এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপ

 

এইতো সেদিনও গ্রামবাংলায় ফুটবলের আয়োজন মানেই খেলার মাঠে উৎসবের আমেজ। মাঠ উপচেপড়া দর্শকের মধ্যে খেলা নিয়ে উত্তেজনার কমতি ছিলো না। সেদিনও। যেখানেই মাঠ, সেখানেই ফুটবল আর গোলপোস্ট। ১১ জন করে ২২ জনের দুটি দলের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলায় দর্শকরা মোহিত হতো। টানটান উত্তেজনার ভেতর গোলের জন্য উল্লাস বা হর্ষধ্বনি ছিলো স্বাভাবিক। উত্তেজনার আঁচেও পুড়েছে দর্শকশারিতে থাকা সমর্থকদের অনেকে। এসব যেন সেকেলে হয়ে গেছে। খেলার মাঠগুলোও দেদারছে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। যে ক’টা খেলার মাঠ রয়েছে তাও এখন ফসল ঝাড়া-ঝুড়োর খোলায় রূপান্তর হয়ে ওঠে। অথচ এই বাংলায় ২০ শতকে বাঙালি ফুটবলের জন্য অন্তঃপ্রাণ ছিলো। সেই ফুটবল আকস্মিকভাবে কোথায় যেন খাবি খেয়ে দৃশ্যের অন্তরালে ধাবিত হয়ে পড়ে। আর তার স্থানে ক্রিকেট এসে দখল করে নিয়েছে বাঙালির দিন রাত। উচ্ছ্বাস, উদ্দীপনা, আনন্দ আর বিনোদনের এমন প্রাণময় খেলায় বাঙালি আজ মাতোয়ারা শুধু নয়, বিশ্বক্রিকেট আদলে আজকে দাপুটে অবস্থানে। অথচ দীর্ঘ সময় ধরে খেলে আসা ফুটবলে বাঙালি বিশ্বসভায় ঠাঁই নিতে পারেনি। দেশীয় ক্রীড়াঙ্গনে ফুটবলও যেন হারিয়ে যাওয়া আসরে পরিণত হয়েছিলো। ফুটবলে ইউরোপ যতো এগিয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশ যেন ততো পিছিয়েছে। ফুটবলের রমরমা আসর কোথায় যেন বিলীন হয়ে গেছে। সেই ফুটবল আবার ফিরে এসেছে পায়ে। তার অবস্থান আবার ফিরে পাবার জন্য প্রাণান্তকর সে। আর শুধু ছেলেরা নয়, মেয়েরাও এগিয়ে এসেছে ফুটবল মাঠে। দেশে খেলার মাঠের সংখ্যা হ্রাস পেলেও ফুটবল খেলার চর্চা আবার প্রাণ পেয়েছে। তাই দেখা যায়, বাংলাদেশের মেয়েরা আন্তর্জাতিক আসনেও সুনামের সাথে ফুটবল খেলায় নৈপুণ্য ও পারদর্শিতা প্রদর্শন করছে। এমনকি অনূর্ধ্ব-১৪ বালিকারাও আন্তর্জাতিক খ্যাতি অর্জন করেছে। তাজিকিস্তানের দুশানবেতে অনুষ্ঠিত ‘এএফসি অনূর্ধ্ব-১৪ বালিকা আঞ্চলিক চ্যাম্পিয়নশিপের (দক্ষিণ ও মধ্যাঞ্চল) অপরাজিত শিরোপা জিতেছে। ভারতকে ৪-০ গোলে হারিয়ে টানা দ্বিতীয়বারের মতো জয়ী হয়ে শিরোপা অক্ষুণ্ণ রেখেছে। শাবাশ বাংলার বালিকারা। অভিনন্দন সব দুর্জয় খেলোয়াড়দের।