিয়ে তারা জোরপূর্বক ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে খাজনা আদায় করেন। এ নিয়ে ফুঁসে ওঠেন ইজারাদারের লোকজন। কিন্তু বিরোধ এড়াতে তারা খাজনা আদায়ের চেষ্টা থেকে বিরত থেকে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ প্রশাসনে মৌখিক অভিযোগ করেন। প্রতি হাটে ৩ থেকে সাড়ে ৩ হাজার টাকা খাজনা আদায় হয় বলে জানান ইজারাদার।

এ বিষয়ে গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আরিফ উজ্জামান বলেন, নীতিমালা অনুযায়ী হাট ইজারা দেয়া হয়েছে। এখানে কারো জোরপূর্বক খাজনা আদায়ের সুযোগ নেই। বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত সমাধান করা হবে। তবে কেউ জোরপূর্বক খাজনা আদায়ের চেষ্টা করলে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের হুশিয়ারী করেন তিনি।

এদিকে জোরপূর্বক খাজনা আদায়ের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বদর উদ্দীন। এলাকায় শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতি ঠিক রাখতে তিনি চেষ্টা করছেন বলেও দাবি করেন। তেতুলবাড়িয়া ইউপি নির্বাচনের শুরুতেই আওয়ামী লীগ প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন ও তার কর্মীদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ জমা পড়ে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে। প্রশাসনের পক্ষ থেকে বারবার তাকে সতর্ক করা হলেও নির্বাচনের পর তা আরো বেড়েছে বলে প্রশাসনসূত্রে জানা গেছে। গোটা ইউপিজুড়ে প্রতিদিনই ঘটছে ছোটখাটো কিছু অনাকাঙ্খিত ঘটনা। বিদ্রোহী প্রার্থী নাজমুল হুদা ও আ.লীগ প্রার্থী আব্দুল্লাহ আল মামুন পক্ষের লোকজনের বিরোধ এখন তুঙ্গে। ছোটখাটো এসব বিরোধ থেকেই বড় ধরণের সংঘর্ষ শুরু হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন এলাকার অনেকেই। তাই এলাকার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্য সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

Leave a comment