স্টাফ রিপোর্টার: কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে মিছিল, সভা-সমাবেশসহ সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরাম উভয় সংগঠনের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে এ সিদ্ধান্ত নেয় কর্তৃপক্ষ।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, গত বুধবার উপাচার্য ও সহ উপাচার্য সমর্থক শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পাল্টাপাল্টি মানববন্ধনের আগে উপাচার্য সমর্থক কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর সহ উপাচার্য সমর্থক কয়েকজন কর্মকর্তা হামলা চালায় বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় পাঁচজন কর্মকর্তা আহত হন। পরে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ উপাচার্য অধ্যাপক শাহিনুর রহমানের ব্যক্তিগত সহকারী আবদুল হান্নান ও সহকারী রেজিস্ট্রার আলমগীর হোসেনকে।
এই হামলার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষক-কর্মচারীদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদ ও শাপলা ফোরামের একাংশ যারা উপাচার্যপন্থী, তারা গতকাল সকালে একটি মৌন মিছিলের ঘোষণা দেয়। আবার এই বরখাস্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সহ উপাচার্যপন্থী অপর অংশের নেতাকর্মীরাও একই সময়ে মানববন্ধন ও সমাবেশ করার ঘোষণা দেন। দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দেয়ায় বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যেও উত্তেজনা বিরাজ করছিলো। ক্যাম্পাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির আশঙ্কায় পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে সব ধরনের মিছিল, সভাসমাবেশ, মানববন্ধন, রাজনৈতিক টেন্টে অবস্থান, মোটরসাইকেল শোডাউন এবং বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে প্রশাসন। পাশাপাশি ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ ও ৱ্যাব মোতায়েন করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মাহবুবর রহমান বলেন, সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে ও বড় ধরনের সংঘাত এড়ানোর জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
এদিকে ওই দুই কর্মকর্তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহউপাচার্যপন্থী অংশের শিক্ষক ও কর্মকর্তারা ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফকে তার কার্যালয়ে প্রায় দুই ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ সময় তারা ওই দুই কর্মকর্তার বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের জন্য আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেন। এ সময়ের মধ্যে বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করা না হলে কর্মকর্তারা পরবর্তী কর্মসূচিতে যাবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
জানতে চাওয়া হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের আহ্বায়ক অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহার করার বিষয়ে রেজিস্ট্রারের সাথে আমরা কথা বলতে গিয়েছিলাম, তাকে কোনোভাবে অবরুদ্ধ করে রাখা হয়নি এবং কোনো অসৌজন্যমূলক কথাও বলা হয়নি।’ এ সময় তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সামনেই সেখানে কর্মকর্তা সমিতির নেতারা এসে বরখাস্তের বিষয়টি প্রত্যাহারের জন্য উপাচার্যকে আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেধে দেন, এ সময়ের মধ্যে তা প্রত্যাহার না হলে তারা পরবর্তী কর্মসূচিতে যাবেন বলে শুনেছি।
অবরুদ্ধের বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফ বলেন, ‘শাপলা ফোরাম ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের একাংশের শিক্ষক-কর্মকর্তারা এখানে এসে বরখাস্ত প্রত্যাহারের দাবিতে দীর্ঘ সময় কথা বলেছেন, সে সময় পেছন থেকে কেউ কেউ বরখাস্তের আদেশ তৎক্ষণাৎ প্রত্যাহার না করা হলে আমাকে কক্ষ থেকে বের হতে দেবে না বলে উচ্চ স্বরে বলতে থাকে। আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ যে নির্দেশ দেবে, আমাকে তা করতে হবে, এর বাইরে তো আমি যেতে পারি না।